মানুষের শত্রু দুই প্রকার। দৃশ্যমান আর অদৃশ্যমান শত্রু। দৃশ্যমান শত্রুর আক্রমণ থেকে বাঁচার জন্য মানুষ আত্দরক্ষামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করে থাকে এবং সহজেই তার আক্রমণ থেকে রক্ষা পায়। ফলে দৃশ্যমান শত্রু তেমন কোনো ক্ষতি করতে পারে না। আর অদৃশ্যমান শত্রু দৃশ্যপটে না থাকায় তার কবল থেকে রক্ষা পাওয়া বড় মুশকিল হয়ে দাঁড়ায়। ইবলিশ শয়তান। সে কারও সম্পদ নষ্ট করে না, যা আবার পরিশ্রমে পাওয়া যায়। সে কারও বংশ নিমর্ূল করে না, যা পুনরায় বিস্তার করা যায়। সে কারও স্বাস্থ্য নষ্ট করে না, যা আবার সুস্থ করা সম্ভব। সে নষ্ট করে দেয় মানুষের ঈমান, যা একবার হারালে আর পাওয়া যায় না। তার খেসারত দিতে হয় সারাজীবন জাহান্নামের আগুনে জ্বলে পুড়ে। সে ঈমান বিধ্বংসী অদৃশ্য শত্রু থেকে বাঁচতে হলে ও তার মোকাবিলা করতে হলে দরকার হিম্মত। আর সে হিম্মতের জন্য দরকার সংশ্রব বা সানি্নধ্য। সে জন্য যেতে হবে অলিদের দরবারে। যে দরবারে ইশক ও মহাব্বতের বিজ্ঞাপন টানানো হয় না। ওয়ালরাইটিং আর পোস্টারিং করে ডাকা হয় না। বিজ্ঞাপন দিয়ে প্রচার করে ব্যবসায়ী আর রাজনীতিবিদরা। ইশক ও মহাব্বতের তো কোনো প্রচার হয় না। অথচ নিজেদের আশেকে রাসূল (সা.) দাবি করে বিজ্ঞাপন আর পোস্টার চোখে পড়ে আজ যেখানে সেখানে। ঢাকঢোল পিটিয়ে, বিজ্ঞাপন দিয়ে, স্লোগান করে ইশক দেখানো যায় না। ইশক মানে মহাব্বতের প্রেমালাপ, যা দুজনের মাঝে চলবে নিরিবিলি। আশপাশে কারও কোনো খবর থাকবে না। খারাপ পণ্য বাজারজাত করার জন্য আকর্ষণীয় করে বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়। ভালো পণ্যের বিজ্ঞাপন দরকার হয় না। তাই প্রকৃত দরবারের বিজ্ঞাপন দেওয়া হয় না। মানুষ তা খুঁজে নেয়। বিশ্ব আশেকে রাসূলের স্লোগান দিয়ে ইশক বা মহাব্বত বিতরণ হয় না, বরং ভণ্ডামি করা হয়। বাবার দরবারে গেলে নাকি সন্তান হয়। লোক দিয়ে মিথ্যা প্রচার করে পত্রিকায় খবর ছেপে দেয়, ফলে ধোঁকা খায় সরলমনা লোক। বিভ্রান্ত হয় ধর্মান্ধ সাধারণ মানুষ। সন্তান পাওয়ার আশায় ছুটে যায় বাবার দরবারে। আর খাজাবাবা, ভণ্ড পীরেরা প্রবৃত্তির তাড়নায় মেতে উঠে হীন ভোগে। যত সব আজগবি কারবার ঘটে তাদের দরবারে। এসব ভণ্ড বাবার দরবারে নবীর ইশক বিতরণ হয় না, বিতরণ হয় নারীর ইশক। যেসব দরবারে কোরআনের অন্যতম বিধান পর্দা রক্ষা করা হয় না, নামাজের গুরুত্ব দেওয়া হয় না, বরং গান-বাজনা আর অপসংস্কৃতির উল্লাসে মেতে উঠে, মানুষ ঠকিয়ে হারাম মালে সম্পদের পাহাড় গড়ে, তারা আবার উম্মতের আধ্যাত্দিক রাহবার পীর হয় কিভাবে? আজ নবীর সুন্নতের ওপর হামলা আসছে সবদিক থেকে। আলেমরা মাঠে ময়দানে নেমে প্রতিবাদ জানান, সুন্নত রক্ষায় আন্দোলন করেন। কিন্তু খাজাবাবারা খানকা ছেড়ে বাইরে বের হয় না। তারা নবীর ওয়ারিস দাবি করে অথচ নবীর সুন্নত রক্ষায় এগিয়ে আসে না। এরা আশেকে রাসূল হয় কিভাবে? এরা ভণ্ড, এদের থেকে সাবধান। আল্লাহপাক জাতির বোধোদয় দান করুন। আমীন।