ব্রাজিল বিশ্বকাপের প্রথম রাউন্ড থেকেই ফেভারিটদের সমস্যায় ফেলতে দেখা যাচ্ছে নতুন দলগুলিকে৷ যার ধারা শেষ ষোলোর ম্যাচগুলিতেও অব্যাহত৷ চিলির কাছে আর একটু হলেই হেরে বিদায় নিতে হচ্ছিল ব্রাজিলকে৷
মঙ্গলবার অ্যালেজেন্দ্রো সাবেয়ার দলের খেলা দেখার পর তাদেরকেও টুর্নামেন্টের আয়োজকদের থেকে কোনো অংশে এগিয়ে রাখা সম্ভব হচ্ছে না ৷
সুইসদের দুর্ভাগ্য, যে তাদের দলে একজন মেসির মতো মহাতারকা নেই৷ নেই ডি মারিয়ার মতো ফিনিশারও৷ নাহলে এদিন হয়তো অতিরিক্ত সময়ের গোলে হেরে কাঁদতে কাঁদতে মাঠ ছাড়তে হতো না তাদের৷
সাও পাওলোতে সুইসরা ১-০ গোলে হেরে বিদায় নিলেন ঠিকই, কিন্তু আর্জেন্টিনার মতো হেভিওয়েটদের সঙ্গে ম্যাচের অতিরিক্ত সময় পর্যন্ত সমান তালে পাল্লা দিয়ে যে লড়াইটা এদিন বেহেরামিরা করলেন, তাতে গোটা বিশ্বের ফুটবলপ্রেমীদের মন জয় করতে সফল তারা৷
চলতি বিশ্বকাপে দ্বিতীয় রাউন্ড শুরু হওয়ার পর বেশ কয়েকটি ম্যাচেই খেলা অতিরিক্ত সময়, এমনকী টাইব্রেকার পর্যন্ত গড়িয়েছে৷ কিন্তু সব খেলাগুলিতে প্রথম নব্বই মিনিটে অন্তত কিছু গোল দেখতে পেয়েছেন দর্শকরা৷ এদিন ম্যাচ নির্ধারিত সময় পর্যন্ত গোলশূন্য থাকায় বেশ হতাশই হতে হয়েছে সাও পাওলো সমেত গোটা বিশ্বের আর্জেন্টিনীয় সমর্থকদের৷
দুই অর্ধেই আকাশী নীল-সাদা জার্সিরা বেশ কয়েকবার গোলের ভালো সুযোগ পেয়েও তা কাজে লাগাতে ব্যর্থ৷ এর জন্য অবশ্যই কৃতিত্ব দিতে হবে সুইজারল্যান্ডের গোলরক্ষক দিয়েগো বেন্যাগলিওকে৷ একবার তো মেসির জোরালো শট বাঁচাতে গিয়ে কাঁধে ভালোমতো চোট পেয়েও বসেন তিনি৷ চলতি টুর্নামেন্টে বেশ ভালো ফর্মেই খেলতে দেখা গিয়েছে এই সুইস গোলরক্ষককে৷ এদিন তো নিজের দু’শো শতাংশ দিলেন৷ প্রতিপক্ষ আর্জেন্টিনা বলেই হয়তো ম্যাচে এই বাড়তি উদ্দীপনা লক্ষ্য করা গিয়েছে তার৷
কিন্তু ভাগ্য সঙ্গ না দিলে সেরাটা দিয়েও যেকোনো লাভ হয় না এদিনের ম্যাচই তার প্রমাণ৷ ১১৭ মিনিট পর্যন্ত ম্যাচ গোলশূন্য থাকার পর সবাই যখন ধরেই নিয়েছে ম্যাচ টাইব্রেকারে যাচ্ছে, তখনই মেসির নিঁখুত পাস থেকে গোল করে গেলেন ডি মারিয়া৷ লিওনেল মেসিকে আটকানোর ছক কষতে গত কয়েকদিন ধরেই প্রচুর খেটেছিলেন সুইস ফুটবলাররা৷ কিন্তু তাতেও বার্সেলোনা তারকাকে আটকানোর ব্যাপারে খুব একটা আত্মবিশ্বাসী ছিলেন না তারা৷
মঙ্গলবার সাও পাওলোর এরিনা করিন্থিয়ান্সের মাঠে কিন্তু নিজেদের কাজে অনেকটাই সফল ওটমার হিজফেল্ডের দল৷ গোল খাওয়ার পরও ম্যাচের একেবারে শেষমুহূর্তে শাকিরির ক্রস থেকে জেমাইলির হেড বার পোস্টে না লাগলে এই ম্যাচের ফলাফল অন্যরকমও হতে পারত৷ আসলে ভাগ্য এদিন একেবারেই সঙ্গ দেয়নি সুইসদের৷ এবছর বিশ্বকাপে এখনও পর্যন্ত প্রতিটা ম্যাচেই গোল পেয়েছেন মেসি৷ এদিন নিজে না পারলেও মোক্ষম সময় গোল করালেন আর্জেন্টিনীয় মহাতারকা৷ সেইসঙ্গে বিশ্বকাপেও টিকে থাকল তার দেশ৷