রেলপথ মন্ত্রী মো. মুজিবুল হক এমপি মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তুলতে সকলকে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন।
রেলমন্ত্রী বুধবার সন্ধ্যায় রাজধানীর হোটেল ৭১-এর বলরুমে নরসিংদী জেলার বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ আহ্বান জানান। শিল্প, সাহিত্য ও সংস্কৃতি বিষয়ক ম্যাগাজিন ‘সময়ের কথা’ এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচক ছিলেন জাতীয় সংসদের সাবেক ডেপুটি স্পিকার অধ্যাপক মো: আলী আশরাফ এমপি।
বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউটের সাবেক মহাপরিচালক সাংবাদিক ড. আবদুল হাই সিদ্দিকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে ‘সময়ের কথা’র সম্পাদক সাজিদ হাসান সোহেল স্বাগত বক্তব্য রাখেন।
রেলপথ মন্ত্রী বলেন, “৩০ লাখ মানুষের জীবন ও ২ লাখ মা-বোনের সম্ভ্রমহানীর বিনিময়ে আমরা আমাদের মহান স্বাধীনতা পেয়েছি। দেশকে মুক্ত করার জন্য রণাঙ্গনে যুদ্ধ করেছেন বীর মুক্তিযোদ্ধারা। তাদের কাছে জাতি ঋণী। বীর মুক্তিযোদ্ধাদের এই সংবর্ধনা অনুষ্ঠান তাঁদেরকে অত্যন্ত সম্মানীত করবে।”
তিনি বলেন, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালী, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে। পাকিস্তান আমলে আমরা পরাধীন ছিলাম। পশ্চিম পাকিস্তানীরা আমাদের ওপর শোষণ-নির্যাতন- অত্যাচার করতো। এই অত্যাচার-নিপীড়নের প্রতিবাদে পশ্চিম পাকিস্তানী শাসক গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে বাঙালীদের পক্ষে বঙ্গবন্ধু লড়াই-সংগ্রাম করেছেন। এই সংগ্রাম করতে গিয়ে তিনি ১৩ বছর জেল খেটেছেন।
মুক্তিযুদ্ধের সময় দেশের শতকরা ৯৯ ভাগ মানুষ বঙ্গবন্ধু ও স্বাধীনতার পক্ষে ছিল উল্লেখ করে রেলপথ মন্ত্রী মুজিবুল হক আরও বলেন, গোলাম আযম, মতিউর রহমান নিজামী, আলী আহসান মুজাহিদ, সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী, দেলওয়ার হোসাইন সাঈদীসহ আলবদর, রাজাকাররা মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষে ছিল।
জাতীয় সংসদের সাবেক ডেপুটি স্পিকার অধ্যাপক মো: আলী আশরাফ বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে নির্মমভাবে হত্যা করার পর থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত দেশে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে বিসর্জন দিয়ে দেশ পরিচালনা করা হয়েছে। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা বিরোধী, রাজাকারদের গাড়িতে জাতীয় পতাকা তুলে দেয়া হয়েছে।
তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবন কর্ম তুলে ধরে বলেন, তিনি (বঙ্গবন্ধু) আজীবন দেশের শোষিত-বঞ্চিত মানুষের জন্য সংগ্রাম ও কাজ করেছেন।
অধ্যাপক মো: আলী আশরাফ মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, “দুদিন পর আমরা (মুক্তিযোদ্ধা) যারা থাকবো না, বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ ও চেতনা নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরবেন, তারা অনুপ্রাণিত হবেন।” যারা মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় এদেশের বিরোধিতা করেছে তারাই ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির জনককে নির্মমভাবে হত্যা করেছে বলে তিনি তাঁর বক্তৃতায় উল্লেখ করেন।
অনুষ্ঠানে ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার্স অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজের (এফবিসিসিআই) সাবেক সহ-সভাপতি ও বর্তমান পরিচালক মো. হেলাল উদ্দিন, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্র্তৃপক্ষের সদস্য (অর্থ) মনিরুজ্জামান, মোমেন সরকার গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মোমেন সরকার, উপস্থাপক আমিরুল ইসলাম খান টফি, মুক্তিযোদ্ধা ফরিদ উদ্দিন মোল্লা ও আমিনুল ইসলাম ভূইয়া প্রমুখ বক্তব্য দেন। অনুষ্ঠান সঞ্চলনা করেছেন ঢাকা মিডিয়া ক্লাব লিমিটেডের প্রেসিডেন্ট অভি চৌধুরী।
অনুষ্ঠানে নরসিংদী জেলার বীর মুক্তিযোদ্ধাদে সংবর্ধনা প্রদান করা হয়।