তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু ইন্টারনেটের অপব্যবহার রোধে ‘ইন্টারনেট ব্যবস্থাপনা জাতীয় কমিটি’ গঠনের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন।
টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনে তথ্য-প্রযুক্তির সঠিক ব্যবহারের কোন বিকল্প নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, এজন্য ইন্টানেটের সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করা এবং সাইবার নিরাপত্তা গড়ে তুলতে হবে। এ লক্ষ্য বাস্তবায়নের জন্যই তথ্য মন্ত্রণালয়, ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সমন্বয়ে ইন্টারনেট সংশ্লিষ্ট অংশীদারদের অন্তর্ভুক্ত করে ‘ইন্টারনেট ব্যবস্থাপনা জাতীয় কমিটি’ করা দরকার।
হাসানুল হক ইনু সোমবার বিকেলে রাজধানীর কাকরাইলস্থ বাংলাদেশ প্রেস ইন্সটিটিউটের (পিআইবি) সেমিনার কক্ষে বাংলাদেশ ইন্টারনেট গভর্ণেন্স ফোরাম (বিআইজিএফ) আযোজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ কথা বলেন।
আগামী জুলাই মাসে থাইল্যান্ডের ব্যাংককে ‘এশিয়া-প্যাসিফিক রিজিওনাল ইন্টারনেট গভর্ণেন্স ফোরামের (এপিআরআইজিএফ) ’ উদ্যোগে অনুষ্ঠিতব্য এক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে বাংলাদেশের অংশগ্রহণের প্রস্তুতি হিসেবে এই আলোচনা ও মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়।
‘এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলোতে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করা : ইন্টারনেট গভর্ণেন্সের আঞ্চলিক এজেন্ডা’- এ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে ব্যাংককে আগামী ২৬ থেকে ২৯ জুলাই পর্যন্ত ৪ দিনব্যাপী এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।
এ সম্মেলনে অংশগ্রহণ উপলক্ষে পিআইবিতে আয়োজিত প্রস্তুতি সভায় তথ্যমন্ত্রী ‘গণতন্ত্রকে’ মশারী ঢাকা একটি ব্যবস্থা হিসেবে অভিহিত করে বলেন, গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় সবকিছুই পরিস্কার এবং সচ্ছ।
তিনি এ অনুষ্ঠানে জাতীয় সম্প্রচার নীতিমালার কথা পুনর্ব্যক্ত করে বলেন, ‘স্বার্থ-সংশিষ্টদের সাথে আলাপ-আলোচনা এবং মতামতের ভিত্তিতে জাতীয় সম্প্রচার আইন চুড়ান্ত করা হয়েছে। আগামী ২ মাসের মধ্যে আপনারা সম্প্রচার আইন পাবেন।’
হাসানুল হক ইনু ইন্টারনেটকে নিরাপদ রাখতে সাইবার আইন, সাইবার পুলিশ ও সাইবার আইনজ্ঞ তৈরীর ব্যাপারেও জোর গুরুত্ব দেন।
ইন্টারনেটকে মৌলিক অধিকার হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার দাবি উত্থাপনকারি ও বিআইজিএফের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি হাসানুল হক ইনু বলেন, টেকসই উন্নয়নের জন্য নিরাপদ ও বিনামূল্যে ইন্টারনেট জরুরি। কারণ, এটি জনগণের সক্ষমতা বৃদ্ধিমূলক প্রযুক্তি। সবুজ, টেকসই, ডিজিটাল -এ ত্রিমাত্রিক উন্নয়নের জন্য ইন্টারনেটকে আরো জনমুখী করার বিকল্প নেই বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
বাংলাদেশ এনজিওস নেটওয়ার্ক ফর রেডিও এন্ড কমিউনিকেশনের (বিএনএনআরসি) প্রধান নির্বাহী এএইচএম বজলুর রহমানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত এ সভায় বিটিআরসি’র সহকারি পরিচালক ইশতিয়াক আরিফ, বিআইজিএফ’র সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আব্দুল হক অনু, বাংলাদেশ কম্পিউটার সোসাইটি’র সভাপতি অধ্যাপক ড. এম মাহফুজুল ইসলাম, মেট্রোনেট লিমিটেডের সৈয়দ আলমাস কবির, ইন্টারনেট সোসাইটি’র মোঃ জাহাঙ্গীর হোসেন, ই-ক্যাবের রাজীব আহমেদ, আইএসপিএবি’র এমদাদুল হক, বিআইজিএফ’র নির্বাহী সদস্য মোঃ সাজ্জাদ হোসেন, বাংলা উইকিপিডিয়ার প্রশাসক নূরুন্নবী চৌধুরী প্রমুখ বক্তৃতা করেন।
বক্তারা ইন্টারনেট পরিচালনায় দক্ষ ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলার লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষকে দিক নির্দেশনামূলক পরামর্শ দেওয়ার আহবান জানান।