কৃষিজমিতে শিল্প কারখানা, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বসতি স্থাপনের ফলে সাভারে দ্রুতগতিতে কমছে কৃষিজমির পরিমাণ। ২০১১ সালে সাভার উপজেলায় কৃষিজমি ছিল ১৭ হাজার ৮২০ হেক্টর। আর ২০১৬ সালে যা দাঁড়িয়েছে ১৬ হাজার ৪৮৪ হেক্টরে। মাত্র পাঁচ বছরে এই উপজেলায় এক হাজার ৩৩৬ হেক্টর কৃষিজমি কমেছে।
পরিসংখ্যান বলছে, দেশের যে কোনো উপজেলার চেয়ে সাভারের কৃষিজমি হ্রাসের পরিমাণ সবচেয়ে বেশি।
কৃষি বিভাগের তথ্য মতে, কৃষিজমিতে শিল্প কারখানা ও বসতি স্থাপনই কৃষিজমি হ্রাসের মূল কারণ। রাজধানীর পাশ্ববর্তী এই উপজেলায় শিল্প কারখানা, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান কিংবা বসতি নির্মাণে কোনো নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা করা হচ্ছে না।
সাভার উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এম এ সালাম জাগো নিউজকে বলেন, সাভার উপজেলাটি রাজধানীর পাশ্ববর্তী হওয়ার কারণে এখানে ফসল উৎপাদন অত্যন্ত লাভজনক। এখানে সবচেয়ে বেশি লাভজনক ফসল হল সবজি উৎপাদন। মূল কথা রাজধানীর বড় বড় কাঁচা বাজারের বেশিরভাগ সবজির যোগানদাতা সাভারের কৃষি জমি।
তিনি বলেন, এ উপজেলার ১৬ হাজার ৪৮৪ হেক্টর কৃষিজমির মধ্যে বছরে এক ফসলী জমির পরিমাণ সাত হাজার ৬৬১ হেক্টর, দুই ফসলী জমির পরিমাণ তিন হাজার ৪২৫ হেক্টর, তিন ফসলী জমির পরিমাণ চার হাজার ১৫৩ হেক্টর এবং চার ফসলী জমির পরিমাণ এক হাজার ২৪৫ হেক্টর। যার বেশিরভাগেই চাষ হয় বিভিন্ন জাতের সবজি।
সরেজমিনে সাভারের বিভিন্ন ইউনিয়ন ঘুরে কৃষিজমিতে শিল্প কারখানা, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বসতি নির্মাণের চিত্র দেখা গেছে। কৃষি প্রধান এলাকা ভাকুর্তা ইউনিয়নে বর্তমানে এই প্রবণতা অনেকটাই বেশি। সাভার উপজেলা পরিষদ থেকে দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থিত এই ইউনিয়নটিতে কৃষি উৎপাদন সবচেয়ে বেশি হয়। ধামসোনা, শিমুলিয়া, বিরুলিয়া, ইয়ারপুর এবং আশুলিয়া ইউনিয়নের কিছু অংশে কৃষি উৎপাদন হয়। তবে এসব ইউনিয়নে কৃষি জমি হ্রাসের পরিমাণটাও অনেক বেশি।
এ বিষয়ে কৃষি কর্মকর্তা এম এ সালাম বলেন, ভবন নির্মাণে বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানের অনুমোদনের প্রয়োজন হয়। এ ব্যাপারে আসলে নীতিমালার দুর্বলতা রয়েছে। যেখানে ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে সেটি কৃষিজমি কিনা সে ব্যাপারে কৃষি বিভাগের কোনো অনুমোদন নেয়া হয় না। এ কারণেই মূলত কৃষিজমি হ্রাস পাচ্ছে। কৃষিজমি রক্ষায় ভবন নির্মাণের আগে কৃষি বিভাগের ছাড়পত্র নেয়ার নিয়ম চালু করা হলে হয়তো কৃষিজমি হ্রাসের পরিমাণ কমিয়ে আনা যাবে।