‘শর্ত না মানলে ইউরোপেও জিএসপি স্থগিত’

‘শর্ত না মানলে ইউরোপেও জিএসপি স্থগিত’

শ্রমিকদের ট্রেড ইউনিয়ন করার অধিকার এবং কর্মক্ষেত্রের নিরাপত্তা নিশ্চিত না করলে যুক্তরাষ্ট্রের মতো ইউরোপের বাজারেও বাংলাদেশি পণ্যে অগ্রাধিকারমূলক বাজার-সুবিধা (জিএসপি) স্থগিত হতে পারে বলে হুমকি দিয়েছেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাণিজ্য কমিশনার ক্যারেল ডি গুট।

ইন্দোনেশিয়ার বালিতে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) সম্মেলনের দ্বিতীয় দিন বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

গুট বলেন, “ইউরোপের বাজারে শুল্কমুক্ত রপ্তানি সুবিধা বহাল রাখতে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে রোডম্যাপ অনুযায়ী বাংলাদেশকে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করতে হবে। তা না হলে  যুক্তরাষ্ট্রের মতোই ইউরোপেও জিএসপি সুবিধা স্থগিত হতে পারে।”

তাজরীন ফ্যাশনসে অগ্নিকান্ড এবং রানা প্লাজা দুর্ঘটনার পর গত জুলাইয়ে আইএল্ওর মধ্যস্থতায় বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে চুক্তি করে ইউরোপীয় ইউনিয়ন।

এ চুক্তির আওতায় আগামী এক বছর ট্রেড ইউনিয়ন অধিকার, শ্রমিকের কর্মস্থলের নিরাপত্তার মতো বিষয়গুলো পর্যবেক্ষণ করে জিএসপি সুবিধার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে ইইউ।

বাণিজ্য কমিশনার বলেন, “বাংলাদেশের প্রধান রপ্তানি পণ্য তৈরি পোশাকের কারখানাগুলোর কর্মপরিবেশের উন্নয়নে সরকার এবং ইইউ একসঙ্গে কাজ করছে। ইতোমধ্যে একটি রোডম্যাপও তৈরি করা হয়েছে। সে অনুযায়ী কাজ চলছে।”

আগামীতেও ইউরোপের বাজারে জিএসপি সুবিধা পেতে হলে বাংলাদেশকে অবশ্যই ওই রোডম্যাপ অনুযায়ী উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি দেখাতে হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

গত একবছরে পোশাক কারখানাগুলোতে দুর্ঘটনায় ১২শ’র বেশি শ্রমিকের প্রাণহানির পর দেশে কর্মপরিবেশের উন্নয়নে চাপ দিতে গত ২৭ জুন বাংলাদেশি পণ্যে জিএসপি সুবিধা স্থগিত করে যুক্তরাষ্ট্র।

অবশ্য পরে কারখানার কর্ম পরিবেশের উন্নতিসহ ১৬টি শর্ত বেঁধে দিয়ে বলা হয়, এগুলো পূরণ হলে যুক্তরাষ্ট্র জিএসপি সুবিধা ফেরত দেয়ার বিষয়টি বিবেচনা করবে। চলতি মাসেই এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রে শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে।

ক্যারেল গুট বলেন, বাংলাদেশ ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাজারে অস্ত্র ছাড়া সব ধরনের পণ্যে শুল্ক ও কোটামুক্ত সুবিধা পায়, যা দেশের অর্থনীতিতে ইতিবাচক অবদান রাখছে।

“যুক্তরাষ্ট্র জিএসপি সুবিধা স্থগিত করায় বাংলাদেশের তেমন কোনো সমস্যা হচ্ছে না, কারন সেখানে বাংলাদেশের প্রধান রপ্তানি পণ্য তৈরি পোশাকসহ অনেক পণ্যই জিএসপি সুবিধা পেত না। তবে ইউরোপের বাজারে এই সুবিধা প্রত্যাহার বা স্থগিত করা হলে বাংলাদেশের অনেক ক্ষতি হবে।”

বাংলাদেশ বছরে প্রায় ২০ বিলিয়ন ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি করে, যার প্রায় ৬০ শতাংশই কেনে ইউরোপের বিভিন্ন দেশ। গত অর্থবছরে বাংলাদেশ ইউরোপের বাজারে ১ হাজার ১৩৭ কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানি করে।

গুট বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন বাংলাদেশের এই সুবিধা অব্যাহত রাখতে চায়। সেজন্য বাংলাদেশকে ‘রোডম্যাপ’ অনুযায়ী কাজ করতে হবে।

অর্থ বাণিজ্য আন্তর্জাতিক