জাতিসংঘ মিশনের প্রধান অসকার ফারনানদেজ-তারানকোর ব্যস্ততা

জাতিসংঘ মিশনের প্রধান অসকার ফারনানদেজ-তারানকোর ব্যস্ততা

পাঁচ দিনের সফরে শুক্রবার রাতে ঢাকায় এসে পৌঁছেছেন জাতিসংঘ মিশনের প্রধান অসকার ফারনানদেজ-তারানকো। এসেছেন জাতিসংঘ প্রধানের দূত হিসেবে। তিনি জাতিসংঘের রাজনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের রাজনৈতিক সম্পর্ক বিষয়ক সহকারী মহাসচিব। একই সঙ্গে তিনি জাতিসংঘের ‘ইন্টারপীস গভর্নিং কাউন্সিল’-এর সদস্য। বিশিষ্ট এ দূতের মাধ্যমে জাতিসংঘ প্রধান বান কি-মুন বার্তা পাঠিয়েছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও প্রধান বিরোধী দল বিএনপি’র কাছে। এ বার্তায় রয়েছে ‘সকলের অংশগ্রহণমূলক, অহিংস এবং বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন’ অনুষ্ঠানের জন্য উভয়ের গ্রহণযোগ্য এক আপস-ফরমুলায় পৌঁছানোর তাগিদ।
তারানকো’র নেতৃত্বে আগত পাঁচ সদস্যের জাতিসংঘ মিশনের ব্যস্ত কর্মসূচির শুরু হয় গতকাল সকালে। জার্মান রাষ্ট্রদূতের বাসায় বৃটিশ, কানাডা, চীন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের ঢাকাস্থ দূতের সঙ্গে বৈঠক হয় তার। পরে দুপুরে তার বৈঠক হয় মার্কিন রাষ্ট্রদূত ড্যান মজিনা’র সঙ্গে। এর আগে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পররাষ্ট্র সচিব মো. শহীদুল হক ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীর সঙ্গে বৈঠকে তারানকো গুরুত্ব দেন তিনটি বিষয়ে – সকল দলের অংশগ্রহণে একটি বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠান, নির্বাচনের আগে-পরে সহিংসতা এড়ানো এবং শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্তরের নিশ্চয়তা। তিনটি বিষয়কেই সময়ের সবচেয়ে বড় দাবি ও চ্যালেঞ্জ’ বলে উল্লেখ করেন তিনি। দুপুরে তারানকো ওই তিনটি বিষয়েই জোর দিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের নেতৃত্বাধীন সাত সদস্যের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠকে।
জাতিসংঘ প্রধানের ফোন ও চিঠি সেই সূত্রে তারানকোর নেতৃত্বে এবারকার এই তৃতীয় মিশন জাতিসংঘের শেষ সমঝোতা উদ্যোগ বলে মনে করছেন পর্যবেক্ষক মহল। এর আগে তিনি এসেছিলেন গত ডিসেম্বর ও মে মাসে। গতকাল বিকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে আলোচনাকালে নির্বাচন পিছানোর অনুরোধ জানিয়েছেন তারানকো। জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, এ এখতিয়ার নির্বাচন কমিশনের। এছাড়া সংবিধানের বাইরে তিনি যাবেন না বলেও তারানকোকে জানিয়েছেন তিনি। সন্ধ্যায় বিরোধী দলীয় নেতা খালেদা জিয়ার সঙ্গে আলাচনা হয় তারানকোর। এ আলোচনার বিষয়বস্তু জানা যায়নি। আরেক দফা আলোচনার পর তাদের বক্তব্য ও প্রতিক্রিয়া জানা সম্ভব হবে হয়তো।
আজ বিএনপির প্রতিনিধি দল ছাড়াও তারানকো বৈঠক করবেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলামের সঙ্গে। আন্তর্জাতিক সমপ্রদায় ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি এবং জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গেও বৈঠকের কথা রয়েছে তার। আগামীকাল দুই নেত্রী ও দুই দলের মহাসচিবের সঙ্গে পৃৃথক বৈঠক ও সাক্ষাৎ করবেন তিনি। রাজনৈতিক পর্যায়ে তার সমাপনী সাক্ষাৎ হবে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে। সন্ধ্যায় মুখোমুখি হবেন গণমাধ্যমের সঙ্গে। মঙ্গলবার সকালে ঢাকা ছাড়বেন তিনি। কিন্তু সেদিন কোন অর্জন নিয়ে ফিরে যাবেন জাতিসংঘের ওই ঝানু কূটনীতিক? সঙ্গে থাকবে ব্যর্থতার হতাশা নাকি কোন সাফল্যের ঝুড়ি? গতবারের মতো এবারও তিনি প্রেসিডেন্ট ও সেনাপ্রধানের সঙ্গে দেখা করতে চেয়ে ব্যর্থ হয়েছেন- সরকারের পক্ষ থেকে এ সাক্ষাতের অনুমতি দেয়া হয়নি। তাই বলে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা কি তারানকো নেবেন না? পর্যবেক্ষক মহলের ধারণা, জাতিসংঘ শান্তি মিশনে বাংলাদেশের শান্তিরক্ষী বাহিনীর বিষয়টি প্রাধান্য পেতে পারে এবারকার আলোচনায়। প্রশ্ন উঠতে পারে, যাদের নিজেদের দেশেই শান্তি নেই, তারা অন্য দেশের শান্তি রক্ষায় কাজ করতে পারেন কিভাবে? এক্ষেত্রে তাদের গ্রহণযোগ্যতা কতখানি কি থাকতে পারে! তবে কাল-পরশুর পরই স্পষ্ট হবে বিষয়টি- জাতিসংঘ কি চায়! তবে বাংলাদেশের মানুষের প্রশ্ন,
দেশে দেশে শান্তি রক্ষায় নিয়োজিত জাতিসংঘ কি কোন ভূমিকা রাখবে না এরই মধ্যে সংঘাত সহিংসতায় অশান্ত এ দেশটিতে?
তারানকোর ব্যস্ত দিন
‘সমঝোতার মিশন’ শুরু করেছেন জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি মুনের বিশেষ দূত অস্কার ফার্নান্দেজ তারানকো। শুক্রবার রাতে তার নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধি দল ঢাকায় পৌঁছলেও গতকাল থেকে তাদের মিশনের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। প্রাতঃরাশে জার্মান, বৃটিশ, কানাডা, চীন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের ঢাকাস্থ দূতের সঙ্গে বৈঠক করেন তারানকো। এরপর একে একে রাত অবধি প্রধানমন্ত্রী, বিরোধী দলের নেতা, পররাষ্ট্রমন্ত্রী, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের নেতৃত্বাধীন প্রতিনিধি দল, পররাষ্ট্র সচিব ও ঢাকাস্থ মার্কিন রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে প্রথম দফা বৈঠক করেন। একাধিক কূটনৈতিক সূত্র মতে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাতসহ উদ্বোধনী দিনের সব আলোচনায় জাতিসংঘ দূত ৩ ইস্যুর ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন। প্রথমত, রাজনৈতিক সঙ্কট নিরসন করে সব দলের অংশগ্রহণে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজন। দ্বিতীয়ত, ভোট গ্রহণের আগে-পরে সহিংসতা না হওয়া এবং তৃতীয়ত, শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্তর। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সকালে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীর সঙ্গে বৈঠকে তারানকো প্রথম এ বিষয়গুলো উত্থাপন করেন। সেখানে  বৈশ্বিক উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এমডিজি) হাসিলসহ বাংলাদেশের সামপ্রতিক অর্জনগুলোর প্রশংসা করে তিনি মন্ত্রীকে বলেন, চলমান রাজনৈতিক সঙ্কটের শান্তিপূর্ণ সমাধান এবং সংঘাত-সহিংসতামুক্ত পরিবেশে সবাইকে নিয়ে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজন করতে না পারলে বাংলাদেশের সব অর্জনই বিনষ্ট হয়ে যাবে। এটিকে ‘সময়ের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ’ বলেও উল্লেখ করেন জাতিসংঘ দূত। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে হোটেল সোনারগাঁওয়ে ফিরে দুপুরে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদকের নেত্বত্বাধীন ৭ সদস্যের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠকে বসেন তিনি। সেখানে দীর্ঘ দেড় ঘণ্টার বৈঠকে ঘুরে ঘুরে ওই ৩ ইস্যু আলোচনায় এসেছে বলে জানা গেছে। বৈঠক শেষে প্রতিনিধি দলের প্রধান স্থানীয় সরকারমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বলেন, জাতিসংঘ মহাসচিব নিজে উদ্যোগী হয়ে প্রতিনিধি দল পাঠিয়েছেন। তিনি চলমান রাজনৈতিক সঙ্কটের নিরসন চেয়েছেন। সৈয়দ আশরাফ বলেন, আলোচনা শুরু হয়েছে মাত্র। প্রাথমিক আলোচনায় ‘সুনির্দিষ্ট’ কোন এজেন্ডা নিয়ে কথা হয়নি। অনেক বিষয় আলোচনা হয়েছে। ২-৩-৪ দফা আলোচনা হবে। এরপর সবকিছু পরিষ্কারভাবে বলা সম্ভব হবে। নির্বাচনে সব দলের অংশগ্রহণ প্রসঙ্গে  সৈয়দ আশরাফ বলেন, এ নিয়ে আলোচনা চলছে। আশা করি সফল হবো। শীর্ষ দুই নেত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের পর তারানকো আবারও আওয়ামী লীগের সঙ্গে বসবেন জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা আশ্বস্ত হয়েছি, সঙ্কট নিরসনে মহাসচিব নিজে উদ্যোগী হয়ে মিশন পাঠিয়েছেন এ জন্য। গত নির্বাচনের আগে তিনি উদ্যোগী হয়েছিলেন বলেই নির্বাচন আয়োজন সম্ভব হয়েছিল। আশা করি তার এবারের আলোচনাও ফলপ্রসূ হবে। আলোচনা সফল করতে একটু সময় দিতে হবে জানিয়ে সৈয়দ আশরাফ বলেন, ‘আমাদের একটি স্পেস দরকার, তাদেরও (বিরোধী দলের) স্পেস দরকার। সাংবাদিকদেরও একটু ধৈর্য ধরতে হবে। কারণ আপনারাও জাতির মঙ্গল চান, দেশে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকুক-এটাও চান। আশা করি আপনারা (সাংবাদিক) সহযোগিতা করবেন, যাতে সবাইকে নিয়ে বাংলাদেশে একটি নির্বাচন আয়োজন সম্ভব হয়।’  সৈয়দ আশরাফ যখন বিদায় নেন তখন পেছন থেকে এক সিনিয়র সাংবাদিক জানতে চান- ৫ই জানুয়ারি নির্বাচন হচ্ছে কিনা? জবাবে প্রতিনিধি দলের সদস্য প্রবীণ রাজনীতিক তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘হ্যাঁ, এটা তো হবেই।’ এ সময় উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য আমির হোসেন আমু, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা গওহর রিজভী, সাবেক রাষ্ট্রদূত শাহেদ রেজা, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব-উল আলম হানিফ ও আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক ফারুক খান উপস্থিত ছিলেন। উল্লেখ্য, সাত মাস আগে জাতিসংঘ মহাসচিবের দূত হিসেবে এসে সংলাপের তাগিদ দিয়ে যান তারানকো। তবে তারপর নির্বাচনের তারিখ  ঘোষণা এবং বিরোধী দলের টানা অবরোধে দূরত্ব আর বেড়ে যাওয়ার প্রেক্ষাপটে আবারও এলেন তিনি।
নির্বাচন পেছানো যায় কিনা জানতে চেয়েছেন তারানকো: আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিন পেছানো যায় কিনা- প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে জানতে চেয়েছেন জাতিসংঘের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল অস্কার ফার্নান্দেজ-তারানকো। জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, বিষয়টি নির্বাচন কমিশনের ওপর নির্ভর করে। নির্বাচন করার দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের। সরকার এখানে কোনও হস্তক্ষেপ করছে না। তারানকোর নেতৃত্বাধীন জাতিসংঘের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর বৈঠকের পর এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা গওহর রিজভী এসব কথা বলেন। প্রায় দু’ঘণ্টার বৈঠকটি প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকের প্রথম পর্বে ৪০ মিনিট প্রতিনিধি পর্যায়ে আলোচনা হয়। দ্বিতীয় পর্বে ঘণ্টাব্যাপী একান্ত বৈঠক হয় তারানকো ও প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে। বিকাল ৪টার দিকে তারানকো গণভবনে প্রবেশ করেন। বের হন সন্ধ্যা ৬টায়।
সংবাদ ব্রিফিংয়ে গওহর রিজভী বলেন, জাতিসংঘ মহাসচিবের বিশেষ বার্তা নিয়ে এসেছেন তারানকো। তিনি জানিয়েছেন, উন্নয়ন, গণতন্ত্র ও অসামপ্রদায়িকতার উদাহরণ বাংলাদেশ। বাংলাদেশ যেন এ ধারা বজায় রাখে সে প্রত্যাশাও করেছেন তিনি। বৈঠকের একপর্যায়ে নির্বাচনের কথাও উঠে এসেছে জানিয়ে রিজভী বলেন, আগামী নির্বাচন সংবিধানের মধ্যেই হবে প্রধানমন্ত্রী এমনটি জানিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীকে উদ্ধৃত করে রিজভী বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, নির্বাচন নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব। সরকার এখানে কোন হস্তক্ষেপ করছে না। আমাদের চেষ্টা থাকবে সব দলকে নিয়ে নির্বাচনের। কিন্তু সংবিধানের বাইরে যাওয়া যাবে না। একই বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী বলেন, তারানকো বলেছেন, কোনও সহিংসতা তারা মেনে নিতে পারেন না। সবাইকে সব ধরনের সহিংসতা পরিহারের আহ্বান জানিয়ে আলোচনার মাধ্যমে উদ্যোগ গ্রহণের ব্যাপারে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।
জাতিসংঘ প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী ছাড়াও তার পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভী, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মনিসহ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও পররাষ্ট্র দপ্তরের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
খালেদা-তারানকো একান্ত বৈঠক
বিরোধীদলীয় নেতা ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে একান্ত বৈঠক করেছেন জাতিসংঘের সফররত সহকারী মহাসচিব অস্কার ফার্নান্দেজ-তারানকো। বৈঠকে দু’জন সার্বিক বিষয়ে ফের আলোচনায় বসার ব্যাপারেও একমত পোষণ করেছেন। গত রাতে বৈঠক শেষে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শমসের মোবিন চৌধুরী গণমাধ্যমকে একথা জানিয়েছেন। তিনি বলেন, বৈঠকে সব বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি-মুন যে চিঠি দিয়েছিলেন সে বিষয়েও আলোচনা হয়েছে। দুই ঘণ্টার বৈঠকে প্রায় ৩০ মিনিট একান্তে কথা বলেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও জাতিসংঘের সহকারী মহাসচিব অস্কার ফার্নান্দেজ-তারানকো। শমসের মোবিন বলেন, বৈঠকের অগ্রগতি বা অনগ্রগতি কোন কিছুই এ পর্যায়ে বলা যাবে না। কারণ দু’জন ঐকমত্যে পৌঁছেছেন যে আগামী দু’য়েকদিনের মধ্যে আবারও তারা আলোচনায় বসবেন। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তারানকোর বৈঠকের প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে শমসের মোবিন চৌধুরী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর বৈঠকের বিষয়ে আমি কোন মন্তব্য করবো না। এর আগে সন্ধ্যা ৭টায় তারানকোর নেতৃত্বে ৬ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল বিরোধীদলীয় নেতার গুলশানের বাসভবনে যান। ৭টা থেকে ৯টা পর্যন্ত দুই ঘণ্টার বৈঠকটি ছিল দুই পর্বের। প্রথম পর্বে দু’পক্ষের প্রতিনিধিদের নিয়ে বৈঠক হলেও দ্বিতীয় পর্বে আধঘণ্টা একান্তে কথা বলেছেন খালেদা জিয়া ও তারানকো। বৈঠকে বাংলাদেশে নিযুক্ত জাতিসংঘের আবাসিক প্রতিনিধি নিল ওয়াকারসহ জাতিসংঘের ৫ জন এবং খালেদা জিয়ার সঙ্গে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান, ভাইস চেয়ারম্যান শমসের মোবিন চৌধুরী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা রিয়াজ রহমান, সাবিহউদ্দিন আহমেদ অংশ নেন।
সিইসির সঙ্গে বৈঠক আজ
নির্বাচন নিয়ে চলমান রাজনৈতিক সঙ্কটের বিষয়ে কথা বলতে জাতিসংঘের সহকারী মহাসচিব অস্কার ফার্নান্দেজ তারানকো আজ প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী রকিব উদ্দীন আহমেদের সঙ্গে বৈঠক করবেন। সকাল ১১টায় সিইসির সঙ্গে এ বৈঠক হওয়ার কথা। ইসির দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা জানান, অস্কার ফার্নান্দেজ-তারানকোর সঙ্গে বৈঠকে আসন্ন নির্বাচন নিয়ে কমিশনের প্রস্তুতি, সকল দলের অংশগ্রহণ নিশ্চিতকরণ ও বিদ্যমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিসহ নির্বাচনসংশিষ্ট বিষয়ে আলোচনা হবে। নির্বাচন অনুষ্ঠানের সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা, তফসিল ঘোষণার যৌক্তিকতা, বর্তমান পরিস্থিতিতে কমিশনের করণীয় বিষয়ে জাতিসংঘের প্রতিনিধি দলকে অবহিত করবেন সিইসি। ইসির জনসংযোগ পরিচালক এস এম আসাদুজ্জামান জানান, আজ বেলা ১১টায় তিনি নির্বাচন কমিশনে আসবেন। তারানকো জাতিসংঘের পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। এর আগে গত ১২ই মে সিইসির সঙ্গে বৈঠক করেন তারানকো।

আন্তর্জাতিক বাংলাদেশ রাজনীতি শীর্ষ খবর