পঞ্চম হয়েই বাংলাদেশের সে কি উৎসব!

পঞ্চম হয়েই বাংলাদেশের সে কি উৎসব!

ঘানাকে অনেক করে চেয়েছিল বাংলাদেশ। সেটা কোয়ার্টার ফাইনালে। সেই ঘানাকে বাংলাদেশ পেল স্থান নির্ধারণই ম্যাচে। প্রত্যাশিত জয়টা পেয়েছে ঠিকই বাংলাদেশ, তবে সহজে নয়, ঘানাকে হারাতে ঘামের শেষ বিন্দু ঝড়াতে হয়েছে স্বাগতিকদের। সেমিতে উঠতে ব্যর্থ হওয়ার পর বাংলাদেশের চোখ ছিল পাঁচে। তীব্র লড়াইয়ের পর ম্যাচ জিতে বাংলাদেশ পূরণ করেছে শেষ লক্ষ্যটা। ঘরের মাঠে অনুষ্ঠিত হকি ওয়ার্ল্ড লিগ রাউন্ড-২ পঞ্চম হয়ে শেষ করেছে জিমি-চয়নরা।

রোববার মওলানা ভাসানী স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ম্যাচটি নির্ধারিত সময়ে ৩-৩ গোলে শেষ হলে শ্যুট আউটে জিতেছে বাংলাদেশ। শ্যুটআউটে প্রথম ৫ হিটে দুই দল ৩ টি করে গোল করলে ম্যাচের ভাগ্য নির্ধারণ হয় সাডেনডেথে। ঘানার আরনেস্ট অপুকু বল বাইরে পাঠালে ম্যাচ ঝুকে পরে বাংলাদেশের দিকে। কৃষ্ণ কুমার যখন সাডেনডেথের হিট নিতে গেলেন তখন পুরো স্টেডিয়াম তাকিয়ে তার দিকে। হতাশ করেননি তিনি- বলটি ঘানার জালে পাঠিয়েই আনন্দে লাফিয়ে উঠেন। বাংলাদেশ জয় নিশ্চিত হয় ৪-৩ গলে।

বাংলাদেশ শিবিরের আনন্দ দেখলে যে কারোই মনে হতো-জিমিরা মনে হয় চ্যাম্পিয়নই হয়েছে। একজন আরেকজনকে দৌঁড়িয়ে গিয়ে জড়িয়ে ধরছেন, গ্যালারির দিকে তাকিয়ে স্টিক উচিয়ে হাসছেন। আসলে সেমিফাইনালে উঠতে না পারার পর বাংলাদেশ শেষ লক্ষ্যটা স্থির করেছিল পঞ্চমে। অনেক কষ্টেও সে লক্ষ্য পূরণের পর তাইতো এতটা উচ্ছ্বাস ছিল লাল-সবুজ শিবিরে। গত হকি ওয়ার্ল্ড লিগে বাংলাদেশ হয়েছিল ষষ্ঠ, এবার পঞ্চম। সেটাই কম কিসের!

ঘানাকে পেলে কোয়ার্টার ফাইনালের বাধাটা অনায়াসেই পার হতো বাংলাদেশ-এ ধারণা যারা করেছিলেন তাদের একটা সঙ্কেতও দিয়ে গেল আফ্রিকার দেশটি। নির্ধারিত সময়ের ম্যাচে তারা দুই দুইবার এগিয়েও গিয়েছিল। দূর্ভাগ্য তাদের শেষ মিনিটে তাদের মুখের গ্রাস কেড়ে নেন স্বাগতিক অধিনায়ক রাসেল মাহমুদ জিমি।

bangladesh

প্রথম কোয়ার্টার গোলশূন্যভাবে শেষ হওয়ার পরই বোঝা গিয়েছিল হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে পঞ্চম স্থান নির্ধারনী ম্যাচটি। হয়েছেও তাই-ম্যাচের ফল নির্ধারণের জন্য যেতে হয়েছে সর্বশেষ প্রক্রিয়া সাডেনডেথে। পেনাল্টি কর্নার থেকে ঘানার বতসিও জনি দল এবং ম্যাচের প্রথম গোল করেন ১৭ মিনিটে। পিছিয়ে পড়েই জিমি-চয়নরা আহত বাঘের মতো ঝপিয়ে পড়ে প্রতিপক্ষের উপর। মাত্র ৪ মিনিটের মধ্যে গোল শোধ করে এগিয়েও যায় স্বাগতিরা। পেনাল্টি কর্নার থেকে ১৯ ও ২১ মিনিটে গোল করে স্বাগতিক শিবিরে উচ্ছ্বাস এনে দেন মামুনুর রহমান চয়ন।

কম দেখায়নি ঘানাও। ৪৩ ও ৫৩ মিনিটে দুই গোল করে আফ্রিকার দেশটিকে আবার লিড এনে দেন আকাবা ও ম্যাথু। ম্যাচ যখন শেষ মিনিটে গড়ায় তখন হতাশায় ডুবে যায় স্বাগতিক দর্শকরা। কিন্তু শেষ মিনিটে অধিনায়ক জিমি অধিনায়কের মতোই এক গোল করে ম্যাচটাকে নিয়ে যান শুটআউটে। জিমির গোল আর ম্যাচের শেষ বাঁশিটা বাজলো প্রায় একই সময়। গোল নিয়ে কিছুটা আপত্তিও করেছিলেন ঘানার খেলোয়াড়রা।

শ্যুটআউটে দুই দলের শুরুটাই হয় গোল মিসে। প্রথম হিটে ব্যর্থ হন চয়ন। এগিয়ে যাওয়ার সুযোগটাও নষ্ট করেন ঘানার বতসিও জনি। যে কৃষ্ণ সাডেনডেথে গোল করে জিতিয়েছেন বাংলাদেশকে, সে কৃষ্ণই শ্যুটআউটে এগিয়ে দিয়েছিলেন দলকে। শ্যুটআউটে কৃষ্ণ, কৌশিক ও জিমি গোল করলেও ব্যর্থ হয়েছেন চয়ন ও রোমান সরকার।

খেলাধূলা