প্রবীণ রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য প্রফেসর ড. এমাজউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, “এই সরকারের কাছে কিছু চেয়ে লাভ নেই, জোর করে আদায় করতে হবে। বিদ্যুৎ আমাদের দরকার। তাই বলে যেটা আমাদের জন্য ক্ষতি হবে তার দরকার নেই।”
শনিবার দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে সেভ দ্যা সুন্দরবন ফাউন্ডেন আয়োজিত ‘সুন্দরবন বিধ্বংসী সব সর্বনাশা কার্যক্রম বন্ধ করুন’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনায় তিনি একথা বলেন।
অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি শেখ ফরিদুল ইসলাম। তিনি অভিযোগ করে বলেন, “সরকারের মদদে অরিয়ন গ্রুপ সুন্দরবনের ভেতরে আরো একটি তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের পাঁয়তারা করছে।”
এমাজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, “সুন্দরবন রক্ষার দাবি কোনো রাজনৈতিক দলের বা গোষ্ঠীর নয়। এটা ১৬ কোটি মানুষের প্রাণের দাবি। এতে ব্যর্থ হওয়া মানেই সমগ্র জাতি ব্যর্থ হওয়া।”
তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র নিয়ে সরকারের সমালোচনা করে তিনি বলেন, “এতো আন্দোলনের পরও সরকার তাদের অবৈধ বাজেট ঘোষণায় সুন্দরবনকে ধ্বংসের জন্য বরাদ্দ দিয়েছে। এটা বন্ধ করতে হবে। প্রয়োজনে জনগণকে সঙ্গে নিয়েই নিজ দেশের অস্তিত্ব রক্ষায় আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে।”
প্রবীণ এই রাষ্ট্রবিজ্ঞানী আরো বলেন, “বাংলাদেশের ভিত্তিটাই হচ্ছে সুন্দরবন। এর জীববৈচিত্র্য অসাধারণ। এরকম পৃথিবীর আর কোথাও নেই। একে রক্ষা করতে হবে। এ জাতীয় দাবি আদায়ে সবাইকে একত্রিত হতে হবে। জনসাধারণ যখন চিৎকার করে উঠবে তখন সরকার পিছু হটতে বাধ্য হবে। এবং ১৬ কোটি মানুষের বিজয় হবে।”
বৈঠকে অন্য বক্তারা বলেন, এই কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ হলে বাংলাদেশ পরিবেশ আইন ১৯৯৫ ও সংবিধানের ১৮ (ক) অনুচ্চেদের সঙ্গে সরাসরি সাংঘর্ষিক। এছাড়াও ইউনেস্কোভিত্তিক ঘোষিত ওয়াল্ড হেরিটেজের অতি নিকটে এরূপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ রামসার কনভেনশনের সরাসরি লঙ্ঘন।
একই সঙ্গে তারা সরকারের কাছে সুন্দরবনের পাশে বিধ্বংসী এই বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন বন্ধ করার জোর দাবি জানান।
বক্তব্য দেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. আব্দুল্লাহ হারুন, লায়ন ড. শেখ ফরিদুল ইসলাম, ব্যারিস্টার শেখ মো. জাকির হোসেন, ড. মো. শাহজাহান প্রমুখ।