অনুমতি ছাড়া ভারত ত্যাগ না করার জন্য ইতালির রাষ্ট্রদূতের ওপর আজ বৃহস্পতিবার নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছেন দেশটির সুপ্রিম কোর্ট। দ্য টাইমস অব ইন্ডিয়া অনলাইনে প্রকাশিত প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
ভারতে বিচারাধীন ইতালির দুই মেরিন সেনাকে ভোট দিতে দেশে যাওয়ার পর ফেরত পাঠাতে রোমের অস্বীকৃতির পরিপ্রেক্ষিতে সুপ্রিম কোর্ট এ আদেশ দিয়েছেন। ইতালির ওই দুই মেরিন সেনার বিরুদ্ধে ভারতের দুজন জেলেকে হত্যার অভিযোগ রয়েছে। এ ঘটনায় করা মামলায় ভারতে তাঁদের বিচার চলছিল।
ভারতে ফিরে আসার অঙ্গীকার করার পর ওই দুই মেরিন সেনাকে সম্প্রতি ইতালিতে অনুষ্ঠিত সাধারণ নির্বাচনে ভোট দিতে যাওয়ার অনুমতি দেন সর্বোচ্চ আদালত।
ওই দুই মেরিন সেনা ২২ মার্চের মধ্যে ফিরে আসবেন বলে ভারতে নিযুক্ত ইতালির রাষ্ট্রদূত ডেনিয়েল মানচিনি ব্যক্তিগতভাবে আদালতে নিশ্চয়তা দিয়েছিলেন। কিন্তু এখন আর তাঁরা ভারতে আসছেন না। উপরন্তু তাঁদের ফেরত পাঠাতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে রোম।
এর পরিপ্রেক্ষিতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী গতকাল বুধবার পার্লামেন্টে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন, ভোট দিতে দেশে যাওয়া ওই দুই ইতালীয় মেরিন সেনাকে ফেরত না পাঠালে পরিণাম ভালো হবে না। তাঁরা যদি তাঁদের প্রতিশ্রুতি না রাখেন, তাহলে ইতালির সঙ্গে ভারতের সম্পর্কে বিরূপ প্রভাব পড়বে।
প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী দুই মেরিন সেনাকে ফিরিয়ে আনতে ব্যর্থ হওয়ায় ইতালির রাষ্ট্রদূতের প্রতি দেশত্যাগের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন ভারতের সুপ্রিম কোর্ট। একই সঙ্গে তাঁর প্রতি একটি নোটিশও জারি করা হয়েছে। ইতালির রাষ্ট্রদূতকে ১৮ মার্চের মধ্যে এই নোটিশের জবাব দিতে বলেছেন আদালত।
ইতালি বলেছে, ওই দুই মেরিন সেনাকে ভারতের হাতে সোপর্দ করা হবে। তবে বিষয়টি আন্তর্জাতিক আইনের ভিত্তিতে সমাধানে রাজি আছে তারা। সে দেশের রাজধানী রোমে তাঁদের বিরুদ্ধে শুনানি চলছে।
মনমোহনের হুঁশিয়ারির পরিপ্রেক্ষিতে ইতালির দূতাবাসের এক বিবৃতিতে বলা হয়, ভারতের সুপ্রিম কোর্ট গত ১৮ জানুয়ারি ইতালির এই দাবি প্রত্যাখ্যান করে জাতিসংঘের সনদ অনুযায়ী দুই দেশকে সমুদ্র আইনের আওতায় সমঝোতায় পৌঁছার আহ্বান জানিয়েছেন।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, এ সমস্যার গ্রহণযোগ্য সমাধানে পৌঁছানোর ব্যাপারে রোম সবকিছু করছে এবং এই প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকবে। তারা চেষ্টা করবে যাতে দুই দেশের দৃঢ় ও বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কে চিড় না ধরে। দুই পক্ষের সমঝোতায় পৌঁছানোর লক্ষ্যে আলোচনায় বসতে প্রস্তুত ইতালি।
তবে সমঝোতার জন্য আলোচনা বসার ব্যাপারে ভারতের পক্ষ থেকে তাত্ক্ষণিক কোনো প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি।