মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশিসহ ৫ শতাধিক অভিবাসী গ্রেফতার

মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশিসহ ৫ শতাধিক অভিবাসী গ্রেফতার

1868মালয়েশিয়ায় অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করেছে দেশটির ইমিগ্রেশন পুলিশ। গত কয়েক দিনে অভিজাত শপিংমল, লয়েট প্লাজা, টাইম স্কয়ার, মেডভেলি, কোতারায়া, আম্পাং, বাসা-বাড়িসহ বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে প্রায় ৫ শতাধিক অবৈধ অভিবাসীকে গ্রেফতার করেছে তারা।

মালয়েশিয়া সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী- বিগত ৬ পির লিগেলাইজেশনে বৈধ হতে ব্যর্থ হয়েছেন এবং সাগর পারি দিয়ে অবৈধভাবে বা ট্যুরিস্ট ভিসা নিয়ে মালয়েশিয়া আসার পর মেয়াদ পেরিয়ে গেলেও আর দেশে ফেরেননি মূলত এমন অভিবাসীদের গ্রেফতারের উদ্দেশ্যে এ অভিযান চালাচ্ছে দেশটি। তবে কতদিন এ অভিযান চলবে তা জানায়নি।

গ্রেফতার এড়িয়ে সতর্ক হয়ে চলাফেরার পরামর্শ দিয়েছে বাংলাদেশ দূতাবাস। এ দিকে অবৈধ অভিবাসনের অভিযোগে এখন পর্যন্ত মোট ২৪৪ জন বাংলাদেশিকে কারাদণ্ড দিয়েছে সে দেশের আদালত। এর মধ্যে ১৯৪ জনকে ৭ মাস এবং ৫০ জনকে ৬ মাস করে কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। চলতি মাসের ৪ জানুয়ারি বিভাগীয় আদালত মালয়েশিয়ায় এক সঙ্গে সবোর্চ্চ সংখ্যক বাংলাদেশির কারাদণ্ডের এই রায় দেয়। এছাড়াও অতিরিক্ত সময় সে দেশে অবস্থানের কারণে আরো তিন বাংলাদেশির বিচারের রায় হবে আগামী ১৮ জানুয়ারি, সোমবার।

সূত্রে আরো জানা যায়, মালয়েশিয়ায় বসবাসের বৈধ কাগজপত্র না থাকায় গত ৪ জানুয়ারি একসঙ্গে ২৪০ জন অবৈধ অভিবাসীকে আদালতে হাজির করা হয়। এছাড়াও একই দিনে পেকান নানাস ইমিগ্রেশন থেকে আরো ১১ জনকে বিশেষ বিভাগীয় আদালতে হাজির করা হয়। অতিরিক্ত সময় মালয়েশিয়ায় অবস্থানের অভিযোগে ইমিগ্রেশন অ্যাক্ট ১৯৫৯/৬৩ এর অধীনে ২৪০ জন অবৈধ অভিবাসীর স্বপক্ষের বক্তব্য শোনে বিভাগীয় আদালত সালাওয়াতি দেজামবারি আসামিদের ৭ মাস করে কারাদণ্ড দেন। কারাদণ্ড প্রাপ্ত ২৪০ জন অভিবাসীর মধ্যে ১৯৪ জনই বাংলাদেশি।

এদিকে ইন্দোনেশিয়ার সুমাত্রা দিয়ে গত এক বছরে ৫ হাজার ৭৫২ জন বাংলাদেশি অভিবাসী পাচার হয়ে মালয়েশিয়া প্রবেশ করেছে বলে জানিয়েছে মালয়েশিয়া পুলিশ। এরই মধ্যে মালয়েশিয়ায় ১ হাজার ৭৫২ জন বাংলাদেশি অভিবাসীকে অবৈধভাবে প্রবেশ করানোর অভিযোগে একটি মানব পাচারের সিন্ডিকেটকে গুড়িয়ে দেয়া হয়েছে বলে দাবি করেছেন তারা। যা গত ১৩ মাসে এই সিন্ডিকেটটি বেশ সক্রিয় ছিল। পুলিশ একই সঙ্গে ৬৪ জনকে গ্রেফতার করেছে। যার মধ্যে ৫০ জনই বাংলাদেশি।

পুলিশের ইন্সপেক্টর জেনারেল তান শ্রী খালিদ আবু বকর জানিয়েছেন, সেলাংগর এবং নেগ্রি সেমবিলানে ২ মাস অভিযান চালানো হয়। আটক হওয়া ৬৪ জনের মধ্যে ৪৬ জনই পাচার হওয়া বাংলাদেশি। বাকি ১৮ জনের মধ্যে রয়েছে দালাল, পথ প্রদর্শক, যানবাহন সরবরাহকারী, বাসায় রাখা মালিক এবং সঙ্গী।

তিনি আরো বলেন, গত বছরের শেষ দিক থেকে এই সিন্ডিকেটটি ইন্দোনেশিয়া থেকে অভিবাসীদের পাচার করে। আটকৃতদের মধ্যে দুই জন দালাল, ছয়জন সাহায্যকারী, তিনজন যানবাহন সরবরাহকারী, তিনজন বাড়ির মালিক এবং চারজন বার্তাবহনকারী। এদের মধ্যে ১৩ জন স্থানীয়, চারজন বাংলাদেশি এবং একজন ইন্দোনেশিয়ান।

গত বছরের আগস্ট থেকে এ পর্যন্ত সিন্ডিকেটটি ১ হাজার ৭৫২ জন বাংলাদেশিকে মালয়েশিয়ায় অবৈধভাবে প্রবেশ করিয়েছে। যেখানে দুই থেকে তিন কোটি রিঙ্গিতের লেনদেন হয়েছে বলেও জানান তিনি।

জেনারেল তান শ্রী খালিদ আবু বকর বলেন, তাদের সকলের অপরাধ প্রমাণিত হয়েছে এবং ৬ মাসের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। এরপর তাদের দেশে ফেরত পাঠানো হবে। এছাড়াও স্থানীয় ৬ জন এবং দুইজন বাংলাদেশিকে বিভিন্ন অপরাধের অভিযোগে এটিআইপি-এসওএম এর অধীনে বিচার করা

বাংলাদেশ শীর্ষ খবর