জামায়াত-শিবির না ছাড়লে রাজনীতি থেকে খালেদা জিয়াকে বিদায় নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সভাপতি তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু।
শনিবার দুপুর সোয়া ২টায় সিরডাপ মিলনায়তনে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের জাতীয় পরামর্শ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান।
ইনু বলেন, “বিরোধী দলীয় নেত্রী, আপনি সিদ্ধান্ত নিন গণগন্ত্রের সঙ্গে থাকবেন নাকি জঙ্গিবাদের সঙ্গে। জামায়াত-শিবিরের তাণ্ডবে নারী অধিকার পদদলিত হয়েছে। দলীয় নেত্রীকে বলবো, চোখ খুলুন, দেখুন কিভাবে তারা জাতীর ওপর হামলা চালাচ্ছে।”
বৈষম্যবিরোধী আইন নিয়ে তিনি বলেন, “সংবিধানে যত বিধি বিধানই থাকুক না কেন তার বাস্তবায়ন সেভাবে হচ্ছে না। আইন তৈরির বিষয়টি সংসদের বাইরে উৎপত্তি হতে পারে। কিন্তু তা চূড়ান্ত হবে সংসদে। সেদিক থেকে আইন কমিশন ও মানবাধিকার কমিশন গুরুত্ব সহকারে কাজটি করছে। বৈষম্যবিরোধী আইনের প্রয়োজন রয়েছে। এ আইনের জন্য তিনটি চ্যালেঞ্জ রয়েছে। এগুলো হলো বর্তমান আইনে এ বিষয়ে যা নেই তা সংযোজিত করা, বিধি-বিধান তৈরি করা, আইন বাস্তবায়ন না করলে তাতে সাজা দেওয়ার চ্যালেঞ্জ।”
জাতীয় পরামর্শ সভার আলোচনার বিষয়বস্তু ছিল ‘সকলের জন্য সমান সুযোগ’ বৈষম্য বিরোধী আইন প্রণয়নের প্রস্তাবনা।
মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মিজানুর রহমানের সভপতিত্বে আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন জাতীয় পরামর্শ সভায় আইন কমিশনের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. শাহ আলম, বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিস ট্রাস্টের (ব্লাস্ট) নির্বাহী পরিচালক ব্যারিস্টার সারা হোসেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক সোনিয়া নিশাত আমীন।
মিজানুর রহমান বলেন, “দেশে যারা তাণ্ডব চালাচ্ছে তাদের রুখতে হবে। জনগণকে এক হতে হবে। যারা বাংলাদেশকে অন্ধকারে নিক্ষেপ করছে তাদের রুখতে হবে। সেনাবাহিনীকে উস্কানি দেওয়া হচ্ছে। এসব কাজ বাস্তবায়ন করতে হলে আমাদের ভেতরে বৈষম্য শেষ করতে হবে। আর সে জন্যই বৈষম্যবিরোধী আইন দরকার। বৈষম্য নিয়ন্ত্রক আইনগুলো মানুষের অধিকার রক্ষার্থে ব্যর্থ হয়েছে। এ জন্য বৈষম্য বিরোধী আইন প্রয়োজন।”
আইন কমিশনের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. শাহ আলম বলেন, “কাগজে কলমে অধিকার আছে কিন্তু বাস্তবায়ন নেই এমন বিষয়গুলো নিয়ে আমরা কাজ করছি। এ নিয়ে বিভিন্ন সংস্থা আমাদের সহযোগিতা করেছে। সবাই মিলেই এ আইনের খসড়া করার কাজ চলছে।”
সভায় মূলপ্রবন্ধ পাঠ করেন জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির (ইউএনডিপি) রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি গবেষক লুবনা ইয়াসমিন।
মূল প্রবন্ধ পাঠকালে তিনি বলেন, সাংবিধানিক বিধানবলী থেকে এটা সুস্পষ্ট যে নাগরিকদের অধিকার ভোগের ক্ষেত্রে কোনো ধরনের বৈষম্য গ্রহণযোগ্য না। কিন্তু বাস্তব অবস্থা ভিন্ন। বাংলাদেশে কিছু ব্যক্তি বা গোষ্ঠী নানাবিধ সামাজিক, অর্থনৈতিক ঐতিহাসিক, সাংস্কৃতিক বা প্রথাগত কারণে তাদের সাংবিধানিক অধিকার বা রাষ্ট্রীয় আইনে প্রাপ্য অধিকার ভোগ করতে পারছে না।