প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘শুধু জঙ্গিদের কারণেই নয়, রাজনৈতিক কারণেও মাঝে-মধ্যে দেশ অস্থিতিশীল হয়। ইতোপূর্বে নির্বাচন ঠেকানোর নামে যেভাবে মানুষকে পুড়িয়ে মারা হয়েছে; জনগণের জানমাল ধ্বংস করা হয়েছে; রাষ্ট্রীয় সম্পদ বিনষ্ট করা হয়েছে; এগুলো রাজনীতি নয়। এগুলো সন্ত্রাসী কাজ, জঙ্গিবাদী কাজ।’
বুধবার সকালে রাজধানীর কুর্মিটোলায় এলিট ফোর্স র্যা পিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যা ব) সদর দফতরে সংস্থার ১৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
র্যাবের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দেশকে স্থিতিশীল রাখতে অতীতে যেভাবে সন্ত্রাস দমন করেছেন, আগামীতেও অনুরূপভাবে কাজ করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘ইতোপূর্বে নির্বাচন ঠেকানোর নামে বিএনপি-জামায়াত মানুষের জীবন অতিষ্ঠ করে তুলেছিল। র্যাব ও গোয়েন্দা সংস্থার সহযোগিতায় এবং সাধারণ মানুষের প্রতিরোধের মুখে ষড়যন্ত্রকারীরা পিছু হটতে বাধ্য হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘মানুষকে আগুন দিয়ে, বোমা মেরে পুড়িয়ে মারা; বাস, লঞ্চ, ট্রেন ও বিদ্যুৎ কেন্দ্র আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়া; মানুষের জানমালের ক্ষতি করাটা রাজনীতি নয়।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কোস্টগার্ড থেকে শুরু করে র্যাব, পুলিশ, সেনাবাহিনী প্রতিটি প্রতিষ্ঠান এবং সংস্থার সহযোগিতায় দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। এজন্য প্রতিটি প্রতিষ্ঠান এবং সংস্থার উন্নয়নে আমরা কাজ করছি। র্যাবের বরাদ্দ আগের তুলনায় বাড়ানো হয়েছে। তাদের আধুনিক অস্ত্র সরঞ্জামাদির জন্য আলাদা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। শুধু র্যা্বই নয়, অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের সুযোগ-সুবিধাও বাড়ানো হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘সরকারি কর্মাচারি-কর্মকর্তাদের জন্য আমরা ১২৩ ভাগ বেতন বৃদ্ধি করেছি। পৃথিবীর কোনো দেশে একসঙ্গে এতো বেতন বৃদ্ধির নজির নেই। র্যাবের বাজেট আগের চেয়ে দ্বিগুণ করা হয়েছে। র্যাবকে সুযোগ-সুবিধা দেয়ার কারণে তারা সফলভাবে অভিযান পরিচালনা করতে পারছে। দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে র্যাব সফলভাবে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করে যাচ্ছে।’
জঙ্গি দমন, মানবপাচার বন্ধ, মাদক নিয়ন্ত্রণ, সুন্দরবনের জলদস্যুদের দমন এবং চরমপন্থীদের কঠোরভাবে দমনের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী র্যাবের প্রতিটি সদস্যকে আন্তরিক অভিনন্দন জানান।
তিনি বলেন, ‘জঙ্গিরা যারা স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে চায় তাদের সহযোগিতা করতে হবে। তারা ধরা দিলে বা আত্মসমর্পণ করলে তাদের স্বাভাবিক জীবনে কে কি করতে চায় সেভাবে তাদের সহযোগিতা দিয়ে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে এবং জনগণের জানমালের নিরাপত্তা বিধানে সব আইন-কানুন, রীতিনীতি মেনে কাজ করার জন্য তিনি র্যাব সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানান।
এরআগে প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠানস্থলে পৌঁছালে তাকে গার্ড অব অনার দেয়া হয়। এ সময় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল তার সঙ্গে ছিলেন।
পরে অনুষ্ঠানে র্যাবের বিভিন্ন কাজের ওপর তিনটি ভিডিওচিত্র প্রদর্শন করা হয়।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন, র্যাবের মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ ও বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন স্বরাষ্টমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল।