প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকালে গণহত্যা, ধর্ষণ, অগ্নিসংযোগ ও মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ সংঘটনকারীদের বিচারে সমর্থন দেয়ার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
শুক্রবার নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৬৮তম অধিবেশনে দেয়া ভাষণে আন্তর্জাতিক সমপ্রদায়ের কাছে এই আহ্বান জানান তিনি। জাতিসংঘ সদর দফতরে স্থানীয় সময় বিকাল পৌনে ৪টায় (বাংলাদেশ সময় রাত পৌনে ২টা) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই ভাষণ দেন।
ভাষণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বিচার ব্যবস্থার সর্বোচ্চ মানদণ্ড রক্ষা করেই যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রক্রিয়া চলছে। আমি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি ন্যায়বিচার, মানবাধিকার ও আইনের শাসনের স্বার্থে এ বিচার প্রক্রিয়ায় সমর্থন দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। এ বিচার সফলভাবে সম্পন্ন হলে জাতি (বাংলাদেশ) কলঙ্কমুক্ত হবে। দেশে নিশ্চিত হবে স্থায়ী শান্তি ও সমৃদ্ধি। এই প্রথম যুদ্ধাপরাধের বিচার নিয়ে জাতিসংঘে বক্তব্য রাখলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময় স্থানীয় দোসরদের সহযোগিতায় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী আমাদের দেশে গণহত্যা, ধর্ষণ, অগি্নসংযোগ ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটন করে। স্বাধীনতা অর্জনের জন্য প্রাণ বিসর্জন দিয়েছেন ৩০ লক্ষাধিক মানুষ, আর ইজ্জত হারিয়েছিলেন প্রায় আড়াই লাখ নারী। তখন থেকে জাতির আকুল আশা-আকাঙ্ক্ষা ছিল এই অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনার। সে অনুযায়ী আমাদের সরকার তাদের বিচার করতে ১৯৭৩ সালের আইন অনুযায়ী আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের আওতায় দুটি যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠন করে।
প্রধানমন্ত্রী অভিযোগ করে বলেন, স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি বরাবরই বাংলাদেশের ধর্মনিরপেক্ষ বৈশিষ্ট্য ধ্বংস করার ষড়যন্ত্র চালিয়ে আসছে। তারা ২০০১ থেকে ২০০৬ সালের বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সরাসরি মদদ পেয়ে আসছে। তাদের আস্কারায় গড়ে উঠেছিল নানা জঙ্গি সংগঠন। বোমা ও গ্রেনেড হামলার মাধ্যমে মানুষ হত্যা, বিশেষ করে ধর্মনিরপেক্ষ নেতৃবৃন্দ ও সংসদ সদস্যদের হত্যার মাধ্যমে শুরু হয়েছিল জঙ্গিদের পথচলা। ওই চক্র তাকেও বারবার হত্যা করার চেষ্টা করেছে।