পিরোজপুরে সদর উপজেলার তেজদাসকাঠী কলেজের একাদশ শ্রেণির (বিজ্ঞান) ছাত্রী আমিনা রহমান আঁখিকে ছুরিকাঘাতে গুরুতর আহত করেছে কয়েকজন বখাটে। আঁখিকে আহত অবস্থায় পিরোজপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। রোববার বিকেলে সদর উপজেলার তেজদাসকাঠীতে এ ঘটনা ঘটে।
হাসপাতালের বেডে আহত ছাত্রী আমিনা রহমান আঁখি কান্নাজড়িত কণ্ঠে জানায়, কলেজ ছুটির পর বিকেল ৩টার দিকে বাড়ি ফেরার পথে চলিশা বাজারের কাছে তিনজন দুর্বৃত্ত মোটরসাইকেলে এসে তার পথ রোধ করে। কোনো কিছু বুঝে ওঠার আগেই হেলমেট পড়া দুই দুর্বৃত্ত তার দুই হাত ধরে পিছমোড়া করে রাখে।
তারা তাকে চড়-থাপ্পড় মারতে থাকে ও এক পর্যায়ে তারা ছুড়ি দিয়ে আঘাত করলে আঁখি হাত দিয়ে বাধা দিলে তার হাতে ছুড়ির কোপ লাগে। এসময় চিৎকার দিলে দুর্বৃত্তরা মোটরসাইকেলে পালিয়ে যায়। তবে মাথায় হেলমেট থাকার কারণে আঁখি কাউকে চিনতে পাড়েনি বলে জানায়।
কলেজছাত্রীর বাবা ভাড়া করা মোটরসাইকেল ড্রাইভার আনিসুর রহমান জানান, তেজদাসকাঠী এলাকার আ. জলিল মোল্লার ছেলে স্বজল মোল্লা অনেকদিন ধরে তার মেয়েকে উত্যক্ত করে আসছিল। স্বজলই তার লোকজন দিয়ে এ ঘটনা ঘটিয়েছে। তারা থানায় গিয়ে মামলা দিতে চাইলে পুলিশ প্রথমে মামলা নিতে অপরাগতা জানান।
রোববার রাতেই জেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা সালমা জাহান হাসপাতালে কলেজ ছাত্রী আঁখিকে দেখতে গিয়ে সাংবাদিকদের বলেন, তিনি জেলা প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে এ ব্যাপারে কঠোর পদক্ষেপ নেয়ার ব্যবস্থা করবেন।
তেজদাসকাঠী কলেজের অধ্যক্ষ মো. শহিদুল ইসলাম জানান, তিনি ঘটনা শুনে তাৎক্ষণিক আঁখিকে দেখতে হাসপাতালে যান এবং তার চিকিৎসার খোঁজ খবর নেন।
অধ্যক্ষ আরও জানান, সম্প্রতি মূলগ্রাম, তেজদাসকাঠী এলাকার বেশ কিছু বখাটে কলেজে আসা-যাওয়ার পথে ছাত্রীদের উত্যক্ত করার খবর তার কাছে আসে। তিনি অভিযোগটি লিখিত আকারে থানাসহ প্রশাসনের কাছে জানালেও উল্লেখযোগ্য কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ হয়নি। যার কারণে এ ধরনের একটি অপ্রিতিকর ঘটনা ঘটেছে।
তবে পিরোজপুর সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাসুমুর রহমান বিশ্বাস জানান, ওই রাতেই ছাত্রীর বাবা মো. আনিছুর রহমান বাদী হয়ে একজন এজাহারভুক্তসহ অজ্ঞাত আরও তিনজনকে আসামি করে শিশু ও নারী নির্যাতন এবং এ সংক্রান্ত দণ্ডবিধি আইনে মামলা করেছেন।