মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নিপীড়ন থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা অন্তত এক হাজার রোহিঙ্গা মুসলিম রাখাইনে ফিরে গেছেন। রোববার বার্তাসংস্থা এএফপি এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
রোহিঙ্গা নেতারা বলছেন, এদের অনেকেই রাখাইনে থাকা পরিবারের প্রবীণ সদস্যদের আনার জন্য গেছেন। গত অক্টোবর থেকে মিয়ানমারের পশ্চিমাঞ্চলের রাখাইনে সেনাবাহিনী ও পুলিশের রক্তাক্ত অভিযানের পর হাজার হাজার রোহিঙ্গা সীমান্ত পাড়ি দিয়েছে।
উপকূলীয় শহর টেকনাফে শরণার্থী শিবিরের রোহিঙ্গা নেতা দুদু মিয়া এএফপিকে বলেন, প্রায় এক হাজার রোহিঙ্গা, অধিকাংশই তরুণ তাদের গ্রামের বাড়িতে ফিরে গেছেন। সহিংসতার সময় ছেড়ে আসা পরিবারের প্রবীণ সদস্যদের আনার জন্য তারা গেছেন।
‘এদের অধিকাংশের প্রত্যাশা, তাদের স্বজনদের বাংলাদেশে ফিরে আনতে পারবেন। চার মাস কেটে গেছে। বাড়িতে রেখে আসা স্বজনদের সঙ্গে যোগাযোগ করদেত পারেননি তারা।’
গত সপ্তাহে মিয়ানমারের জ্যেষ্ঠ এক কর্মকর্তা জানান, রাখাইনের উত্তরাঞ্চলে সেনাবাহিনীর অভিযান স্থগিত করা হয়েছে। এর ফলে চার মাসের রক্তাক্ত অভিযানের সমাপ্তি ঘটে। জাতিসংঘ রাখাইনের সহিংসতাকে মানবতাবিরোধী অপরাধ বলে সতর্ক করে দিয়েছে। শত শত রোহিঙ্গা মুসলিমের প্রাণহানি ঘটেছে।
মিয়ানমার সীমান্ত পুলিশের চেকপোস্টে দুর্বৃত্তদের হামলার পর সেনাবাহিনী কঠোর অভিযান শুরু করে রাখাইনে। সেনা নিপীড়নের মুখে অন্তত ৭০ হাজার রোহিঙ্গা মুসলিম বাংলাদেশে পালিয়েছে। সম্প্রতি পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাসহ বাংলাদেশে বর্তমানে ৪ লাখ রোহিঙ্গা বসবাস করছে বলে কর্তৃপক্ষের এক পরিসংখ্যানে বলা হয়েছে।
মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা রাখাইনে সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে খুন, ধর্ষণ ও বাড়িঘর পুড়িয়ে দেযার অভিযোগ করছেন।
রোহিঙ্গাদের অপর এক নেতা এএফপি’কে বলেন, ‘মিয়ানমার সেনাবাহিনীর হাত থেকে ঘর-বাড়ি রক্ষা পাওয়ায় কিছু কিছু রোহিঙ্গা বাংলাদেশ থেকে স্থায়ীভাবে চলে গেছেন। আতঙ্কিত হয়ে তারা ঘর-বাড়ি ছেড়ে পালিয়েছিলেন। তারা এখানে ভিক্ষুকের মতো থাকতে চান না। তাদের বাড়িতে ফিরতে চান এবং নিজেদের জমিতে কাজ করতে চান।’
বাংলাদেশ সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিজিবি) কিছু রোহিঙ্গার মিয়ানমারে ফেরার তথ্য নিশ্চিত করেছে। বিজিবির কমান্ডার আবু জার আল-জাহিদ বলেন, গত কয়েকদিনে অনেক রোহিঙ্গা মিয়ানমারে ফিরে গেছেন।