মিয়ানমারের মিইকতিলা শহরে বৌদ্ধ ও মুসলমানদের মধ্যে তিনদিনের সামপ্রদায়িক সহিংসতার পর জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে। বৌদ্ধ ও মুসলিম রোহিঙ্গাদের মধ্যে গত বছর শুরু হওয়া দাঙ্গা এখন দেশের প্রাণকেন্দ্র্রে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা বাড়ছে। শুক্রবার প্রেসিডেন্ট থেইন সেইন-এর পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে ঘোষণা করা জরুরি অবস্থার সিদ্ধান্ত রাষ্ট্রীয় টিভিতে সমপ্রচার করা হয়েছে। এ পদক্ষেপ সামরিক বাহিনীর জন্য দাঙ্গাবিধ্বস্ত ওই শহরটিতে আইনশৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে সহায়ক হবে বলে জানান তিনি। বুধবার থেকে মিয়ানমারে রোহিঙ্গা মুসলমানদের ওপর হামলার ঘটনায় অন্তত ২০ জন নিহত হয়েছে বলে জানা গেছে। উগ্র বৌদ্ধরা কমপক্ষে তিনটি মসজিদ জ্বালিয়ে দিয়েছে। মিইকতিলা শহরে সংঘর্ষের পর এখনও জ্বলছে আগুন। শহরটির বেশ কয়েকটি মসজিদে আগুন লাগিয়েছ উগ্র বৌদ্ধরা। বৃহস্পতিবার ভোরেও দাঙ্গার খবর পাওয়া গেছে। মধ্য মিয়ানমারে দাঙ্গায় মানুষ নিহত হয়েছে। তাছাড়া, মিইকতিলা শহরে এদিন নতুন করে দাঙ্গায় হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। বুধবার সহিংসতা শুরুর পর থেকে অন্তত ২০ জন নিহত হয়েছে। তবে হতাহতের প্রকৃত সংখ্যা জানা যায়নি। শুক্রবার সকালেও মিইকতিলায় ৮টি লাশ দেখা যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে। সহিংসতায় জড়িত থাকার সন্দেহে পুলিশ বেশ কয়েকজন বৌদ্ধকে গ্রেপ্তার করেছে। পুলিশ জানায়, অন্তত ১৫ জন বৌদ্ধ ভিক্ষু শুক্রবার শহরের উপকণ্ঠে মুসলিমদের বাড়িঘরে আগুন দিয়েছে। নতুন করে শুরু হওয়া এ দাঙ্গা থেকে জাতিগত সহিংসতা আরও ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। মিইকতালির এমপি উইন থেইন বলেছেন, শুক্রবার সকালের সহিংসতা এখন কিছুটা কমে এলেও শহরে উত্তেজনা বিরাজ করছে। মিইকতিলার এক বৌদ্ধ নেতা বলেন, যা ঘটছে তা সত্যিই দুঃখজনক। কারণ এটা একজনের ওপর ঘটছে না। এটা সবাইকেই ক্ষতিগ্রস্ত করছে। দাঙ্গা থেকে বাঁচতে শত শত মুসলিম বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়েছে। গত বছর পশ্চিম মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সহিংসতার জেরেই এ অস্থিরতা ছড়িয়ে পড়ে। ওই দাঙ্গায় ১১০ জন নিহত এবং ঘরহারা হয় ১ লাখ ২০ হাজার মানুষ। তাদের বেশির ভাগই রোহিঙ্গা মুসলিম। জাতিসংঘ ইতিমধ্যেই সতর্ক করে দিয়ে বলেছে, ২০১১ সালের মার্চে মিয়ানমারে ক্ষমতায় আসা নতুন আধা বেসামরিক সরকারের সংস্কার কর্মসূচি এ জাতিগত অস্থিরতার কারণে ব্যাহত হতে পারে।