জাতীয় পার্টির একাধিক প্রেসিডিয়াম সদস্য বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তবে কেউই তাদের নাম প্রকাশ করতে চান নি।
এরকমই একজন প্রেসিডিয়াম সদস্য জানান, বিএনপির দেওয়া এই প্রস্তাব পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের কাছে উপস্থাপন করা হয়েছে।
এরশাদের জন্য রাষ্ট্রপতি পদ ছাড়াও জাপাকে ৭০টি আসন ও সরকার গঠন করতে পারলে জাতীয় পার্টির ১০ জনকে মন্ত্রিসভায় স্থান দিতে চায় বিএনপি। এ ছাড়া অন্যান্য প্রশাসনিক পদেও আনুপাতিকহারে স্থান দেওয়ার বিষয়ে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
মন্ত্রিসভা গঠনের ক্ষেত্রে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ যাদের নাম সুপারিশ করবেন তারাই মন্ত্রিসভায় ঠাঁই পাবেন বলেও আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।
বিএনপির সর্বোচ্চ হাই কমান্ডের সম্মতিক্রমে এই প্রস্তাব দেওয়া হচ্ছে বলেও নিশ্চিত করা হয় হুসেইন মুহম্মদ এরশাদকে।
বিএনপির এই প্রস্তাব সম্পর্কে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ কোনো তাৎক্ষণিক মন্তব্য করেন নি। তবে তিনি অন্য সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে কথা বলেছেন। তারা বিষয়টি ভেবে দেখার জন্য বলেছেন। তারা এরশাদকে পরামর্শ দিয়েছেন, হুট করে কোনো সিদ্ধান্ত নিয়ে দলকে ঝুঁকিতে না ফেলতে।
রাজনীতিতে শেষ কথা নেই। তবুও মহাজোটের অন্যতম শরিক এই দলটি আর মহাজোটে থাকবে না বলেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়ে রেখেছে। আর মহাজোটে থাকতেও অনেক জটিলতা রয়েছে দলটির জন্য। কারণ তৃণমূল পর্যায়ে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে জাপার নেতাকর্মীদের সাপে-নেউলে সম্পর্ক বিরাজ করছে। এ অবস্থায় মহাজোটে থাকলেও ভালো ফল হবে বলে মনে করছেন না সিনিয়র নেতারা।
জাতীয় পার্টির মহাসচিবসহ বেশ কয়েকজন এমপি লাঞ্ছিত হয়েছেন আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের হাতে। সে কারণে তৃণমূলের নেতাকর্মীরাই বেশি ক্ষুব্ধ। আর তৃণমূলের ক্ষোভ বুঝতে পেরেই মহাজোটে না থাকার পক্ষে বেশিরভাগ সিনিয়র নেতা।
মহাজোট বিরোধীদের মতামতকে শক্ত ভিত্তি দিয়েছে গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন। হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের সমর্থন দিলেও দলের একটি বিশাল অংশ পার্টির চেয়ারম্যানের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে বিএনপির প্রার্থীর পক্ষে কাজ করেন। এ কারণে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদও নাকি আতঙ্কিত মহাজোটের বিষয় নিয়ে।
তবে আগেভাগেই মহাজোট ছেড়ে বিপদে পড়তে চান না সাবেক এই রাষ্ট্রপতি। তিনি মহাজোটে থেকেই দরকষাকষিটা করতে চান বলে জানা গেছে। আর তার পক্ষে দূতিয়ালি করছেন কাজী জাফর আহমদ।
সর্বশেষ জাতীয় পার্টির ইফতার অনুষ্ঠানে খালেদা জিয়াকে দাওয়াত দেওয়া হয়। আর এরশাদের অনুমতিক্রমেই সেই দাওয়াত দিতে গিয়েছিলেন কাজী জাফর আহমদ। সে সময়ে মিডিয়াকে বিষয়টি কাজী জাফর নিশ্চিত করেছিলেন।
এ বিষয়ে কাজী জাফর আহমদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, রাজনীতিতে অনেক কিছুই ঘটতে যাচ্ছে। বিএনপির সঙ্গে দূতিয়ালী ও বিএনপির প্রস্তাব বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, এ মুহূর্তে এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে চাই না।
জাতীয় পার্টির মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার জানান, পার্টির চেয়ারম্যান বিভিন্ন বিষয়ে বিভিন্ন জনকে দায়িত্ব দিয়ে থাকেন। কাউকে এমন দায়িত্ব দিয়েছেন কি না আমার জানা নেই।
বিএনপির প্রস্তাবের বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হন নি জাপা মহাসচিব।