গোটা রমজানজুড়ে ঈদের পর সরকারবিরোধী আন্দোলনে নামার হুংকার দিলেও এবার আন্দোলনের জন্য ঈদুল আজহাকে টার্গেট করেছে বিএনপি। দলটির নীতি নির্ধারণী ফোরামের একজন নেতা মঙ্গলবার সাংবাদিকদের এমন ইঙ্গিতই দিলেন।
৫ জানুয়ারি নির্বাচন বর্জনের পর থেকে নতুন নির্বাচনের দাবিতে সভা-সমাবেশ করেছে বিএনপি। পরবর্তী সময়ে নির্বাচনের দাবি ছাড়াও বেশ কিছু ইস্যুকে কেন্দ্র করে কর্মসূচি পালন করেছে দলটি। পাশাপাশি কঠোর আন্দোলনেরও হুঁশিয়ারি দিয়ে আসছিলেন দলটির সর্বোচ্চ মহলের নেতারা। তবে রমজানে এসে দলের চেয়াপারসন বেগম খালেদা জিয়াসহ শীর্ষ নেতাদের কণ্ঠে ঈদের পর আন্দোলনে নামার হুংকার বেড়ে গিয়েছিল কয়েকগুণ।
কিন্তু ঈদ যাওয়ার প্রায় এক মাস হতে চললেও সেভাবে এখনো কর্মসূচি দেয়নি বিএনপি। যদিও এই সময়ের মধ্যে সম্প্রচার নীতিমালা, বিচারপতিদের অভিশংসনের ক্ষমতা সংসদের হাতে নেয়া এবং গুমের প্রতিবাদে বিক্ষোভ, সমাবেশ ও মানববন্ধনের কর্মসূচির ঘোষণা দেয়া হয়েছে। এর বাইরে দলের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নতুন কমিটি দেয়ার কথা ভাবা হচ্ছে।
পাশাপাশি তৃণমূল থেকে সংগঠন গোছাতে দলের শীর্ষ নেতাদের সারাদেশে গণসংযোগের কর্মসূচিও শুরু হয়েছে।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, দল গুছিয়ে ঈদুল আজহার পরে আন্দোলনের কথা ভাবা হচ্ছে। এর আগে বিভিন্ন ইস্যুতে কর্মসূচি থাকবে। সে ক্ষেত্রে অক্টোবর বা নভেম্বরের আগে বিএনপির রাজপথে মানার সম্ভাবনা কম। আর ঈদের পর দলের স্থায়ী কমিটির ও ২০ দলের বৈঠকে আন্দোলনের বিষয় নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি বলেও জানা গেছে।
রমজানের ঈদের পর আন্দোলনে নামার ঘোষণার সময় সরকারি দলের পক্ষ থেকে প্রতিক্রিয়াও দেয়া হয়েছিল। আওয়ামী লীগের বেশ কয়েকজন শীর্ষ নেতা বিএনপিকে আন্দোলনে না গিয়ে দল গোছানোর পরামর্শ দিয়েছিলেন।পাশাপাশি তারা ব্যঙ্গ করে বলেছিলেন, “বিএনপি যে ঈদের পর আন্দোলনে নামবে সেই ঈদ আর আসবে না।”
এদিকে মঙ্গলবার দুপুরে মুক্তিযোদ্ধা দলের ২২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের কবরে শ্রদ্ধা জানান দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য লে. জে. অব. মাহবুবুর রহমান। এসময় তিনি সরকারবিরোধী আন্দোলনে ঈদের পর নতুন মাত্রা যোগ হবে জানান।
আন্দোলন প্রসঙ্গে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “ঈদুল আজহার পর বিএনপির আন্দোলনে নতুন মাত্রা যোগ হবে।”
তিনি আরো বলেন, “বিএনপি আন্দোলনের মধ্যেই আছে। বিএনপির আন্দোলন অহিংস আন্দোলন। পাশাপাশি দলকে সংগঠিত করার কাজও চলছে।”
‘বর্তমান সংসদ অকার্যকর’ এমন দাবি করে এ সংসদ ভেঙে দিয়ে আলোচনার ভিত্তিতে দ্রুত একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন দেয়ার দাবি জানান মাহবুব।
তিনি বলেন, “বর্তমান সংসদ জনগণকে প্রতিনিধিত্ব করে না। প্রহসনের নির্বাচনে ১৫৪ জন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছে। এ সংসদের যারা সদস্য তারা ‘ভুয়া’।”