পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) আজ। ১৪৩৬ বছর আগে এই দিনে ১২ই রবিউল আউয়াল আরবের পবিত্র মক্কা নগরীতে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) জন্ম নেন। ৬৩ বছর পর একই দিনে তিনি ইহলোক ত্যাগ করেন। তাই মুসলিম উম্মাহর জন্য এ দিনটি যেমন আনন্দের তেমনি শোকের। পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী যথাযথ মর্যাদায় পালনের জন্য এরই মধ্যে ব্যাপক উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। ইসলামিক ফাউন্ডেশন সপ্তাহব্যাপী কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। এছাড়া, আশেকানে মাইজভাণ্ডারী এসোসিয়েশনের উদ্যোগে রাজধানীর শাহজাহানপুর রেলওয়ে ময়দানে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। দেশের বিভিন্ন মসজিদ-মাদরাসা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সামাজিক ও ধর্মীয় সংগঠন আলোচনা ও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করেছে। দিবসটি উপলক্ষে পৃথকভাবে বাণী দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট মো. আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া।
হযরত মুহাম্মদ (সা.) ইতিহাসের এক অতুলনীয় ব্যক্তিত্ব। অন্য ধর্মাবলম্বী অনেকেই তাঁকে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মানুষ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছেন। খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী বিখ্যাত পণ্ডিত মাইকেল এইচ হার্ট তার বহুল আলোচিত ‘দ্য হান্ড্রেড’ গ্রন্থে হযরত মুহাম্মদ (সা.)-কে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মানুষ হিসেবে স্থান দিয়েছেন। সাহিত্যিক জর্জ বার্নার্ড শ’ বলেছেন, এই অশান্ত পৃথিবীতে তাঁর মতো একজন মানুষের প্রয়োজন। তিনি বেঁচে থাকলে পৃথিবীজুড়ে সুখের সুবাতাস বইতো। তাঁর আগমনে যে বিপ্লবের সূচনা হয়েছিল দুনিয়াজুড়ে তা বিস্তৃত হয়েছে। মহানবী (সা.)-কে বলা হয় সাইয়্যিদুল মুরসালিন। অর্থাৎ, সব নবী ও রাসুলের নেতা। তিনি নিখিল বিশ্বের নবী। তার জন্মের সময় আরব দেশ অশিক্ষা, অজ্ঞতা, কুসংস্কার ও ঘোর তমসায় নিমজ্জিত ছিল। এ কারণে ওই সময়কে বলা হয় ‘আইয়ামে জাহেলিয়াত বা অন্ধকারের যুগ’। ওই বর্বর যুগে পৈশাচিক স্বভাবের কালিমাতে মানুষের মানবিক গুণাবলীর অপমৃত্যু ঘটেছিল। সে অবস্থা থেকে মানব জাতিকে মুক্তি দিতে মহান আল্লাহ হযরত মুহাম্মদ (সা.)-কে পৃথিবীতে পাঠান। এ বিষয়ে পবিত্র কোরানের সূরা আম্বিয়ার ১০৭ নম্বর আয়াতে আল্লাহ বলেছেন, ‘আমি আপনাকে সারা বিশ্বের জন্য রহমত হিসেবে পাঠিয়েছি।’ মহান আল্লাহ পুরো মানবজাতির জন্য সর্বাপেক্ষা কল্যাণকর, পরিপূর্ণ জীবন বিধান সংবলিত পবিত্রতম আসমানি কিতাব ‘আল কোরআন’ নাজিল করেন মহানবী (সা.)-র ওপর। প্রতি বছর ১২ই রবিউল আউয়ালকে অতীব গুরুত্বপূর্ণ দিন হিসেবে পালন করে সারা মুসলিম বিশ্ব।