জাতিসংঘে বাংলাদেশের সাথে নরওয়ে ও জর্ডানের সন্ত্রাসবাদ বিরোধী সভা

জাতিসংঘে বাংলাদেশের সাথে নরওয়ে ও জর্ডানের সন্ত্রাসবাদ বিরোধী সভা

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জিরো টলারেন্স নীতির অংশ হিসেবে গতকাল নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে সন্ত্রাসবাদ মোকাবেলা বিষয়ে বাংলাদেশ, নরওয়ে ও জর্ডানের যৌথ উদ্যোগে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সন্ত্রাসবাদ ও সহিংস চরমপন্থা মোকাবেলায় জাতিসংঘ কিভাবে আরো কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে এ বিষয়ে এই আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।
গুরুত্বপূর্ণ এই সাইড-ইভেন্টে জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন জঙ্গী, সন্ত্রাসবাদ এবং সহিংস চরমপন্থা মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ‘জিরো টলারেন্স’ নীতির কথা তুলে ধরে বলেন, ‘বাংলাদেশ সরকার সফলভাবে অভ্যন্তরীণ সন্ত্রাসবাদ দমন করছে। এছাড়া আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক কোন জঙ্গী ও সন্ত্রাসীগোষ্ঠী যাতে বাংলাদেশে ঘাঁটি গাড়তে না পারে তা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় সকল পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে’।
রাষ্ট্রদূত আরো বলেন, বাংলাদেশের আবহমান সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সবসময়ই সন্ত্রাস ও মৌলবাদের পরিপন্থী। দেশের আলেম-ওলামাসহ সকল স্তরের মানুষ সম্প্রতি বাংলাদেশে ঘটে যাওয়া কয়েকটি সন্ত্রাসী ঘটনার বিরুদ্ধে সম্মিলিতভাবে রুখে দাঁড়িয়েছে। মৌলবাদ ও সহিংস চরমপন্থার বিস্তার রোধে তৃণমূল পর্যায়ে নারীর ক্ষমতায়নকে সরকার আরও শক্তিশালী করেছে।
এ আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ জমিয়াতুল উলামার চেয়ারম্যান ও শোলাকিয়া ঈদগাহের ইমাম মাওলানা ফরিদউদ্দিন মাসুদ। তিনি বলেন, ‘আমি সারা জীবন ইসলামের খেদমতে নিজেকে নিবেদিত করেছি। ইসলাম শান্তি, ন্যায় ও সহনশীলতার ধর্ম। ইসলাম জঙ্গী ও সন্ত্রাসবাদকে কখনও সমর্থন করে না। আমি বেদনাহত হই যখন দেখি ইসলামের নামে সন্ত্রাসবাদ ও সহিংস চরমপন্থার মত ঘটনা ঘটছে’।
‘কোন ধর্মই সন্ত্রাসবাদ ও সহিংস চরমপন্থাকে সমর্থন করে না’- এ বিষয়টি জোরালোভাবে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তুলে ধরতে শোলাকিয়া ঈদগাহের ইমাম জাতিসংঘের প্রতি আহ্বান জানান। এ প্রসঙ্গে তিনি দৃঢ়তার সাথে বলেন, ‘সন্ত্রাসীর কোন ধর্ম বা জাতি নেই, সন্ত্রাসীর পরিচয় সে শুধুই সন্ত্রাসী’।
অনুষ্ঠান শেষে মাওলানা ফরিদউদ্দিন মাসুদ দেশের একলাখ মুফতি, উলামা ও আইম্মার দস্তখতসম্বলিত সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদবিরোধী মানবকল্যাণে শান্তির ফতোয়া নরওয়ের উপ-মন্ত্রী লায়লা বুখারীর নিকট হস্তান্তর করেন।
প্যানেল আলোচনায় অন্যান্যদের মাঝে বক্তব্য রাখেন নরওয়ের উপ-মন্ত্রী লায়লা বুখারী, জাতিসংঘে নিযুক্ত জর্ডানের স্থায়ী প্রতিনিধি সীমা সামি বাউজ, জাতিসংঘের কাউন্টার টেরোরিজম ইম্পিøমেন্টেশন টাস্ক ফোর্স (সিটিআইটিএফ) এর পরিচালক জাহাঙ্গীর খান এবং নরওয়ের খ্যাতনামা চলচ্চিত্রকার দিয়া খান।
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালে এটাই জাতিসংঘের সন্ত্রাসবাদ ও সহিংস চরমপন্থা বিরোধী প্রথম আলোচনা অনুষ্ঠান।

বাংলাদেশ