বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইন্সটিটিউটের বিজ্ঞানীরা দাবি করেছেন, তারা পাটের পাতা থেকে চা উদ্ভাবনে সক্ষম হয়েছেন।
বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইন্সটিটিউটের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. নাসিমুল গনি জানিয়েছেন তারা ১৯৯৩/৯৪ সালের দিকে বিষয়টি নিয়ে চিন্তা-ভাবনা শুরু করেছিলেন। এরপর দীর্ঘ দিন পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও পর্যালোচনা হয়েছে পাট পাতার গুণাগুণ এবং সেটা চা হিসেবে পান করার সময় মান যথাযথ থাকে কি-না এসব নিয়ে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহায়তায় পুরো প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করেছে পাট গবেষণা ইন্সটিটিউটের বিজ্ঞানীরা।
পুরো প্রক্রিয়ার বিবরণ দিয়ে ড. নাসিমুল বলেন, ফুল আসার আগেই পাট গাছ থেকে পাতা সংগ্রহ করতে হবে।
পরে সেই পাতা সূর্যের আলোয় শুকিয়ে সাইজ মতো গুঁড়ো করে নিতে হবে।
তিনি বলেন, এরপর মধু বা চিনি দিয়ে আসল চায়ের মতো পান করা যাবে। চাইলে যে কেউ মধু বা চিনি ছাড়াও এটি পান করতে পারবেন।
পাট পাতা থেকে তৈরি পানীয়তে পাট শাকের সব ভেষজ গুণাগুণও অক্ষুণ্ন থাকবে বলেও জানান তিনি।
ড. গনি জানান, সব পরীক্ষা-নিরীক্ষায় ইতিবাচক ফল পাওয়ার পরও তারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আরো একটি টেস্ট করে দেখছেন তৈরি করা গুঁড়ো দানায় কোনো টক্সিক উপাদান রয়েছে কি-না।
পাট গবেষণা ইন্সটিটিউটের পরিচালক মাইনুল হক জানান, তোষা পাটের পাতা থেকে তৈরি করা চা সুস্বাদু হবে, কিন্তু দুধ মিশিয়ে তা খাওয়া যাবে না।
তার মতে, এটি গ্রিন টির বিকল্প এবং গুণাগুণের কারণে দ্রুতই বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠবে বলে তারা আশা করছেন।
ওয়ার্ছি অ্যাকুয়া এগ্রো টেক নামক একটি প্রতিষ্ঠান পাটের পাতা দিয়ে তৈরি অর্গানিক চা রফতানি ও বাজারজাতকরণের উদ্যোগ নিয়েছে।
প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান এইচএম ইসমাইল খান জানান, আপাতত তারা এ চায়ের নাম দিয়েছেন মিরাকল অর্গানিক গ্রিন টি। তবে নাম চূড়ান্ত হবে শিল্প মন্ত্রণালয়ের পেটেন্টের জন্য করা আবেদন অনুমোদনের পর।
তিনি বলেন, ইতোমধ্যেই তার প্রতিষ্ঠান ১৬ কেজি ‘মিরাকল অর্গানিক গ্রিন টি’ জার্মানিতে পাঠিয়েছেন এবং শিগগিরই আরও ২০০ কেজি পাঠাবেন।
এছাড়া বাংলাদেশের বাজারে বিক্রির জন্য ১০০ ও ৫০ গ্রামের দুটি প্যাকেট করেছেন, যার মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে যথাক্রমে ১৫০ ও ৯৯ টাকা। তিনি আরো জানান, প্রতি কাপ এই চায়ের খরচ পড়বে এক টাকারও কম। সূত্র : বিবিসি