নেদারল্যান্ডসের স্থায়ী সালিসি আদালতে বাংলাদেশ ও ভারতের সমুদ্রসীমা নির্ধারণের রায় ঘোষণার জন্য বুধবার দিন ধার্য থাকলেও তা হচ্ছে না। কবে হবে সেটাও এখন নির্ধারিত নয়। তবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা আশা করছেন এ মাসেই রায় হতে পারে।
আদালতের কার্যবিধি অনুযায়ী গত জুন মাসে রায় ঘোষণার কথা ছিল। সম্প্রতি বাংলাদেশ নৌবাহিনীর প্রধান ভাইস অ্যাডমিরাল এম ফরিদ হাবিব গণমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন, বুধবার এ রায় ঘোষণা করা হবে। তবে আজ রায় হচ্ছে না।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব (মেরিটাইম অ্যাফেয়ার্স ইউনিট) রিয়ার অ্যাডমিরাল (অব.) মো. খুরশেদ আলম গতকাল গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ওই আদালতের প্রক্রিয়া অনুযায়ী রায় ঘোষণার অন্তত এক সপ্তাহ আগে রায়ের তারিখ সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোকে আনুষ্ঠানিকভাবে জানানোর কথা। তবে ভারতের সঙ্গে সমুদ্রসীমা নির্ধারণের রায়ের তারিখের ব্যাপারে মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত পিসিএর পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানানো হয়নি। তবে শিগগিরই এ রায় ঘোষণা করা হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
এদিকে, বাংলাদেশ এবং ভারতের সমুদ্রসীমা নির্ধারণের ব্যাপারে আন্তর্জাতিক আদালত যে রায় দেবে বাংলাদেশ ও ভারত উভয়ে তা বাস্তববায়ন করবে বলে জানিয়েছেন ভারতের পররষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সৈয়দ আকবর উদ্দিন।
সৈয়দ আকবর উদ্দিন বলেন, ভারত এবং বাংলাদেশ দুটি বন্ধুপ্রতিম দেশ সমুদ্রসীমাসংক্রান্ত সমস্যার সমাধানের জন্যে একমত হয়ে আন্তর্জাতিক আদালতের শরণাপন্ন হয়েছে। যে রায় হোক উভয় দেশ তা বাস্তবায়ন করতে সহযোগিতা করবে।
নেদারল্যান্ডসের রাজধানী হেগে অবস্থিত স্থায়ী সালিসি আদালতে ২০১৩ সালের ৯ থেকে ১৮ ডিসেম্বর সমুদ্রসীমা নির্ধারণের পক্ষে বাংলাদেশ ও ভারত যুক্তি-তর্ক উপস্থাপন করে। শুনানি শেষে আদালতের পক্ষ থেকে বলা হয়, কার্যবিধির ১৫ ধারা অনুযায়ী, ছয় মাস পর এই দুই নিকট প্রতিবেশীর সমুদ্রসীমা নির্ধারণের রায় দেয়া হবে।
মিয়ানমার ও ভারতের সঙ্গে সমুদ্রসীমা বিরোধ আলোচনায় নিষ্পত্তি না হওয়ায় ২০০৯ সালের ৮ অক্টোবর সালিসি আদালতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ। এ প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে মিয়ানমারের সঙ্গে সমুদ্রসীমা নির্ধারণের জন্য বাংলাদেশ জার্মানির হামবুর্গভিত্তিক সমুদ্র আইনবিষয়ক আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালে (ইটলস) মামলা করে। আর ভারতের সঙ্গে সমুদ্রসীমা নির্ধারণের মামলা করে স্থায়ী সালিসি আদালতে। ২০১২ সালের ১৫ মার্চ ইটলস বাংলাদেশের পক্ষে রায় দেয়।