যুদ্ধাপরাধ মামলায় কারাবন্দি বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরীর বিরুদ্ধে চট্টগ্রামের একটি আদালতে দু’টি মামলার বিচার শীঘ্রই শুরু হচ্ছে।
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সীতাকুন্ডের বাঁশবাড়িয়া এলাকায় গাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় মামলা দু’টি দায়ের হয়েছিল। এসব মামলায় হাজিরা দিতে শনিবার বিকেল সাড়ে ৩টায় সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীকে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে আনা হয়েছে।
দু’টি মামলার মধ্যে একটির ৬ ফেব্রুয়ারি এবং অপরটি ১৪ ফেব্রুয়ারি অভিযোগ গঠনের শুনানির দিন নির্ধারিত আছে। উভয় মামলাই বর্তমানে চট্টগ্রাম জেলা ও দায়রা জজ আব্দুল কুদ্দুস মিয়ার আদালতে অভিযোগ গঠনের অপেক্ষায় আছে।
চট্টগ্রাম জেলা পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) আবুল হাশেম বলেন, ‘দু’টি মামলায় আদালতের নির্ধারিত দিনে অভিযোগ গঠন হলে এ মাসের মধ্যেই সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর বিচার শুরু হবে। বিচার শুরুর বিষয়ে আমাদের প্রস্তুতি আছে।’
উল্লেখ্য, সাকা চৌধুরীকে গ্রেফতারের গুজব তুলে ২০১০ সালের ৭ নভেম্বর ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে বিএনপি নেতাকর্মীদের দেওয়া একটি বেরিকেড থেকে গণহারে গাড়ি-ভাঙচুর করা হয়। এ সময় বেশ কয়েকটি গাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনাও ঘটে।
দু’দফা সংঘটিত এ নৈরাজ্যের ঘটনায় সীতাকুন্ড থানায় সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরী ও উত্তর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আসলাম চৌধুরীসহ অজ্ঞাতনামা লোকজনকে আসামি করে দু’টি মামলা দায়ের করা হয়।
সাকা চৌধুরীর আইনজীবী অ্যাডভোকেট এনামুল হক চৌধুরী জানান, সীতাকুন্ড থানায় দায়ের হওয়া দু’টি মামলায় গত ডিসেম্বর মাসে সাকা চৌধুরীসহ আটজনকে আসামি করে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে চার্জশীট দাখিল করা হয়। এতে আসলাম চৌধুরীসহ সাত আসামীর নাম বাদ দেওয়া হয়।
মামলা দু’টি ২৩ জানুয়ারি জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের আদালত থেকে বিচারের জন্য জেলা ও দায়রা জজ আদালতে আসে। ওইদিনই জেলা ও দায়রা জজ আব্দুল কুদ্দুস মিয়া চার্জশীট দু’টি আমলে নেন এবং দু’টি মামলায় অভিযোগ গঠনের জন্য পৃথক দু’দিন সময় নির্ধারণ করেন।
এদিকে শনিবার বিকেল সাড়ে ৩টায় সাকা চৌধুরীকে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারেও আনা হয়েছে। এ সময় চট্টগ্রাম কারাগারের গেইটে সাকার অনুসারী বেশ কয়েকজন বিএনপি নেতাকর্মী জড়ো হন। খবর পেয়ে কোতোয়ালি থানা পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে জেলগেটে উপস্থিত হলে বিএনপি নেতাকর্মীরা সেখান থেকে চলে যান।
চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার মাহবুবুল আলম বলেন, ‘সোমবার সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীকে একটি মামলায় আদালতে হাজির করা হবে। রোববার ঈদে মিলাদুন্নবীর বন্ধ হওয়ায় তাকে একদিন আগেই চট্টগ্রাম কারাগারে আনা হয়েছে।’
উল্লেখ্য, ২০১০ সালের ১৬ ডিসেম্বর ঢাকার রমনা থানায় দায়ের হওয়া একটি মামলায় বিএনপির আলোচিত-সমালোচিত নেতা সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরী গ্রেফতার হন। এরপর আর্ন্তজাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে দায়ের হওয়া যুদ্ধাপরাধ মামলায়ও তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়। গ্রেফতরের পর থেকে কারাগারেই আছেন সাকা চৌধুরী।