হেফাজতে ইসলামের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাবে সরকার। সংগঠনটির অরাজনৈতিক দাবি ক্রমান্বয়ে পূরণ করা হবে। ঢাকা অবরোধসহ অন্যান্য কর্মসূচি প্রত্যাহারে সরকার সব রকম চেষ্টা করবে। সরকারের নীতি-নির্ধারণী সূত্রে এ খবর জানা গেছে।
ওই সূত্রমতে, সরকার হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের সঙ্গে মুখোমুখি অবস্থানে যেতে চায় না; বরং বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী যাতে হেফাজতে ইসলামকে রাজনৈতিক-ভাবে ব্যবহার করতে না পারে, সে জন্য সরকার ওই সংগঠনের সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহত রাখবে।
সরকারের সূত্রগুলো জানায়, গত শনিবার রাতে গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দলীয় কয়েকজন নীতিনির্ধারক ও জ্যেষ্ঠ মন্ত্রীর সঙ্গে রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা করেন। প্রথমে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের সঙ্গে একান্ত বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রী। পরে তিনি সৈয়দ আশরাফকে নিয়ে নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, পররাষ্ট্রমন্ত্রী দীপু মনি, রেলমন্ত্রী মুজিবুল হক, পরিবেশ ও বনমন্ত্রী হাছান মাহমুদ এবং আইন প্রতিমন্ত্রী কামরুল ইসলামের সঙ্গে বৈঠক করেন।
বৈঠকে হেফাজতে ইসলামের কর্মসূচি মূল্যায়ন ও ভবিষ্যৎ কর্মপন্থা নিয়ে আলোচনা হয়। তাদের সমাবেশ শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হওয়ায় প্রধানমন্ত্রী সন্তোষ প্রকাশ করেন। তিনি হেফাজতে ইসলামের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার জন্য নেতাদের নির্দেশ দেন। গতকাল রাতেও তিনি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহীউদ্দীন খান আলমগীরসহ কয়েকজন মন্ত্রীর সঙ্গে বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেন।
জানতে চাইলে বনমন্ত্রী হাছান মাহমুদ প্রথম আলোকে বলেন, হেফাজতে ইসলামে বিএনপি-জামায়াতের অনুপ্রবেশকারী আছে। এরাই হেফাজতের অরাজনৈতিক কর্মসূচিকে রাজনৈতিক চরিত্র দেওয়ার চেষ্টা করছে।
কয়েকজন মন্ত্রী জানান, সরকার এরই মধ্যে হেফাজতে ইসলামের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে কতগুলো পদক্ষেপ নিয়েছে। তাদের অন্যান্য অরাজনৈতিক দাবিও সরকার গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করছে। সরকার মনে করে, নির্বাচন সামনে রেখে বিএনপি-জামায়াত ধর্মীয় উন্মাদনা ছড়িয়ে হেফাজতে ইসলামকে ব্যবহার করছে। সরকার এ সুযোগ বন্ধ করতে সব রকম চেষ্টা অব্যাহত রাখবে। হেফাজতে ইসলামের সঙ্গে রাজনৈতিক নেতাদের আলোচনার পাশাপাশি সরকারের বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থাও যোগাযোগ রাখবে।