নিজের আসল পিতৃ পরিচয় জানতে এবার আদালতের শরণাপন্ন হয়েছেন ভারতের ৪২ বছর বয়সী শীতল ভাটিয়া। এতো দিন যাকে তিনি দাদা বলে জেনে এসেছেন, এখন তাকেই তিনি নিজের পিতা বলে দাবি করে আদালতের শরণাপন্ন হয়েছেন। আদালতে দায়ের করা আবেদনে শীতল বলেছেন তার দাদা ডা. রমেশ ভাটিয়াই হচ্ছে তার জন্মদাতা পিতা। তিনি অভিযোগ করেছেন তার মায়ের সঙ্গে ডা. রমেশের অনৈতিক সম্পর্কের কারণেই তার জন্ম হয়েছে। অভিযোগে শীতল বলেছেন, ১৯৭০ সালে ডা. রমেশের ছেলে রঞ্জিতের সঙ্গে মায়ের বিয়ে হয়েছিল। তিনি মৃগী রোগী ছিলেন। তবে তাকে জোর করে বিয়ে করানো হয়েছিল। ডা. রমেশ পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে আমার মাকে যৌন নিপীড়ন করতে শুরু করেন। অপমান এড়াতে তিনি মুখ বুঁজে এ নির্যাতন মেনে নিয়েছিলেন। ১৯৯১ সালে রঞ্জিত মারা যান। এর ফলে ডা. রমেশ যেন পুরো স্বাধীনতা পেয়ে বসেন। ৩০ বছর বয়সে দাদার আচরণ নিয়ে শীতলের সন্দেহ দানা বাঁধতে শুরু করে। তিনি তার মাকে তার জীবন নিয়ে প্রশ্ন করেন। তবে তার মা তাকে এ ব্যাপারে নিরুৎসাহিত করে বলতেন রঞ্জিত মারা গেছেন এখন রমেশের হাতেই সব কিছু নির্ভর করছে। ১৯৯৮ সালের মে মাসে বাড়ির সবাই একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গেলে ডা. রমেশ শীতলকে নিপীড়ন করার চেষ্টা করেন বলে তিনি দাবি করেছেন। বিষয়টি তার পিসিকে জানালে তিনি তাকে এ ব্যাপারে চুপ থাকার নির্দেশ দেন এবং বলেন, বিষয়টি নিয়ে কথা বললে তাকে মেরে ফেলা হবে। ২০১২ সালে অক্টোবরে শীতল ডা. রমেশকে আইনি নোটিশ পাঠিয়ে তাকে জন্মদাতা পিতা দাবি করে ডিএনএ টেস্টের আবেদন করেন। এ নোটিশের জবাব দেয়া হলেও শীতলের পিতৃত্বের ব্যাপারে কোন জবাব পাওয়া যায়নি। ডা. রমেশের আরেক ছেলে শীলেশ ভাটিয়া তাকে নিজের অফিসে ডেকে নিয়ে কোন আইনি প্রক্রিয়া না চালানোর নির্দেশ দেন। এ ব্যাপারে চুপ থাকার জন্য শীতলকে একটি ফ্ল্যাট দেয়ারও প্রস্তাব করা হয়। কিন্তু শীতল তা অস্বীকার করে নিজের পিতৃ পরিচয় জানায় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। এরপর শীতলের জীবন হুমকির সম্মুখীন হয়েছে বলে তিনি দাবি করেছেন। পুলিশের কাছে অভিযোগ করেও কোন ফল পাওয়া যায়নি। হাইকোর্টে তার মামলার শুনানির দিন নির্ধারিত হয়েছে আগামী ১২ই এপ্রিল। নিজের পিতৃত্ব প্রমাণের জন্য ডিএনএন টেস্টের নির্দেশ দেয়ার জন্য শীতল আদালতের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।