খুলনাঞ্চলে ভারী বর্ষণ ও ঝড়ো হাওয়া

খুলনাঞ্চলে ভারী বর্ষণ ও ঝড়ো হাওয়া

রাত ১২টার পর খুলনাঞ্চলে ভারী বর্ষণ শুরু হয়েছে। সঙ্গে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যাচ্ছে।

এর আগে বুধবার সন্ধ্যা থেকে শুরু হয় গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি। রাত বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে মাঝারি আকার ধারণ করে। সুন্দরবন সংলগ্ন উপকূলীয় চর এলাকায় প্রবল বাতাস ও ঝড়ো হওয়া বয়ে যায়।

ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাস এড়াতে এ অঞ্চলের হাজার হাজার মানুষ সাইক্লোন শেল্টারে আশ্রয় নিয়েছেন।

বুধবার রাত ১১টা ৪৫ মিনিটে মংলা সমূদ্রবন্দরে সংবাদ সংগ্রহে থাকা একাত্তর টেলিভিশনের খুলনা ব্যুরো প্রধান কনক রহমান বলেন, “সন্ধ্যা থেকে মংলায় হালকা ও মাঝারি বর্ষণ হচ্ছে। পশুর নদী ও সমুদ্র উপকূলে আছড়ে পড়ছে উত্তাল ঢেউ। মংলা বন্দরে অবস্থানরত সব জাহাজকে বিভিন্ন জেটিতে নিরাপদ আশ্রয়ে রাখা হয়েছে।”

তিনি জানান, বন্দর কর্তৃপক্ষ বিকেল থেকেই বন্দরের সব ধরনের কার্যক্রম বন্ধ রেখেছে। সুন্দরবন সংলগ্ন জেলে, বাওয়ালী, মৌয়ালী ও স্থানীয় গ্রামবাসীদের ২৮টি ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, “মংলা পৌর এলাকা, চিলা, সুন্দরবন, চাঁদপাই, বুড়িরডাঙ্গা, সোনাইতলা ও মিঠেখালি ইউনিয়নে জনগণকে মহাসেনের ভয়াবহতা স¤পর্কে মাইকিং করে অবহিত করা হয়েছে।”

এদিকে, মংলা কোষ্টগার্ড পশ্চিম জোনের সকল জলযান নিরাপদ আশ্রয়ে রাখা হয়েছে এবং সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীদেরকে সর্তক থাকতে বলা হয়েছে।

মোড়েলগঞ্জ উপজেলার মহিষচরণী গ্রামের কালেজ প্রভাষক মো. আল-আমিন জানান, সতর্ক বার্তা পেয়ে সাইক্লোন শেল্টারে সন্ধ্যার পর থেকেই গ্রামবাসীরা ছুটে আসছেন।

তিনি আরো জানান, সন্ধ্যা থেকেই হালকা ও মাঝারি বর্ষণ হচ্ছে। এতে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন এলাকাবাসী।

সিডর ও আইলা বিধ্বস্ত শরণখোলা উপজেলার রায়েন্দা ইউপি চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান মিলন জানান, ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় এমন খবরে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন এলাকাবাসী। যার কারণে তারা বিকেল থেকেই আশ্রয় কেন্দ্রে অবস্থান নিয়েছেন।

দুবলার চর থেকে ফিরে আসা জেলেরা  জানান, যেসব জেলে ও নৌকা সুন্দরবনসহ বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরার কাজে নিয়োজিত ছিল তার অধিকাংশ ফিরে এসেছে। যারা ফিরে আসতে পারেননি তারা সুন্দরবনের দুবলার চরসহ বিভিন্ন চরে এবং বিভিন্ন ছোট খালে আশ্রয় নিয়েছে।

উপকূলীয় মৎস্য সমবায় সমিতির সাধারণ স¤পাদক মো. ইদ্রিস আলী  জানান, সুন্দরবন থেকে হাজার হাজার মাছ ধরা ট্রলার নিরাপদ আশ্রয়ে উপকূলের খুলনা, মংলা, কয়রা, দাকোপ, শরণখোলা, রায়েন্দা, বাগেরহাট কেবি বাজার, তাফালবাড়ি, মোরেলগঞ্জ নোঙ্গর করেছে।

এদিকে, সার্বিক অবস্থা মনিটরিংয়ের জন্য খুলনা, বাগেরহাট ও সাতক্ষীরায় ২৮টি কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। এর মধ্যে খুলনায় ১০, বাগেরহাটে ১০ ও সাতক্ষীরায় ৮টি। এছাড়া জেলাগুলোর সিভিল সার্জনের কার্যালয় থেকে ২৭৬টি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। এর মধ্যে খুলনায় ১১৬, বাগেরহাটে ৮২ ও সাতক্ষীরায় ৭৮টি।

খুলনা জেলা প্রশাসন কার্যালয় সূত্র  জানায়, ঘুর্ণিঝড় মহাসেন থেকে প্রাণহানি এড়াতে খুলনা জেলায় ১৬৯টি আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। ঝড়ের তীব্রতা বাড়লে উপকূলবাসীদের পাশ্ববর্তী আশ্রয় কেন্দ্রে আসতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। উপজেলা সদর এবং ইউনিয়ন পর্যায়ে উদ্ধার কাজের জন্য ট্রলার প্রস্তুত রাখা হয়েছে। জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে সার্বক্ষণিক নিয়ন্ত্রণ কক্ষ খোলা হয়েছে।

খুলনা জেলা প্রশাসক মেজবাহ উদ্দিন জানান, দুর্যোগ মোকাবিলায় ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। চরাঞ্চলসহ বিভিন্ন এলাকার সাইক্লোন শেল্টারগুলোতে মানুষ অবস্থান নিয়েছেন।

অন্যান্য জেলা সংবাদ বাংলাদেশ শীর্ষ খবর