ঈমানবিহীন কোনো নেক আমলই আল্লাহপাকের কাছে আখেরাতে গ্রহণযোগ্য হবে না। অতএব, গরিব-দুঃখীকে সাহায্য করা এবং এতিম-মিসকিনের ভরণ-পোষণের ব্যবস্থা করা অত্যন্ত প্রয়োজনীয় কাজ, তবে তার চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলো এক আল্লাহপাকের প্রতি পরিপূর্ণ ঈমান থাকা। বর্তমান যুগে পৃথিবীর অনেক দেশে স্বেচ্ছাসেবক সংস্থাগুলো মানুষের দারিদ্র্য বিমোচনের, দুঃখী মানুষের দুঃখ নিবারণে কর্মরত রয়েছে। এখানে যা সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ তা হলো মানবতার উৎকর্ষ সাধনের এ কর্মসূচি সর্বপ্রথম পবিত্র কোরআনই দিয়েছে। আলোচ্য আয়াতে এ কথারই প্রকৃষ্ট প্রমাণ। বর্তমান যুগে যারা কোরআনুল কারিমকে বিশ্বাস করে না, তারাও এ আদর্শে উদ্বুদ্ধ হয় এবং দুঃখী মানুষের পাশে এসে দাঁড়ায়। নিঃসন্দেহে এটি পবিত্র কোরআনের সত্যতার জ্বলন্ত প্রমাণ। দ্বিতীয়ত, এ কথাও স্মরণ রাখতে হবে, শুধু নিরন্নকে খাবার দেওয়ার মাধ্যমেই আখিরাতে নাজাত পাওয়া যাবে না। এর জন্য আল্লাহপাকের প্রতি তার প্রিয় রাসূল (সা.)-এর প্রতি ঈমান আনা পূর্বশর্ত। যারা আল্লাহপাকের প্রতি ঈমান আনে এবং মানবতার কল্যাণ সাধনে আত্দনিয়োগ করে এবং দুঃখী মানুষের দুঃখ নিবারণে সচেষ্ট থাকে, তারা শুধু এতেই ক্ষান্ত হবে না। বরং অন্য মানুষকেও দান-খয়রাতে ও মানুষের প্রতি দয়ামায়ায় উদ্বুদ্ধ করে। তাদের শুভ পরিণতির ঘোষণা রয়েছে পবিত্র কোরআনুল কারিমে আল্লাহপাক বলেন, ওরাই তো পরম সৌভাগ্যবান তাদেরই দক্ষিণহস্তে দেওয়া হবে তাদের আমলনামা, কেননা তারা ঈমানের সঙ্গে সব কণ্টকাকীর্ণ গিরিপথগুলো অতিক্রম করেছে। আল্লাহপাকের প্রতি তাদের ঈমান ছিল সুদৃঢ়, ঈমানি জিন্দিগিতে তারা ছিল অটল-অবিচল। মানবতার মানোন্নয়নে তারা ছিল তৎপর, দুঃখী মানুষের দুঃখ নিবারণে তারা ছিল সর্বদা সক্রিয় এবং সত্য প্রচারেও এ পথের বিপদ-আপদে তারা ছিল ধৈর্যশীল, তাই কিয়ামতের দিন তাদের ভাগ্য হবে সুনিশ্চিত। আর যারা আমার নিদর্শনসমূহ প্রত্যাখ্যান করছে, তারাই হতভাগা। তারাই হবে অগি্নতে অবরুদ্ধ। অর্থাৎ যারা আল্লাহপাকের প্রতি ঈমান আনবে না, আল্লাহপাকের নিদর্শনসমূহকে অস্বীকার করবে, তার রাসূলের বিরোধিতা করবে, তাদের আমলনামা দেওয়া হবে বামহস্তে, নিঃসন্দেহে তারা হবে হতভাগা, দোজখের অনলকুণ্ডতেই তারা চিরদিন থাকবে। আর তা হবে তাদের সমগ্র জীবনের কৃতকর্মেরই অনিবার্য পরিণতি। এমনকি তারা যদি দুঃখী মানুষকে সাহায্যও করে তবে তা আল্লাহপাকের দরবারে গ্রহণযোগ্য হবে না। আল্লাহপাক আমাদের সবাইকে সৌভাগ্যবানদের সঙ্গী হওয়ার তৌফিক দান করুন। আমিন।