শাহবাগে যা হচ্ছে তা মেনে নেওয়া যায় না বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। তিনি বলেছেন, “দুঃখ লাগে শাহবাগের দিকে তাকালে। তারা যা করছে কোনভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।”
বুধবার রাজধানীর ইমানুয়েলস কনভেনশন সেন্টারে আলেম ওলামাদের জাতীয় ওলামা পার্টিতে যোগদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
শাহবাগের আন্দোলনকারীদের উদ্দেশ্যে এরশাদ বলেন, দেশের কোথায় পতাকা উড়বে, সে ঘোষণা তারা দেওয়ার কে? তারা কি সরকার হয়ে গেছে? এতো ধৃষ্ঠতা মেনে নেওয়া যায় না। ১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধু এমন ঘোষণা দিয়েছিলেন। তিনি ছিলেন নির্বাচিত নেতা।”
এরশাদ বলেন, “গণতন্ত্রের সূতিকাগার বলা হয় লন্ডনকে। সেখানেও ধর্মভিত্তিক দল রয়েছে। এমনকি ভারতেও ধর্মভিত্তিক দল রয়েছে। তাহলে আমাদের দেশে সমস্যা কেন?”
তিনি বলেন, “যাদের ইসলাম ভালো লাগে না তারা ধর্মান্তরিত হয়ে যান, নয়তো অন্যদেশে চলে যান।”
বাংলাদেশেই প্রকৃত ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র বলেও দাবি করেন এরশাদ।
তিনি বলেন, “আমেরিকায় বাইবেল ছুঁয়ে শপথ করতে হয়। বাংলাদেশে কোরআন ছুঁয়ে শপথ করতে হয় না। আমরাই উদার।”
এরশাদ বলেন, “অনেকে টিভি টকশোতে ইসলামকে রাষ্ট্রধর্ম থেকে বাতিল করার কথা বলেন। সাহস থাকলে গণভোট দিন, দেখবেন ৯০ শতাংশ লোক ইসলামের পক্ষে ভোট দেবে।”
রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বাতিল করা হলে দেশে রক্ত গঙ্গা বয়ে যাবে বলেও হুঁশিয়ার করেন এরশাদ।
তিনি বলেন, “যারা ইসলামের বিরুদ্ধে কথা বলে তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করলাম। আমরা জয়ী হবোই। চুপ করে থাকলে চলবে না। উচ্চকণ্ঠে আওয়াজ তুলতে হবে। দেখবেন সব সব ভেসে যাবে।”
এরশাদ বলেন, “অনেক কথা বলার ছিল। কিন্তু হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হচ্ছে। তাই সব কথা বলতে পারলাম না। সাংবাদিকরা আমার লিখিত বক্তব্য ছেপে দেবেন।”
জাতীয় ওলামা পার্টির আহ্বায়ক মওলানা ক্বারী মু. হাবিবুল্লাহ বেলালীর সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য সাবেক প্রধানমন্ত্রী কাজী জাফর আহমদ, জাতীয় পার্টির মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার এমপি।
আরো বক্তব্য রাখেন প্রেসিডিয়াম সদস্য এমএ হান্নান, বিগ্রেডিয়ার জেনারেল (অব.) কাজী মাহমুদ হাসান, অধ্যাপক দেলোয়ার হোসেন খান, এমএ জব্বার এমপি, সাবেক মন্ত্রী কাজী ফিরোজ রশীদ, সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা, প্রেসিডিয়াম সদস্য সাবেক মন্ত্রী এবিএম তাজুল ইসলাম চৌধুরী, মীর আব্দুস সবুর আসুদ, সুনীল শুভরায় প্রমুখ।
বরিশালের বাকেরগঞ্জ, গাজীপুর ও যাত্রাবাড়ী এলাকা থেকে কয়েক শ’ আলেম-ওলামা এরশাদের হাতে ফুল দিয়ে জাতীয় ওলামা পার্টিতে যোগ দেন।