চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে সন্দেহভাজন জঙ্গি আস্তানায় অভিযানে যেসব ‘জঙ্গি’ নিহত হয়েছেন, তারা বাংলাদেশে বসবাসরত বিদেশিদের ওপর হামলার পরিকল্পনা করেছিল বলে জানিয়েছে পুলিশ। ওই আস্তানায় যারা ছিল তারা সাম্প্রতিক জঙ্গি তৎপরতায় নাম আসা সংগঠন নব্য জেএমবির সদস্য বলেও জানিয়েছে তারা।
বৃহস্পতিবার সীতাকুণ্ড অভিযান সমাপ্তি ঘোষণার পর এ কথা জানান পুলিশের চট্টগ্রাম অঞ্চলের ডিআইজি শফিকুল ইসলাম। তিনি জানান, বিদেশিরা যেন এদেশে না আসে বা এই দেশ ছেড়ে চলে যায় সে চেষ্টাই করছে তারা। তিনি বলেন, ‘উন্নয়ন থেমে যায় সে পরিকল্পনা নিয়ে জঙ্গি সংগঠন নব্য জেএমবি চট্টগ্রামের মিরসরাই ও সীতাকুণ্ডকে বেছে নিয়ে আস্তানা গেড়েছে।’
চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে হচ্ছে দেশের সবচেয়ে বড় অর্থনৈতিক জোন। এতে কাজ করতে আসছেন বিদেশিরাও। এছাড়া কর্ণফুলী নদীর তলদেশে টানেল নির্মাণসহ চট্টগ্রামের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পে কাজ করতে বিদেশিদের আনাগোনা বেড়েছে।
গত বছর জুলাইয়ে রাজধানীর গুলশানে হলি আর্টিজান বেকারিতে হামলা চালিয়ে ১৭ বিদেশিসহ ২২ জনকে হত্যার পর বিদেশিদের নিরাপত্তায় বিশেষ ব্যবস্থা নেয় সরকার। বাড়ানো হয় নজরদারি। আর সাম্প্রতিক সময়ে মিরসরাই ও সীতাকুণ্ডে তিনটি আস্তানা খুঁজে পায় পুলিশ।
ডিআইজি শফিকুল আসলাম বলেন, সীতাকু- আসার আগে এই জঙ্গিদের আস্তানা ছিল চট্টগ্রামের পটিয়ায়। কিন্তু পটিয়ার দিকে পুলিশ প্রশাসনের নজর ছিল বেশি। তাই তারা অবস্থান পাল্টায়।
সীতাকুণ্ডে গত বুধবার দুপুরে শুরু হওয়া অভিযান চলে বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায়। এই অভিযানে শুরুতে সাধন কুঠির নামে একটি ভবন থেকে ‘জঙ্গি দম্পতি’ আটক হন। পরে তাদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যে অভিযান চলে পাশের ছায়ানীড় ভবনে অভিযান শুরু হয়।
চট্টগ্রামের মিরসরাই ও সীতাকুণ্ড এলাকা অর্থনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ। ফলে জঙ্গিদের নজরে পড়েছে মিরসরাই ও সীতাকুণ্ডে।
ডিআইজি শফিকুল ইসলাম বলেন, মিরসরাই ও সীতাকুণ্ডের ওপর পুলিশেরও বিশেষ নজর রয়েছে। যেখানে জঙ্গি সেখানেই পুলিশের নজর থাকবে। এ সময় তিনি কমিল্লায় পুলিশের ওপর জঙ্গিদের বোমা হামলা এবং মিরসরাইয়ে জঙ্গি আস্তানার কথা বলেন তিনি।
চট্টগ্রামের পুলিশ সুপার নুরে আলম মিনা বলেন, ‘সম্প্রতি চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত জেলা আইন-শৃঙ্খলা কমিটির সভায় মিরসরাই ও সীতাকু-ে জঙ্গি আস্তানার বিষয়ে কথা হয়েছে। বিদেশিদের ওপর পরিকল্পনা নিয়ে জঙ্গিরা সক্রিয় থাকার খবর আমাদের কাছে রয়েছে। তাই হামলার সুযোগ খোঁজার আগেই জঙ্গিদের ধরতে পুলিশ কাজ করছে।’