প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল মঙ্গলবার দেশের ১২জন সেরা মেধাবী শিক্ষার্থীর হাতে পুরস্কার তুলে দিয়ে বলেছেন, তার সরকার মেধার বিকাশ ও চর্চার সুযোগ সৃষ্টি করতে যা কিছু প্রয়োজন তা করবে। নিজেদেরকে আগামী দিনের নেতা হিসাবে গড়ে তুলতে আরো মনোযোগের সঙ্গে লেখাপড়া করতে শিক্ষার্থীদের পরামর্শ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, শিক্ষা হচ্ছে এমন এক সম্পদ যা কেউ কেড়ে নিতে পারে না। সরকার দেশকে অশিক্ষা ও ক্ষুধার অভিশাপ থেকে মুক্ত করে বিশ্বসভায় সোনার বাংলা হিসাবে প্রতিষ্ঠা করতে চায় বলে তিনি উল্লেখ করেন।
জাতীয় পর্যায়ে বছরের সেরা ১২ জন মেধাবীকে পুরস্কার প্রদানের এই অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। তিনি আরো বলেন, আমরা পেছনে থাকতে চাই না। কেবলি সামনে যেতে চাই। মেধার বিকাশে অধিকতর উদ্যোগ নেয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা এদেশের সম্পদের সীমাবদ্ধতা সম্পর্কে জানি। তবু সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে মেধার বিকাশে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতেই হবে। বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে শিক্ষা মন্ত্রণালয় এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। শিক্ষামন্ত্রী নূরুল ইসলাম নাহিদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন শিক্ষা সচিব ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী ও মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক প্রফেসর ফাহিমা খাতুন। পুরস্কার বিজয়ীদের মধ্যে ঢাকার ওয়াই ডব্লিউ সি এ স্কুলের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী হুমারা আদিবা এবং রাঙ্গামাটি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্র ভুবন দে অনুষ্ঠানে তাদের অনুভূতি প্রকাশ করে বক্তৃতা করে। দেশব্যাপী ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে অষ্টম, নবম থেকে দশম ও একাদশ থেকে দ্বাদশ- এই তিন ক্যাটাগরিতে সৃজনশীল মেধা অন্বেষণ প্রতিযোগিতা ২০১৩ তে ১ লাখেরও বেশি শিক্ষার্থী অংশ নেয়। শিক্ষামন্ত্রী ১১ মার্চ ঢাকায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এই প্রতিযোগিতার উদ্বোধন করেন। বিভাগীয় পর্যায়ের প্রতিযোগিতায় বিজয়ী ৯৬ শিক্ষার্থীর মধ্য থেকে ১৩ এপ্রিল ঢাকায় অনুষ্ঠিত জাতীয় পর্যায়ের প্রতিযোগিতায় চার বিষয়ের ওপর ১২ মেধাবী চূড়ান্ত করা হয়। বিষয়গুলো হচ্ছে- বাংলাদেশ স্টাডিজ, ভাষা ও সাহিত্য, দৈনন্দিন বিজ্ঞান/বিজ্ঞান ও গণিত এবং কম্পিউটার। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী চূড়ান্ত বিজয়ী প্রত্যেকের হাতে ১ লাখ টাকার চেক, একটি মেডেল ও সনদপত্র তুলে দেন। এতে বিভাগীয় পর্যায়ে বিজয়ী ৮৪ শিক্ষার্থীকেও পদক ও সনদপত্র দেয়া হয়।
বিজয়ীদের অভিনন্দন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী আশাবাদ ব্যক্ত করেন যে, মেধাবীরা উচ্চশিক্ষা ও কর্মক্ষেত্রেও তাদের সাফল্যের স্বাক্ষর রাখবে এবং মেধা, দেশপ্রেম ও ত্যাগের মাধ্যমে দেশ ও জাতির কল্যাণে নিজেদের নিয়োজিত করবে। আজকের শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকেই আগামী দিনের রাষ্ট্রনায়ক, বিজ্ঞানী, সাহিত্যিক, দার্শনিক, আইটি বিশেষজ্ঞ ও চিকিত্সকসহ সফল মানুষ গড়ে উঠবে -এ প্রত্যাশা ব্যক্ত করে শেখ হাসিনা বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বলতেন, সোনার বাংলা গড়তে সোনার মানুষ চাই।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই অনুষ্ঠানে যে মেধাবী মুখগুলো দেখছি, তোমরাই সেই সোনার মানুষ এবং তোমরাই গড়বে সমৃদ্ধ বাংলাদেশ। তোমরাই এই প্রিয় মাতৃভূমিকে আরো এগিয়ে নেবে এবং বিশ্বসভায় এদেশকে অধিকতর মর্যাদার আসনে আসীন করবে।