জিলহজ মাসের চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ১৪ অক্টোবর পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হতে পারে। ৭ সেপ্টেম্বরে শুরু হবে হজ ফ্লাইট। এবার যাঁরা হজে যাচ্ছেন, তাঁদের প্রস্তুতি নিতে হবে এখনই।
ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ও পরিচালক (হজ) বজলুল হক বিশ্বাস জানালেন, এবার যাঁরা হজে যাচ্ছেন তাঁদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা, টিকা দেওয়া, স্বাস্থ্যসনদ সংগ্রহ, হজের জন্য প্রয়োজনীয় মালপত্র সংগ্রহ করা দরকার। হজের প্রশিক্ষণও নিতে হবে। হজ প্রশিক্ষণসহ অন্যান্য তথ্য ঢাকার আশকোনা হজ কার্যালয় থেকে জানা যাবে। এ ছাড়া প্রয়োজনীয় বইপুস্তক বা পরিচিতদের কাছ থেকেও হজবিষয়ক তথ্য জানতে পারেন। আর হজের প্রয়োজনীয় তথ্য www.hajj.gov.bd ঠিকানায় পাওয়া যাবে।
হজে যাচ্ছেন, আল্লাহ তাআলার কাছে প্রার্থনা করুন—‘হে আল্লাহ! আমার হজকে সহজ করো, কবুল করো’—দেখবেন, আপনার সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। হজের দীর্ঘ সফরে ধৈর্য হারাবেন না। সব ধরনের পরিস্থিতি মোকাবিলা করার মানসিকতা রাখবেন, তাহলে অল্পতেই বিচলিত হবেন না।
হজে যাওয়ার আগে
পাসপোর্ট, বিমানের টিকিট সংগ্রহ ও তারিখ নিশ্চিত করুন। প্রয়োজনীয় বৈদেশিক মুদ্রা সংগ্রহ করতে ভুলবেন না। নিয়ম মেনে ম্যানিনজাইটিস টিকা বা অন্যান্য ভ্যাকসিন দিয়ে নিন (অনেকে টিকা না দিয়ে সনদ সংগ্রহ করেন, এটা করবেন না)। হজের নিয়ম জানার জন্য একাধিক বই পড়তে পারেন। অথবা যাঁরা পড়তে পারেন না, তাঁরা অন্য হাজিদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করতে পারেন। হজের কোনো বিষয়ে বিভিন্নতা দেখলে ঝগড়া করবেন না। আপনি যে আলেমের ইলম ও তাকওয়ার ওপর আস্থা রাখেন, তার সমাধান অনুযায়ী আমল করবেন, তবে সে মতে আমল করার জন্য অন্য কাউকে বাধ্য করবেন না। পরিচিত অথবা এলাকার দলনেতার (গ্রুপ লিডার) সঙ্গে আলাপ করতে পারেন।
মানসিক প্রস্তুতি জরুরি
হজ করতে যাচ্ছেন—যাত্রার শুরুতে নিজেকে এমনভাবে তৈরি করে নিন, যেন দেহ-মনে কোনো কষ্ট না থাকে। ইসলামের পঞ্চস্তম্ভের মধ্যে হজ হলো দৈহিক ও আর্থিক ইবাদত এবং শ্রমসাধ্য ব্যাপার।
আপনার মালপত্র হালকা রাখুন, কারণ আপনার মাল আপনাকেই বহন করতে হবে। আপনার সঙ্গীদের সম্মান করুন, তাঁদের ইচ্ছা-অনিচ্ছাকৃত ভুল ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। আপনার দলে (গ্রুপে) দুর্বল বয়স্কদের প্রতি খেয়াল রাখবেন। সৌদি আরবে গিয়ে বিভিন্ন ওয়াক্তের নামাজ কাবা শরিফে জামাতে আদায় করার চেষ্টা করবেন (অনেকে বাসায় অথবা মহল্লার মসজিদে নামাজ আদায় করেন)। যাত্রার শুরুতে ভালো সফরসঙ্গী খুঁজে নেবেন, যাতে নামাজ পড়তে ও বাসায় চলাফেরায় একে অন্যের সাহায্য নিতে পারেন।
আপনি হজের উদ্দেশ্যে সৌদি আরবে যাচ্ছেন; সেখানকার মানুষ আরবি ভাষায় কথা বলে, রাস্তাঘাট আপনার অচেনা। এতে চিন্তিত হওয়ার কিছু নেই। হজযাত্রীদের সেবা করার জন্য সৌদি আরব ও বাংলাদেশ সরকার নানা রকম ব্যবস্থা নিয়ে থাকে।
প্রয়োজনীয় মালপত্র
হজের জন্য প্রয়োজনীয় মালপত্র সংগ্রহ করা দরকার। যেমন: ১. পাসপোর্ট, টিকিট, ডলার কেনা, ২. পাসপোর্ট, ভিসা, টাকা রাখার জন্য গলায় ঝোলানো ছোট ব্যাগ ৩. ইহরামের কাপড় কমপক্ষে দুই সেট (প্রতি সেটে শরীরের নিচের অংশে পরার জন্য আড়াই হাত বহরের আড়াই গজ এক টুকরা কাপড় আর গায়ের চাদরের জন্য একই বহরের তিন গজ কাপড়। ইহরামের কাপড় হবে সাদা। সুতি হলে ভালো হয়) ৪. নরম ফিতাওয়ালা স্পঞ্জের স্যান্ডেল ৫. ইহরাম পরার কাজে ব্যবহারের জন্য প্রয়োজন হলে কটিবন্ধনী (বেল্ট) ৬. গামছা, তোয়ালে ৭. আপনার জন্য আরামদায়ক পোশাক যেমন: লুঙ্গি, গেঞ্জি, পায়জামা, পাঞ্জাবি সঙ্গে নিতে পারেন ৮. সাবান, টুথপেস্ট, ব্রাশ, মিসওয়াক ৯. নখ কাটার যন্ত্র, সুই-সুতা ১০. থালা, বাটি, গ্লাস ১১. হজের বই, কোরআন শরিফ, ধর্মীয় পুস্তক ১২. কাগজ-কলম, ১৩. শীতের কাপড় (মদিনায় ঠান্ডা পড়ে বেশি) ১৪. প্রয়োজনীয় ওষুধপত্র, চশমা ব্যবহার করলে অতিরিক্ত একটি চশমা (ভিড় বা অন্য কোনো কারণে ভেঙে গেলে ব্যবহারের জন্য) ১৫. বাংলাদেশি টাকা (দেশে ফেরার পর বিমানবন্দর থেকে বাড়ি ফেরার জন্য) ১৬. নারীদের জন্য বোরকা ১৭. মালপত্র নেওয়ার জন্য ব্যাগ অথবা সুটকেস (তালা-চাবিসহ); ব্যাগের ওপর ইংরেজিতে নিজের নাম-ঠিকানা, ফোন নম্বর লিখতে হবে। এর বাইরে আরও কিছু প্রয়োজনীয় মনে হলে তা নিয়ম মেনে সঙ্গে নিন।
ঢাকার আশকোনায় অবস্থিত হাজি ক্যাম্পে টিকা দেওয়া, হজের প্রশিক্ষণ, বৈদেশিক মুদ্রা কেনাসহ প্রয়োজনীয় অন্যান্য জিনিস পাওয়া যায়।
ঢাকার হাজি ক্যাম্প
বিমানে যাত্রার আগে হাজি ক্যাম্পে যত দিন অবস্থান করবেন, আপনার মালপত্র খেয়াল রাখবেন। একদল সুযোগসন্ধানী লোক মালপত্র চুরি করে।
কোনো টিকা বা ভ্যাকসিন নেওয়া বাকি থাকলে অবশ্যই তা নিয়ে নিন। প্রয়োজনীয় বৈদেশিক মুদ্রা সংগ্রহ করে নিন।
ব্যাগেজ নিয়মকানুন
বিমানে উড্ডয়নকালে হাত ব্যাগে ছুরি, কাঁচি, দড়ি নেওয়া যাবে না। হজযাত্রীর লাগেজে নিজের নাম, পাসপোর্ট নম্বর, হজ এজেন্সির নাম এবং সৌদি আরবে সংশ্লিষ্ট হজ এজেন্সির প্রতিনিধির মোবাইল নম্বরসহ ঠিকানা ইংরেজিতে লেখা বাধ্যতামূলক। বিমান কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থা অনুযায়ী বিমানে কোনো হজযাত্রী সর্বোচ্চ ৩০ কেজির বেশি মালামাল বহন করতে পারবেন না। নিবন্ধিত চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র ব্যতীত কোনো ওষুধ নিতে পারবেন না। চাল, ডাল, শুঁটকি, গুড় ইত্যাদিসহ পচনশীল খাদ্যদ্রব্য যেমন: রান্না করা খাবার, তরিতরকারি, ফলমূল, পান, সুপারি ইত্যাদি সৌদি আরবে নিয়ে যাওয়া যাবে না ।
জরুরি কাগজপত্র
১০ কপি পাসপোর্ট আকারের ছবি, স্ট্যাম্প আকারের ৬ কপি ছবি, পাসপোর্টের ১-৫ পাতার সত্যায়িত ফটোকপি, স্বাস্থ্য পরীক্ষার সনদ, টিকা কার্ড। নারী হজযাত্রীর ক্ষেত্রে শরিয়তসম্মত মাহরামের সঙ্গে সম্পর্কের সনদ, ব্যাংকে টাকা জমা দেওয়ার রসিদ। প্রত্যেক হজযাত্রীর ৭ সংখ্যার একটি পরিচিতি নম্বর থাকে। এর প্রথম ৪ সংখ্যা এজেন্সির নম্বর আর শেষ ৩ সংখ্যা হজযাত্রীর পরিচিতি নম্বর। এই নম্বরটি জানা থাকলে হজযাত্রী ও তাঁর আত্মীয়স্বজন ওয়েবসাইটে ওই হাজির তথ্য পেতে পারেন সহজে। বাড়তি সতর্কতার জন্য নিজের নাম, পাসপোর্ট নম্বর, হজ এজেন্সির নাম এবং সৌদি আরবে সংশ্লিষ্ট হজ এজেন্সির প্রতিনিধির মোবাইল নম্বরসহ ঠিকানা ইংরেজিতে লিখে রাখুন। সৌদি আরবে অবস্থানকালে বাসস্থানের বাইরে গেলে হজযাত্রীকে পরিচয়পত্র, মোয়াল্লেম কার্ড ও হোটেলের কার্ড অবশ্যই সঙ্গে রাখতে হবে এবং নারী হজযাত্রীদের স্কার্ফের মাঝে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার ছাপ অবশ্যই থাকতে হবে।
ইহরাম
আপনার গন্তব্য ঢাকা থেকে মক্কায়, নাকি মদিনায় তা জেনে নিন। যদি মদিনায় হয়, তাহলে এখন ইহরাম বাঁধা নয়; যখন মদিনা থেকে মক্কায় যাবেন, তখন ইহরাম বাঁধতে হবে। বেশির ভাগ হজযাত্রী আগে মক্কায় যান। যদি মক্কা যেতে হয়, তাহলে ঢাকা থেকে বিমানে ওঠার আগে ইহরাম বাঁধা ভালো। কারণ, জেদ্দা পৌঁছানোর আগেই ইয়ালামলাম ‘মিকাত’ বা ইহরাম বাঁধার নির্দিষ্ট স্থান। বিমানে যদিও ইহরাম বাঁধার কথা বলা হয়, কিন্তু ওই সময় অনেকে ঘুমিয়ে থাকেন; আর বিমানে পোশাক পরিবর্তন করাটাও দৃষ্টিকটু। বিনা ইহরামে মিকাত পার হলে এ জন্য দম বা কাফফারা দিতে হবে। তদুপরি গুনাহ হবে।
বিমানবন্দর
উড্ডয়নের সময় অনুযায়ী বিমানবন্দরে পৌঁছান। আপনার নাম-ঠিকানা লেখা ব্যাগ বা সুটকেসে কোনো পচনশীল খাবার রাখবেন না। বিমানবন্দরে লাগেজে যে মাল দেবেন, তা ঠিকমতো বাঁধা হয়েছে কি না, দেখে নেবেন। বিমানের কাউন্টারে মাল রেখে এর টোকেন দিলে তা যত্ন করে রাখবেন। কারণ, জেদ্দা বিমানবন্দরে ওই টোকেন দেখালে সেই ব্যাগ আপনাকে ফেরত দেবে। ইমিগ্রেশন, চেকিংয়ের পর নিজ মালপত্র যত্নে রাখুন।
বাংলাদেশ সরকারের দেওয়া পরিচয়পত্র, বিমানের টিকিট, টিকা দেওয়ার কার্ড, অন্য কাগজপত্র, টাকা, বিমানে পড়ার জন্য ধর্মীয় বই ইত্যাদি গলায় ঝোলানোর ব্যাগে যত্নে রাখুন। সময়মতো বিমানে উঠে নির্ধারিত আসনে বসুন।
জেদ্দা বিমানবন্দর
মোয়াল্লেমের গাড়ি আপনার জন্য জেদ্দা হজ টার্মিনালে অপেক্ষা করবে। সেখান থেকে তাঁরা আপনাকে মক্কায় যে বাড়িতে থাকবেন, সেখানে নামিয়ে দেবেন। মোয়াল্লেমের নম্বর (আরবিতে লেখা) কবজি বেল্ট দেওয়া হবে, তা হাতে পরে নেবেন। পাশাপাশি বাংলাদেশ সরকারের দেওয়া পরিচয়পত্র (যাতে পিলগ্রিম নম্বর, আপনার নাম, ট্রাভেল এজেন্টের নাম ইত্যাদি থাকবে) গলায় ঝোলাবেন। জেদ্দা থেকে মক্কায় পৌঁছাতে দুই ঘণ্টা সময় লাগতে পারে। চলার পথে তালবিয়া পড়ুন (লাব্বাইকা আল্লাহুম্মা লাব্বাইক…)।
মক্কায় পৌঁছে
মক্কায় পৌঁছে আপনার থাকার জায়গায় মালপত্র রেখে ক্লান্ত থাকলে বিশ্রাম করুন। আর যদি নামাজের ওয়াক্ত হয়, নামাজ আদায় করুন। বিশ্রাম শেষে দলবদ্ধভাবে উমরাহর নিয়ত করে থাকলে উমরাহ পালন করুন।
মসজিদুল হারামে (কাবা শরিফ) অনেকগুলো প্রবেশপথ আছে; সব কটি দেখতে একই রকম। কিন্তু প্রতিটি প্রবেশপথে আরবি ও ইংরেজিতে ১, ২, ৩ নম্বর ও প্রবেশপথের নাম আছে, যেমন—‘বাদশা আবদুল আজিজ প্রবেশপথ’। আপনি আগে থেকে ঠিক করবেন, কোন প্রবেশপথ দিয়ে ঢুকবেন বা বের হবেন। আপনার সফরসঙ্গীকেও স্থান চিনিয়ে দিন। তিনি যদি হারিয়ে যান, তাহলে নির্দিষ্ট নম্বরের গেটের সামনে থাকবেন। এতে ভেতরে ভিড়ে হারিয়ে গেলেও নির্দিষ্ট স্থানে এসে সঙ্গীকে খুঁজে পাবেন।
কাবা শরিফে স্যান্ডেল-জুতা রাখার ক্ষেত্রে খুব সতর্ক থাকবেন। নির্দিষ্ট স্থানে জুতা রাখুন। এখানে-সেখানে জুতা রাখলে পরে আর খুঁজে পাবেন না। প্রতিটি জুতা রাখার র্যাকেও নম্বর দেওয়া আছে। এই নম্বর মনে রাখুন।
উমরাহর নিয়মকানুন আগে জেনে নেবেন, যেমন—সাতবার তাওয়াফ করা, জমজমের পানি পান করা, নামাজ আদায় করা, সাঈ করা (সাফা-মারওয়া পাহাড়ে দৌড়ানো—যদিও মসৃণ পথ, শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত), মাথা মুণ্ডানো অথবা চুল ছোট করা—এসব কাজ ধারাবাহিকভাবে করা। ওয়াক্তীয় নামাজের সময় হলে যতটুকু হয়েছে ওই সময় নামাজ পড়ে আবার বাকিটুকু শেষ করা।
উমরাহ
হিল (কাবা শরিফের সীমানার বাইরে মিকাতের ভেতরের স্থান) থেকে অথবা মিকাত থেকে ইহরাম বেঁধে বায়তুল্লাহ শরিফ তাওয়াফ করা, সাফা-মারওয়া সাঈ করা এবং মাথার চুল ফেলে দেওয়া বা ছোট করাকে উমরাহ বলে।
হজ তিন প্রকার—তামাত্তু, কিরান ও ইফরাদ। হজের মাসসমূহে (শাওয়াল, জিলকদ, জিলহজ) উমরাহর নিয়তে ইহরাম করে, উমরাহ পালন করে, পরে হজের নিয়ত করে হজ পালন করাকে হজে তামাত্তু বলে।
হজের মাসসমূহে একই সঙ্গে হজ ও উমরাহ পালনের নিয়তে ইহরাম করে উমরাহ ও হজ করাকে হজে কিরান বলে। আর শুধু হজ পালনের উদ্দেশ্যে ইহরাম বেঁধে হজ সম্পাদনকে হজে ইফরাদ বলে।
আরও কিছু পরামর্শ
সৌদি আরবে অবস্থানকালে কোনো চাঁদা ওঠানো, সাহায্য চাওয়া, ভিক্ষা করা দণ্ডনীয় অপরাধ। সুতরাং এগুলো থেকে বিরত থাকুন। ট্রাফিক আইন মেনে চলুন, সিগন্যাল পড়লে রাস্তা পার হোন। রাস্তা পার হওয়ার সময় অবশ্যই ডানে-বাঁয়ে দেখেশুনে সাবধানে পার হবেন। কখনো দৌড় দেবেন না।
কাবা শরিফ ও মসজিদে নববীর ভেতরে কিছুদূর পর পর পবিত্র কোরআন মজিদ রাখা আছে আর পাশে জমজম পানি (স্বাভাবিক ও ঠান্ডা) খাওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে।
মনে রাখবেন, মসজিদে নববী ও কাবা শরিফের সীমানার মধ্যে ধূমপান সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।
শরীরের কোনো স্থান কেটে গেলে অ্যান্টিসেপটিক ক্রিম ব্যবহার করুন এবং ক্ষতস্থানটি প্লাস্টার কিংবা ব্যান্ডেজ দিয়ে ঢেকে দিন।
হাঁচি কিংবা কাশি দেওয়ার সময় অবশ্যই আপনার মুখ ঢেকে নিন। কোনো ধরনের অসুস্থতা কিংবা দুর্ঘটনায় পড়লে বাংলাদেশ হজ মিশনের মেডিকেল সদস্যদের (চিকিৎসক) সঙ্গে যোগাযোগ করুন। হারানো হজযাত্রীদের খুঁজে পাওয়া ইত্যাদি বিষয়ে বাংলাদেশ হজ মিশনে অবস্থিত আইটি ডেস্ক সাহায্য করে। হজযাত্রীদের যাবতীয় তথ্য, দেশের পরিবার-পরিজনের কাছে ই-মেইলের মাধ্যমে সংবাদ পৌঁছানো যায়।
আপনার ট্রাভেল এজেন্সি আপনাকে যথাযথ সুবিধাদি (দেশ থেকে আপনাকে থাকা, খাওয়াসহ অন্য যেসব সুবিধার কথা বলেছিল) না দিলে আপনি মক্কা ও মদিনার বাংলাদেশ হজ মিশনকে জানাতে পারেন।
এতেও আপনি সন্তুষ্ট না থাকলে সৌদির ওজারাতুল হজকে (হজ মন্ত্রণালয়) লিখিত অভিযোগ করতে পারেন।
আরাফাতের ময়দানে অনেক প্রতিষ্ঠান বিনা মূল্যে খাবার, জুস, ফল ইত্যাদি দিয়ে থাকে। ওই সব খাবার আনতে গিয়ে ধাক্কাধাক্কি হয়, তাই সাবধান থাকবেন।
মুজদালিফায় রাতে থাকার জন্য প্লাস্টিকের পাটি পাওয়া যায়। এটি মক্কায়ও কিনতে পারবেন।
আরাফাতের ময়দান থেকে যদি হেঁটে মুজদালিফায় আসেন, পথে টয়লেট সেরে নেবেন। কেননা, মুজদালিফায় টয়লেটে অনেক ভিড় লেগে যায়।
মিনায় যে তাঁবুতে অবস্থান করবেন, সেসব তাঁবু চিহ্নিত করে নিন। মোয়াল্লেম অফিস থেকে তাঁবুর নম্বরসহ কার্ড দেওয়া হয়; তা যত্নে রাখুন। বাইরে বের হওয়ার সময় তা সঙ্গে রাখুন।
হজযাত্রী সচেতন থাকলে হারিয়ে যাওয়ার কোনো ভয় নেই।
একনজরে হজের কার্যক্রম
১ ইহরাম বাঁধা ২ ৭-৮ জিলহজ মিনায় অবস্থান ৩ ৯ জিলহজ সূর্যোদয়ের পরে মিনা থেকে আরাফাতে অবস্থান, সূর্যাস্তের পরে মুজদালিফায় যাওয়া ৪ ৯ জিলহজ মুজদালিফায় রাত যাপন ৫ ১০ জিলহজ মিনায় বড় জামারাকে (শয়তান) কঙ্কর মারা, কোরবানি করা, মাথার চুল ফেলে দেওয়া ৬ ১২ জিলহজের মধ্যে তাওয়াফ জিয়ারত, সাঈ করা ৭ ১১, ১২ জিলহজ মিনায় জামারাকে (শয়তান) কঙ্কর মারা
৮ বিদায়ী তাওয়াফ
সূত্র: হজ মন্ত্রণালয়, সৌদি আরব
টিকা দেওয়া
হজযাত্রীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা শুরু হয়েছে। সিভিল সার্জনের কার্যালয় এবং যেসব জেলায় মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল আছে, সেখান থেকে করতে পারবেন।
মাধ্যম
এজেন্সি বা যে মাধ্যমে হজের টাকা জমা দিয়েছেন, তা জমা হয়েছে কি না, যাচাই করুন। ওয়েবসাইটে নিজের নাম-ঠিকানা ঠিক আছে কি না দেখুন।
প্রয়োজনীয় মালপত্র
হজের জন্য প্রয়োজনীয় মালপত্র সংগ্রহ করা এখন থেকেই শুরু করুন। আপনার মালপত্র হালকা রাখুন। কারণ, আপনাকেই তা বহন করতে হবে।
নিয়মকানুন
হজের নিয়মকানুন জানতে প্রয়োজনীয় বইপুস্তক পড়ুন।
প্রথম আলো হজ গাইড সংগ্রহ করতে পারবেন হাজি ক্যাম্প অথবা প্রথম আলো কার্যালয় থেকে।
তালবিয়া
‘লাব্বাইকা আল্লাহুম্মা লাব্বাইক, লাব্বাইকা লা শারিকা লাকা লাব্বাইক, ইন্নাল হাম্দা, ওয়ানিন’মাতা লাকা ওয়াল্মুল্ক্, লা শারিকা লাকা।’
হজবিষয়ক তথ্য
পরিচালক, হজ অফিস, আশকোনা, উত্তরা, ঢাকা (ফোন:৮৯৫৮৪৬২ ৭৯১২৩৯১)
www.hajj.gov.bd
ঠিকানায় হজ বিষয়ে যাবতীয় তথ্য পাবেন।