সমাজ বিনির্মাণে চলচ্চিত্র শক্তিশালী হাতিয়ার: প্রধানমন্ত্রী

সমাজ বিনির্মাণে চলচ্চিত্র শক্তিশালী হাতিয়ার: প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, চলচ্চিত্র বিনোদনের অন্যতম প্রধান মাধ্যম। এ গণমাধ্যম মানুষকে গভীরভাবে প্রভাবিত করার ক্ষমতা রাখে। শিক্ষার প্রসার, বুদ্ধিবৃত্তির চর্চা, জাতি গঠন ও প্রগতিশীল সমাজ বিনির্মাণে চলচ্চিত্র তাই একটি শক্তিশালী হাতিয়ার। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার-২০১১ প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে এ কথাগুলো বলেন। তিনি বলেন, সমাজ পরিবর্তনে চলচ্চিত্রের এই সামর্থ্যকে বাস্তবে রূপ দিতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমান একটি প্রতিষ্ঠান গড়ার গুরুত্ব উপলব্ধি করেন। তিনি ১৯৫৭ সালে যুক্তফ্রন্টের শিল্প বাণিজ্য, শ্রম, দুর্নীতি দমন ও পল্লীসহায়তা মন্ত্রী ছিলেন। চলচ্চিত্রের উন্নয়নে তিনি এই সুযোগটি কাজে লাগান। ১৯৫৭ সালের ৩রা এপ্রিল প্রাদেশিক আইন পরিষদে ‘পূর্ব পাকিস্তান চলচ্চিত্র উন্নয়ন সংস্থা’ বিল উত্থাপন করেন। এই বিলটি আইনে পরিণত হয়ে প্রতিষ্ঠিত হয় এফডিসি। এই এফডিসিই বিগত ছয় দশক ধরে চলচ্চিত্র শিল্পের প্রাণকেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চলচ্চিত্র নির্মাতাদের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনারা চলচ্চিত্র নির্মাণে দেশের ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ও মহান মুক্তিযুদ্ধের পাশাপাশি সামাজিক সমস্যাগুলো তুলে ধরবেন। দর্শকরা যাতে ছবিটি দেখার পর কিছু শিক্ষা নিয়ে বাসায় ফিরতে পারে, কিছু বাণী পায়। তিনি বলেন, আপনারা সৃজনশীল ও জনপ্রিয় মানুষ। মানুষ আপনাদেরকে অনুসরণ করে। তাই সমাজ ও জনগণের প্রতি আপনাদের দায়বদ্ধতা অন্যদের চেয়ে বেশি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আপনাদের প্রতি আমার আহ্বান, শিশুদের আরও বেশি গুরুত্ব দিয়ে শিশুতোষ চলচ্চিত্র নির্মাণে এগিয়ে আসবেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার দেশে সুস্থধারার চলচ্চিত্র নির্মাণে উৎসাহিত করবে। সৃজনশীল মেধাবী ও দেশপ্রেমিক চলচ্চিত্রকারদের এগিয়ে আসতে অনুপ্রেরণা যোগাবে।
জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার-২০১১ প্রদান অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু এমপি। স্বাগত বক্তব্য রাখেন তথ্যসচিব হেদায়েতুল্লাহ আল মামুন। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন- জাতীয় সংসদের তথ্য মন্ত্রণালয় বিষয়ক সংসদীয় কমিটির সভাপতি একেএম রহমত উল্লাহ এমপি। প্রধান অতিথির ভাষণের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১১ সালের জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্তদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন। পুরস্কার প্রদান পর্ব শেষে চিত্রতারকা ফেরদৌস ও কুসুম শিকদারের উপস্থাপনায় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশ নেন কুমার বিশ্বজিৎ, ফাহমিদা নবী, সামিনা চৌধুরী, অনুপমা ডি. রোজারিও, চিত্রনায়িকা নিপুণ ও নৃত্যশিল্পী ওয়ার্দা রিহাব।
২০১১ সালে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্তরা হলেন- শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র ‘গেরিলা’ (প্রযোজক ফরিদুর রেজা সাগর ও এশা ইউসুফ), শ্রেষ্ঠ পরিচালক নাসিরউদ্দিন ইউসুফ (গেরিলা), শ্রেষ্ঠ কাহিনীকার মুহাম্মদ জাফর ইকবাল (আমার বন্ধু রাশেদ), শ্রেষ্ঠ চিত্রনাট্যকার নাসিরউদ্দিন ইউসুফ ও এবাদুর রহমান (গেরিলা), শ্রেষ্ঠ সংলাপ রচয়িতা নাসিরউদ্দিন ইউসুফ ও এবাদুর রহমান (গেরিলা), শ্রেষ্ঠ অভিনেতা ফেরদৌস (কুসুম কুসুম প্রেম), শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী জয়া আহসান (গেরিলা), শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব অভিনেতা আলমগীর (কে আপন কে পর), শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব অভিনেত্রী ববিতা (কে আপন কে পর), খলচরিত্রে শ্রেষ্ঠ অভিনেতা মিশা সওদাগর (বস নাম্বার ওয়ান) ও শতাব্দী ওয়াদুদ (গেরিলা), শ্রেষ্ঠ শিশুশিল্পী সেমন্তী (খণ্ড গল্প ৭১), শ্রেষ্ঠ সংগীত পরিচালক হাবিব (প্রজাপতি), শ্রেষ্ঠ সুরকার ইমন সাহা (কুসুম কুসুম প্রেম), শ্রেষ্ঠ গায়ক কুমার বিশ্বজিৎ (প্রজাপতি), শ্রেষ্ঠ গায়িকা ন্যান্সি (প্রজাপতি), শ্রেষ্ঠ গীতিকার শফিক তুহিন (প্রজাপতি), শ্রেষ্ঠ চিত্রগ্রাহক এল অপু রোজারিও (আমার বন্ধু রাশেদ), শ্রেষ্ঠ সম্পাদক সামির আহমেদ (গেরিলা), শ্রেষ্ঠ শব্দগ্রাহক রতন পাল (আমার বন্ধু রাশেদ), শ্রেষ্ঠ শিল্প নির্দেশক অনিমেষ আইচ (গেরিলা), শ্রেষ্ঠ মেকআপম্যান মো. আলী বাবুল (গেরিলা), শ্রেষ্ঠ পোশাক ও সাজসজ্জা শিমুল ইউসুফ (গেরিলা), শ্রেষ্ঠ প্রামাণ্যচিত্র আলবদর (প্রযোজক ফখরুল আবেদীন) ও লোকনায়ক কাঙ্গাল হরিনাথ (প্রযোজক চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তর)

অন্যান্য বিনোদন শীর্ষ খবর