দুটি দৃশ্য। এক: খেলা শেষে স্পিনার খাদিজা তুল কুবরাকে সম্মিলিত ভাবে অভিনন্দন জানানো। দুই: জাতীয় দলের মাঠ প্রদক্ষিণ।
পাঁচ বারের বিশ্বকাপ খেলা আয়ারল্যান্ডের মতো প্রতিষ্ঠিত দলকে প্রথম মোকাবেলায় হারিয়ে দেওয়া চাট্টিখানি কথা নয়। জয় উদযাপনের ভাষা এরচেয়ে বেশি হলেও অবাক হওয়ার কিছু ছিলো না।
১০২টি আন্তর্জাতিক ওয়ানডে খেলা দলের বিপক্ষে বড় জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। মূলত কন্ডিশনের পুরো সুবিধা কাজে লাগিয়ে এই সাফল্য তুলে নিয়েছে। দেখার মতো ব্যাটিং-বোলিং করেছেন স্বাগতিক দলের ক্রিকেটাররা। সালমা খাতুন খেলেছেন ৭৩ রানের ইনিংস। বোলিংয়ে কুবরা ১০ ওভারে ৩২ রান দিয়ে ছয় উইকেট নিয়েছেন। ম্যাচ সেরার পুরস্কারও দেওয়া হয়েছে স্পিনার কুবরাকে। জাতীয় দলের এই নবীন বোলার সাফল্য সম্পর্কে বলছিলেন,“আমি লইন টু লাইন বল করছিলাম। আমার কোন চাপ ছিলো না। উইকেট আমি নাও পেতে পারতাম। পেয়েছি ভালো লাগছে।”
জাতীয় দলে ঢুকেই একের পর এক বাজিমাত করছেন কুবরা। ১৬ বছর বয়সী এই কিশোরী জানালেন,“আমাকে সবাই বাহবা দিয়েছে। অধিনায়কের সমর্থন আছে আমার ওপর। ইনশআল্লাহ সামনে আরো ভালো করতে চেষ্টা করবো।”
খেলার আগেও বাংলাদেশ দলের খেলোয়াড়রা জানতেন আয়ারল্যান্ডকে হারাতে পারলেই ওয়ানডে মর্যাদা পাওয়া যাবে। একবুক স্বপ্ন নিয়ে ব্যাটিংয়ে গিয়েছিলেন। ২০৯ রানের সম্মানজনক স্কোরও করে ফেলে। কিন্তু ইনিংস বিরতির সময় তাদেরকে জানানো হয় আয়ারল্যান্ডকে হারালেই ওয়ানডে মর্যাদা নিশ্চিত হবে না। খানিক্ষণ হতবাক হয়ে গিয়েছিলেন। বাকিটা সালমার মুখেই শোনাযাক,“খেলার বিরতিতে যখন জানলাম জিতলেই ওয়ানডে মর্যাদা পাচ্ছি না। তখন একটু হতাশ হয়েছিলাম। তাই বলে দমে যাইনি। বরং আরো বেশি জেদ নিয়ে খেলেছি জেতার জন্য। আমাদের টিম স্প্রিট ভালো ছিলো। আত্মবিশ্বাস ছিলো জিতবো।”
জাতীয় দলের ম্যানেজার দিপু রায় চৌধুরী সংবাদ সম্মেলনে জানালেন, কৌশলগত কারণেই খেলার আগে মেয়েদেরকে জানানো হয়নি।
অনেক সমীকরণের ওপর দাঁড়িয়ে আছে বাংলাদেশ দলের ২০১৩ সালের বিশ্বকাপে খেলা এবং ওয়ানডের মর্যাদা অর্জন। যদিও বিসিবির নারী বিভাগের চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল ফুয়াদ রেদোয়ান আশা করছেন বিশ্বকাপে খেলবে তার দল। “আমি বিশ্বাস করি শ্রীলঙ্কাকে হারাবে আমার দল এবং বিশ্বকাপে খেলার যোগ্যতা অর্জন করবে।”
বাংলাদেশ দলের গ্রুপ ম্যাচ এখনো শেষ হয়নি। রোববার মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ‘বি’ গ্রুপ থেকে শেষ ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ। আয়ারল্যান্ডকে হারানোর পর এবার ওয়েস্ট ইন্ডিজকে নিয়েও ভাবছেন ক্রিকেটাররা।
বাংলাদেশ দলের কাছে হেরে হতাশ আইরিশ ক্রিকেটাররা। দুই একজনকে কাঁদতেও দেখা গেছে। অধিনায়ক ইসাবেল জয়েস যেমন বললেন,“সত্যিই আমাদের জন্য হতাশার দিন।” আগের দিন জাপানের বিপক্ষে রেকর্ড ৩১১ রান করা দলটি ১১৪ রানে গুটিয়ে যাবে ভাবতেও পারেনি।