তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে ‘জ্ঞানগর্ভ’ বক্তব্যদানকারী ব্যক্তিদের তীব্র সমালোচনা করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বলেছেন, যারা ২০০৭-০৮ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ছিলেন এত জ্ঞানীগুণী লোক, এত উচ্চমার্গের লোক তারা কেন ব্যর্থ হলেন? আজকে যখন মাঝে মধ্যে তাদের বেশ ভাল ভাল বক্তব্য শুনি, তাদের জ্ঞানগর্ভ বক্তব্য শুনি তখন তাদের একটি প্রশ্ন করার ইচ্ছা জাগে আপনাদের অনেকেই তো দায়িত্বে ছিলেন। কেউ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ছিলেন, আপনারা একটি নির্বাচন করতে ব্যর্থ হয়ে চলে গেলেন। এখন আবার নির্বাচন কিভাবে হবে সে ব্যাপারে সবক দেন। এই সমস্ত ব্যর্থ লোকদের সবক আমরা শুনবো কেন? দেশ কিভাবে এগিয়ে নিতে হবে তা আমাদের জানা আছে। ব্যর্থ লোকদের উপদেশ নিয়ে চললে দেশ এগোবে না, গণতন্ত্র সুসংহত হবে না। গতকাল রাজধানীতে এক আলোচনা সভায় প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জুলিও কুরি শান্তিপদক পাওয়ার ৪০ বছর পূর্তি উপলক্ষে বাংলাদেশ শান্তি পরিষদ ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। গণতন্ত্রকে জনগণের অধিকার হিসেবে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ’৭৫-এর পর এই সুযোগ ও অধিকার মিলিটারি ডিকটেটররা বার বার ছিনিয়ে নিয়েছে। কিছু শিক্ষিত জ্ঞানীগুণী ও সুশীলরা তাদের সমর্থন দিয়েছে। এখনও দেশে সে ধরনের ভাব পরিলক্ষিত হচ্ছে। সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বিলুপ্ত করায় বর্তমান সরকারের অধীনেই আগামী সাধারণ নির্বাচন হবে বলে উল্লেখ করেন। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের অনেক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হয়েছে। কিন্তু সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারকে কোন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হয়নি। তখন কোন রাজনীতি ছিল না। তিনি জোর দিয়ে বলেন, গণতন্ত্রকে কিভাবে অব্যাহত রাখতে হয়- তা আমরা জানি। আমরা দেশে শান্তি চাই। সংঘাতের মধ্য দিয়ে যেতে চাই না। প্রধানমন্ত্রী তার বক্তৃতায় ১৯৯৭ সালের পার্বত্য শান্তিচুক্তি এবং ১৯৯৬ সালে ভারতের সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদি গঙ্গা পানি চুক্তি স্বাক্ষরের কথা উল্লেখ করেন এবং আন্তর্জাতিক আদালতের মাধ্যমে মিয়ানমারের সঙ্গে সমুদ্রসীমা নিয়ে বিরোধের মীমাংসার কথা মনে করিয়ে দেন। তিনি বলেন, আমি বিশ্বাস করি, প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে যে কোন সমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধান করা সম্ভব। বঙ্গবন্ধুর শান্তির আদর্শতেই পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তিচুক্তি হয় বলে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। সভায় বাংলাদেশ শান্তি পরিষদের প্রেসিডেন্ট মোজাফ্ফর হোসেন পল্টুর সভাপতিত্বে অন্যদের মধ্যে বিশ্ব শান্তি পরিষদের এক্সিকিউটিভ সেক্রেটারি ইরাকলিস সাভদারিদিস, ভারতের সাবেক মন্ত্রী ও অল ইন্ডিয়া পিস অ্যান্ড সলিডারিটি অর্গানাইজেশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট প্রমোদ চন্দ্র সিনহা এবং নেপাল পিস অ্যান্ড সলিডারিটি কাউন্সিলের সদস্য জ্ঞানেন্দ্র বাহাদুর শ্রেষ্ঠা এ সভায় বক্তব্য দেন।