দ্বিতীয় ইনিংসের শুরুটা ভালোই করেছিল বাংলাদেশ। কিন্তু দলীয় ৪৬ রানে সিঙ্গেল নিতে গিয়ে হঠাৎই চোট পেয়ে মাঠ ছাড়েন ওপেনার ইমরুল কায়েস। আর তাতেই উলটপালট হয়ে যায় সব। ইমরুলের ইনজুরির পর ব্যাটসম্যানরা শুরু করেন সাজঘরে আসা যাওয়া। স্কোরবোর্ডে ২০ রান যোগ করতেই ফিরে যান টপ অর্ডারের সেরা তিন ব্যাটসম্যান। ফলে ৩ উইকেটে ৬৬ রানে চতুর্থ দিন শেষ করে টাইগাররা। আর এতে নিউজিল্যান্ডের চেয়ে ১২২ রানে এগিয়ে আছে বাংলাদেশ।
প্রথম ইনিংসে ৫৬ রানের লিড নিয়ে নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করেছিল বাংলাদেশ। দুই ওপেনার তামিম ইকবাল ও ইমরুল কায়েসের দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে এগিয়ে যাচ্ছিল তারা। তবে ছন্দপতনের শুরুটা হয় ইমরুলের ইনজুরিতে। ব্যক্তিগত ২৪ রানে দ্রুত রান নিতে গিতে বাঁ পায়ের উরুতে চোট লাগে তার। মাঠে প্রাথমিক চিকিৎসায় কাজ না হলে হাসপাতালে পাঠানো হয় তাকে।
এরপর দলীয় ৫০ রানে প্রথম উইকেটের পতন হয় বাংলাদেশের। বলে লেন্থ ঠিকভাবে বুঝতে না পারায় বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফেরেন তামিম (২৫)। সান্টনারের বলে লেট কাট করতে গিয়েছিলেন তিনি। তামিমের বিদায়ের পর বেশিক্ষণ থাকতে পারেননি মাহমুদউল্লাহও (৫)। শর্ট বলে জুজু কাটাতে না পারা এ ব্যাটসম্যান আরও একবার ওয়াগনারের বলে উইকেটরক্ষক ওয়াটলিংয়ের হাতে ধরা পড়েন।
এরপর স্কোরবোর্ডে আর ৩ রান যোগ করতেই ফিরে যান টপ অর্ডারে সুযোগ পাওয়া মেহেদী হাসান মিরাজ (১)। দুই রান নিতে গিয়ে দুর্ভাগ্যজনকভাবে রানআউটে কাটা পড়লে দলের বিপদ আরও বেড়ে যায়। এরপরই দিনের খেলার ইতি টানেন আম্পায়াররা। ফলে ৩ উইকেটে ৬৬ রান নিয়ে দিন শেষ করে বাংলাদেশ। ১০ রান অপরাজিত আছেন মুমিনুল হক।
এর আগে রোববার ওয়েলিংটনের বেসিন রিসার্ভ স্টেডিয়ামে আগের দিনের ৩ উইকেটে ২৯২ রান নিয়ে ব্যাটিংয়ে নামে নিউজিল্যান্ড। দুই অপরাজিত ব্যাটসম্যান নিকোলস আর লাথাম এদিন সকালে দলের পক্ষে আরও ৫৫ রান সংগ্রহ করে বড় সংগ্রহের ইঙ্গিত দেন। তবে দলীয় ৩৪৭ রানে সাকিবের বলে ফিক করতে গিয়ে লেগ স্লিপে মিরাজের হাতে ধরা পড়েন নিকোলস। তবে আউট হওয়ার আগে দলের জন্য মূল্যবান ৫৩ রান করেছেন তিনি।
নিকোলসের বিদায়ের পর উজ্জিবিত হয়ে ওঠে বাংলাদেশ। দ্রুত আরও দু’টি উইকেট তুলে নেয় তারা। কলিন ডি গ্রান্ডহোমকে ফিরিয়ে ক্যারিয়ারের প্রথম টেস্ট উইকেট পান শুভাশিস। তবে দলীয় ৩৯৮ রানে ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠা ব্যাটসম্যান লাথাম ফেরাতে সমর্থ হয় টাইগাররা। তাকে এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলেন সাকিব। তবে আউট হওয়ার আগে দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ১৭৭ রান করেছেন তিনি। ৩২৯ বলে ১৮টি চার ও ১টি ছক্কার সাহায্যে নিজের ইনিংস সাজান এ ওপেনার।
তবে সপ্তম উইকেট জুটিতে বাংলাদেশের জন্য হুমকি হয়ে উঠছিলেন ব্র্যাডলি ওয়াটলিং ও মিচেল সান্টনার। ৭৩ রানের রানের গড়ে তোলেন এ দুই ব্যাটসম্যান। তবে বল হাতে নিয়েই এ জুটি ভাঙেন মাহমুদউল্লাহ। শুধু তাই নয় নিজের প্রথম ওভারেই জোড়া আঘাত হেনে বাংলাদেশকে দারুণভাবে খেলায় ফিরিয়ে আনেন তিনি। ওয়াটলিংকে উইকেটরক্ষক ইমরুল কায়েসের তালুবন্দি করার পর টিম সাউদিকে এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলেন তিনি। ব্যক্তিগত ৪৯ রান আউট হন ওয়াটলিং।
এরপর নবম উইকেটে নেইল ওয়াগনারকে নিয়ে ৩১ রানের জুটি গড়ে পাঁচশত রানের কোটা পার করেন সেন্টনার। দলীয় ৫০৪ রানে রাব্বির তৃতীয় শিকার হন ওয়াগনার। এরপর শেষ উইকেটে বোল্টের সঙ্গে ৩৫ রানের আরও একটি দারুণ এক জুটি গড়েন সেন্টনার। ফলে প্রথম ইনিংসে ৫৩৯ রান সংগ্রহ করে স্বাগতিক দলটি। ১০৫ বলে ৬টি চার ও ৩টি ছক্কার সাহায্যে ৭৩ রানের দারুণ এক ইনিংস খেলেন সেন্টনার।
বাংলাদেশের পক্ষে ৮৭ রান দিয়ে ৩টি উইকেট নিয়েছেন কারুল ইসলাম রাব্বি। ২টি করে উইকেট পান সাকিব, শুভাশিস ও মাহমুদউল্লাহ। এছাড়া তাসকিন পেয়েছেন ১টি উইকেট।