পাঠানকোট হামলায় জড়িত বাংলাদেশি জঙ্গিগোষ্ঠী!

পাঠানকোট হামলায় জড়িত বাংলাদেশি জঙ্গিগোষ্ঠী!

1556ভারতের পাঞ্জাব প্রদেশের পাঠানকোট বিমানঘাঁটিতে হামলার ঘটনায় বাংলাদেশি জঙ্গিরা জড়িত রয়েছে বলে তদন্ত কর্মকর্তারা দাবি করেছেন। কলকাতার প্রভাবশালী বাংলা দৈনিক আনন্দবাজার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

আনন্দবাজারের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাগুইআটি থানা পুলিশ জাল পাসপোর্ট চক্রের সাতজনকে আটক করেছে। এদের মধ্যে বাংলাদেশের চট্টগ্রামের হাফিজ নামে এক ব্যক্তি রয়েছে। বৈষ্ণবঘাটা থেকে আটক হাফিজের সঙ্গে বাংলাদেশি জঙ্গি সংগঠন জামাতুল মুজাহিদীন (হুজি) এর যোগসূত্রের প্রাথমিক প্রমাণ মিলেছে।

হাফিজের কাছ থেকে ১১টি পাসপোর্ট উদ্ধার করা হয়েছে। এসব পাসপোর্টের বেশির ভাগই উত্তর ভারতের ঠিকানার। এরমধ্যে একটি পাসপোর্টে সঞ্জীব কুমার নামে পাঞ্জাবের পাঠানকোটের এক বাসিন্দা রয়েছে। এরপরেই মূলত পাঠানকোট হামলায় সঞ্জীব ও হাফিজ জড়িত কিনা সে বিষয়ে আইন-শৃঙ্খলাবাহিনী ব্যাপক তৎপরতা শুরু করে।

তদন্তকারীদের সন্দেহ, উত্তর ভারতের কোনো বড় চক্রের সঙ্গে হাফিজের যোগাযোগ আছে। চক্রটি নকল পাসপোর্ট তৈরির জন্য আসল পাসপোর্ট পাচার করে। সেই সব আসল পাসপোর্ট কীভাবে অপরাধীদের হাতে পৌঁছায় হাফিজকে সে বিষয়ে জেরা করা হচ্ছে।

বিধাননগর পুলিশ জানিয়েছে, হাফিজ বাংলাদেশের চট্টগ্রামের বাসিন্দা। সাত বছর আগে মুর্শিদাবাদ হয়ে প্রথমে উত্তর ২৪ পরগনার গেদেতে বসবাস শুরু করে। প্রথমে মধ্যমগ্রাম এবং নেতাজিনগরের বৈষ্ণবঘাটা বাইলেনে উঠে।  তদন্তকর্মকর্তারা বলেন, হাফিজ মূলত বাংলাদেশ থেকে ভারতে আসা লোকজনকে জাল পাসপোর্ট বানিয়ে দিয়ে তাদের বিদেশযাত্রার ভিসারও ব্যবস্থা করে দিত। নিজের ভ্রমণ সংস্থার অফিসের আড়ালে চালাত এই কারবার।

এক তদন্ত কর্মকর্তা বলেন, হাফিজ বাংলাদেশিদের ভারতীয় পাসপোর্ট করে দিয়ে বিদেশে পাঠাত কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। হাফিজ ধরা পড়ার পরেও জাল পাসপোর্ট তৈরির জন্য তার ফোনে বাংলাদেশ থেকে ফোন এসেছে বলে দাবি তদন্তকারীদের।

আনন্দবাজারে বলা হয়েছে, হাফিজের ডানহাত হয়ে নকল পাসপোর্ট তৈরির কাজ করত কেষ্টপুরের আদর্শ পল্লির শিমুলতলার বাসিন্দা চিত্তরঞ্জন রানা ওরফে মামা। শিমুলতলায় যার পরিচয় জ্যোতিষী ও হস্তরেখাবিদ হিসেবে। গেরুয়া রঙের ঝাঁ-চকচকে দোতলা বাড়ির বাসিন্দা, সত্তর বছরের চিত্তরঞ্জনকে ‘মামা’ নামে অবশ্য পাড়ার লোকজন চেনেন না। চিত্তরঞ্জন নিজের চক্রের মধ্যেই ওই নামে পরিচিত বলেই জেনেছে পুলিশ। সেও বাংলাদেশি। ২০০৫ সালেও জাল পাসপোর্ট তৈরির চক্রের হোতা হিসেবে জেল খেটেছিল মামা।

আসল পাসপোর্টের যে অংশে পাসপোর্টধারীর নাম ও পরিচয় থাকে অপরাধীরা মূলত সে জায়গাটিই জাল করত বলে জানাচ্ছেন তদন্তকারীরা। মামা এ কাজে সিদ্ধহস্ত। মামার কাছ থেকে জাল পাসপোর্ট তৈরির বিদ্যা করায়ত্ত করেছিল তার শাগরেদ সুরজিৎ দত্ত ওরফে জালালুদ্দিন। সুরজিতের বাড়িতেও জাল পাসপোর্ট তৈরির সরঞ্জাম মিলেছে। কম্পিউটার থেকে অনেক বাংলাদেশির ঠিকানা, ছবিও উদ্ধার করেছে পুলিশ। ওসব ঠিকানা সত্যি না কিনা তা জানতে নম্বর ধরে ধরে ফোন করা হচ্ছে।

আন্তর্জাতিক