মিয়ানমারে আরও ৩টি শহরে ছড়িয়ে পড়েছে দাঙ্গা। এর মধ্যে রয়েছে রাজধানী ন্যাপিড, ইয়ামেথিন সহ মোট ৪টি শহরে। গতকাল এ খবর দিয়েছে অনলাইন জি নিউজ। এতে বলা হয়েছে, মুসলমান ও বৌদ্ধদের মধ্যে এ দাঙ্গায় নতুন করে অনেক বাড়িঘর, মসজিদ জ্বালিয়ে দেয়া হয়েছে। অসংখ্য মানুষ হয়েছে বাস্তুচ্যুত। গত বুধবার দাঙ্গা শুরুর পর এরই মধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেছে মিয়ানমার বিষয়ক জাতিসংঘের বিশেষ দূত বিজয় নামবিয়ার। তিনি ধ্বংসযজ্ঞ দেখে দুঃখ প্রকাশ করেছেন। পাশাপাশি অনেক মুসলমান ও বৌদ্ধ তাদের মধ্যে সমপ্রীতি ফেরানোর আহ্বান জানিয়েছিলেন। কিন্তু সব চেষ্টাই ব্যর্থ হয়েছে। উল্টো পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। তবে দাঙ্গা ছড়িয়ে পড়ায় নতুন করে কেউ নিহত হয়েছেন কি না তা জানা যায়নি। এর আগে এবারের সবচেয়ে দাঙ্গা শুরু হয় মিখতিলা শহরে। সেখানে বাড়িঘর, মসজিদে আগুন দেয়ায় কমপক্ষে ৩২ জন নিহত হয়েছেন। এক হাজারের বেশি মানুষ হয়েছেন বাস্তুচ্যুত। তাদের বেশির ভাগই মুসলমান। কয়েক দিন পর সেই দাঙ্গা এখন রাজধানী ন্যাপিডমুখী অগ্রসর হচ্ছে। মিখতিলা শহরের তোতকোনে থেকে এক অধিবাসী বলেছেন, রোববার দিবাগত রাতে প্রায় ২০ জনের একটি দল একটি একতলা বিশিষ্ট মসজিদ ভাঙচুর করেছে। এতে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেছে। জানালা ভাঙচুর করেছে। এরপরে সেখানে সেনা সদস্যরা উপস্থিত হয়ে ফাঁকা গুলি ছুড়ে তাদের সরে যেতে বাধ্য করে। এর আগের দিন ইয়ামেথিন শহরের কাছে দাঙ্গাকারীরা একটি মসজিদ ও ৫০টি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়। এ খবর দিয়েছে রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন। লেওয়েই শহরে আরেকটি মসজিদ ও কয়েকটি ভবন ধ্বংস করে দিয়েছে হামলাকারীরা। তবে এ ৩টি শহরে পাল্টাপাল্টি হামলার ঘটনা ঘটেনি। এর আগে মিখতিলায় দাঙ্গা ভয়াবহ আকারে ছড়িয়ে পড়ার পর প্রেসিডেন্ট থেইন সেইন সেখানে জরুরি অবস্থা জারি করেন। তিনি দক্ষিণ এশিয়ার এই দেশটিতে গণতান্ত্রিক সংস্কারে হাত দিলেও এসব ঘটনায় তা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। ওদিকে মিয়ানমারে ফের মুসলমানদের বিরুদ্ধে বৌদ্ধদের এই দাঙ্গা শুরু হলেও এবারও নীরব শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পাওয়া বিরোধীদলীয় নেত্রী অং সান সু চি। দৃশ্যত, এখন পর্যন্ত তিনি এ নিয়ে কোন মন্তব্য করেননি। তিনি কোন পক্ষের প্রতি আহ্বান জানাননি দাঙ্গা বন্ধের। মুসলমান ও বৌদ্ধদের মধ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠায়ও তিনি কোন উদ্যোগ নেননি।