প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক হাসান আজিজুল হকের জন্মদিন আজ। ১৯৩৯ সালের এই দিনে পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমানের যবগ্রামে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। আজ তিনি পা রাখছেন ৭৮ বছরে।
জন্মের পর হাসান আজিজুল হকের ছেলেবেলা কেটেছে যবগ্রামেই। যবগ্রাম মহারাণী কাশিশ্বরী ইংরেজি বিদ্যালয় থেকে ১৯৫৪ সালে মাধ্যমিক পাস করেন। ১৯৫৬ সালে উচ্চ মাধ্যমিক শেষ করেন খুলনার দৌলতপুর ব্রজলাল কলেজ থেকে। এসময় তিনি প্রগতিশীল ছাত্র রাজনীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন।
ফলে তৎকালীন পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর রোষানলে পড়ে নির্যাতন ভোগ করতে হয়। এরপর তিনি রাজশাহী কলেজে ভর্তি হন। ঐতিহ্যবাহী এ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে দর্শনে সম্মানসহ স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯৬০ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমএ পাশ করেন।
হাসান আজিজুল হকের বাবার নাম মোহাম্মদ দোয়া বখশ ও মায়ের নাম জোহরা খাতুন। ১৯৫৮ সালে সামসুননাহারের সঙ্গে তিনি বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। তার তিন মেয়ে ও এক ছেলে।
তিনি উপন্যাস, ছোটগল্প, নাটক ছাড়াও বিভিন্ন বিষয়ে বিশ্লেষণধর্মী রচনা লিখে দেশের সাহিত্যাঙ্গণে নিজের অবস্থান মজবুত করেছেন।
হাসান আজিজুল হকের উল্লেখযোগ্য রচনাগুলোর মধ্যে রয়েছে আত্মজা ও একটি করবী গাছ, জীবন ঘষে আগুন, পাতালে হাসপাতালে, নামহীন গোত্রহীন, চালচিত্রের খুটিনাটি, মা মেয়ের সংসার, বিধবাদের কথা ও অন্যান্য গল্প, সক্রেটিস, বৃত্তায়ন, শিউলি, আগুনপাখি, ফিরে যাই ফিরে আসি, উঁকি দিয়ে দিগন্ত প্রভৃতি।
মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক বইয়ের মধ্যে রয়েছে একাত্তর, করতলে ছিন্নমাথা, লাল ঘোড়া আমি, ফুটবল থেকে সাবধান ইত্যাদি। সম্পাদিত বইয়ের মধ্যে রয়েছে গোবিন্দচন্দ্র দেব রচনাবলী, একুশে ফেব্রুয়ারি গল্প সংকলন, জন্ম যদি তব বঙ্গে ইত্যাদি।
লেখক জীবনে আদমজী সাহিত্য পুরস্কার ও বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কারসহ অজস্র পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন এই সাহিত্যিক। ১৯৯৯ সালে একুশে পদক লাভ করেন। ‘আগুনপাখি’ নামে তার একটি উপন্যাস প্রকাশিত হয় ২০০৬ সালে। উপন্যাসটি বর্ষসেরা উপন্যাসের স্বীকৃতি লাভ করে। এ উপন্যাসের জন্য তিনি ২০০৮ সালে কলকাতা থেকে ‘আনন্দ সাহিত্য পুরস্কার’ লাভ করেন।