কুর্মিটোলায় বিমানবাহিনী ঘাঁটি বঙ্গবন্ধু উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ উপলক্ষে
গতকাল বিমান ঘাঁটিতে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, বিমানবাহিনী ঘাঁটি বঙ্গবন্ধু একটি আধুনিক, পেশাদার, সক্ষম ও সুশৃঙ্খল সশস্ত্র বাহিনী গঠনে জাতির পিতার লালিত স্বপ্নের বাস্তবায়নে নতুন দিগন্তের সূচনা করবে। শেখ হাসিনা বাংলাদেশ বিমানবাহিনী ঘাঁটি বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে বিমানবাহিনীতে নতুন সংযোজিত আধুনিক যুদ্ধ বিমান এফ-৭বিজি১ ও নতুন এমআই এসএইচ হেলিকপ্টারেরও উদ্বোধন করেন। এরপর বিমানবাহিনীর বিভিন্ন এয়ারক্রাফটের বর্ণাঢ্য ফ্লাই-পাস্ট ও নতুন অন্তর্ভুক্ত এয়ারক্রাফটের এ্যারোবেটিক শো’র আয়োজন করা হয়। প্রধানমন্ত্রী এই প্রদর্শনী প্রত্যক্ষ ও অভিবাদন গ্রহণ করেন। মন্ত্রিসভার সদস্যবৃন্দ, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টাবর্গ, চীনের রাষ্ট্রদূত, সেনাবাহিনী ও নৌবাহিনী প্রধান এবং পদস্থ বেসামরিক ও সামরিক কর্মকর্তারা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, নতুন যুদ্ধ বিমান ও হেলিকপ্টার অন্তর্ভুক্তির মাধ্যমে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর পরিচালন ক্ষমতা ও পেশাগত দক্ষতা আরও বৃদ্ধি পাবে। তিনি বলেন, সরকার সম্পদের সীমাবদ্ধতার মধ্যেও যতটুকু সহায়তা দেয়া সম্ভব এ ব্যাপারে কোন কার্পণ্য করবে না।
তিনি বলেন, জাতির পিতার স্বপ্ন বাস্তবায়নের ধারাবাহিকতায় বর্তমান সরকার সশস্ত্রবাহিনীর আধুনিকায়নের উপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করেছে। সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনীর উন্নত যুদ্ধকৌশল, দক্ষতা ও সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য ইতিমধ্যে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীতে সংযোজিত হয়েছে যুগোপযোগী ও অত্যাধুনিক যুদ্ধের বিভিন্ন উপকরণ। স্বাধীনতার পর বাংলাদেশে দ্বিতীয় বারের মতো একটি উড্ডয়ন বিমান ঘাঁটি স্থাপন এবং এ বাহিনীতে অত্যাধুনিক যুদ্ধ বিমান এফ-৭বিজি১ ও এমআই ১৭১ এসএইচ হেলিকপ্টার অন্তর্ভুক্তির মাধ্যমে বর্তমান সরকারের সশস্ত্র বাহিনীর আধুনিকায়ন নীতিরই প্রতিফলন।
তিনি বলেন, বিমানবাহিনীকে আধুনিকায়নের পদক্ষেপ হিসেবে বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে এ বাহিনীতে সংযোজিত হয়েছিল ৪র্থ প্রজন্মের অত্যাধুনিক মিগ-২৯ যুদ্ধ বিমান, সুপরিসর সি-১৩০ পরিবহন বিমান এবং উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন আকাশ প্রতিরক্ষা রাডার। এবারও সরকার বিমানবাহিনীকে শক্তিশালী, দক্ষ ও আধুনিক করে গড়ে তোলার প্রয়োজনীয় কার্যক্রম হাতে নিয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ইতিমধ্যে আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা জোরদার করার প্রয়োজনে বিমান বাহিনীতে প্রথমবারের মতো ভূমি থেকে আকাশে নিক্ষেপযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র সংযোজন করা হয়েছে। এছাড়া যুদ্ধ বিমনাসহ অন্যান্য যন্ত্রপাতির সুষ্ঠু ও সাশ্রয়ী রক্ষণাবেক্ষণের লক্ষ্যে ‘বঙ্গবন্ধু এ্যারোনটিক্যাল সেন্টার’ স্থাপন করা হয়েছে। যা বর্তমান সরকারের একটি যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত ও সময়োপযোগী পদক্ষেপ।
প্রধানমন্ত্রী বৈমানিকদের দক্ষতায় তার পূর্ণ আস্থা ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, এ নতুন ঘাঁটিতে নতুন যুদ্ধ বিমানের মাধ্যমে আরও উন্নত প্রশিক্ষণের সুযোগ এবং নিজেদের দক্ষ বৈমানিকরূপে গড়ে তুলতে সক্ষম হবেন। তিনি বলেন, ‘প্রশিক্ষণের জন্য আমাদের অবকাঠামোগত ভিত্তি অত্যন্ত সৃদৃঢ়। প্রশিক্ষণের মান এবং দক্ষতায়ও আমরা পিছিয়ে নেই। শুধু দেশেই নয় বিদেশেও আমাদের প্রশিক্ষক বৈমানিকরা প্রশিক্ষণ প্রদানের মাধ্যমে তাদের দক্ষতার স্বাক্ষর রেখে চলছেন। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে এখন আমরা উন্নত দেশের বিমান বাহিনীর সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে এগিয়ে চলছি।