দেশের শিল্প-কারখানার অগ্নি নিরাপত্তা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে সফররত মার্কিন প্রতিনিধি দল। একই সঙ্গে তারা এ উদ্বেগ নিরসনে সরকারের দেয়া প্রতিশ্রুতির দ্রুত বাস্তবায়ন প্রত্যাশা করেছেন। মার্কিন শ্রম দপ্তরের সহযোগী ডেপুটি আন্ডার সেক্রেটারি এরিখ বিয়েলের নেতৃত্বাধীন প্রতিনিধি দলের সদস্যরা গতকাল বাণিজ্যমন্ত্রী জিএম কাদেরের সঙ্গে বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্র সরকার, দেশটির বাংলাদেশী পণ্যের ক্রেতা ও শ্রম অধিকার নিয়ে কাজ করা বিভিন্ন সংগঠনের তরফে উদ্বেগ ও প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন। সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত বৈঠক শেষে মন্ত্রী জিএম কাদের মানবজমিনের সঙ্গে আলাপকালে বলেন, তাদের এমন উদ্বেগ নতুন নয়। এর আগে মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধি (ইউএসটিআর) রন ক্লার্ক এবং সংস্থাটির জারি করা নোটিশে বাংলাদেশের শ্রমমান, কারখানার অগ্নি নিরাপত্তা এবং শ্রমিকদের অধিকার ও সুযোগ-সুবিধার বিষয়ে সরকারের অবস্থান ও উদ্যোগ জানতে চাওয়া হয়। ওই চিঠি ও নোটিশে শ্রমমান সন্তোষজনক না হলে দেশটির বাজারে বাংলাদেশী পণ্যের জিএসপি সুবিধা স্থগিত কিংবা বাতিলের হুঁশিয়ারিও দেয়া হয়। সরকারের তরফে এবং ব্যক্তিগতভাবে চিঠির জবাব দিয়ে গত জানুয়ারির শেষ সপ্তাহে তাদের সমস্ত উদ্বেগ নিরসনের চেষ্টা করা হয়েছে জানিয়ে জিএম কাদের বলেন, প্রতিনিধি দলের সদস্যদের সঙ্গে আলোচনায় মনে হয়েছে তারা আমাদের প্রতিবেদন ও চিঠিতে সন্তুষ্ট। তবে সেখানে যে উদ্যোগগুলোর কথা বলা হয়েছে তারা তার দ্রুত বাস্তবায়ন চেয়েছেন। বাণিজ্য মন্ত্রী বলেন, ‘প্রতিনিধি দলের সদস্যরাই শুধু নয়, মার্কিন অনেক কর্মকর্তার সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। দেশটিতে বাংলাদেশী পণ্যের জিএসপি সুবিধা অব্যাহত থাকুক- এটা তারাও চান বলেই মনে হয়েছে। তবে আমি মনে করি তাদের চাপ বা
সুপারিশে নয়, আমাদের নিজেদের স্বার্থেই অগ্নি নিরাপত্তা ও কারখানার মান উন্নয়নে চলমান উদ্যোগগুলোর দ্রুত বাস্তবায়ন দরকার।’ বৈঠকে প্রতিনিধি দলের সদস্যরা দেশের রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল (ইপিজেড) সহ শিল্প-কারখানায় ট্রেড ইউনিয়ন চালুর বিষয়ে সরকারের অবস্থান জানতে চান। তবে সেখানে শ্রমিক নেতা আমিনুল ইসলামের হত্যার তদন্ত কার্যক্রম, শ্রমিক সংগঠক বাবুল আক্তার ও কল্পনা আক্তারের মামলার সর্বশেষ অবস্থা এবং তাদের সংগঠনের রেজিস্ট্রেশন সংক্রান্ত মামলার অগ্রগতির বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের তরফে প্রতিনিধি দলকে অবহিত করা হয়। বিষয়গুলো নিয়ে ইউএসটিআরসহ মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের দীর্ঘ দিনের উদ্বেগ থাকলেও সরকারের অ্যাকশনগুলো তুলে ধরার পর এ নিয়ে প্রতিনিধি দলের সদস্যরা আর কোন প্রশ্ন ও কথা তুলেননি বলে জানান বৈঠকে অংশ নেয়া এক কর্মকর্তা। উল্লেখ্য, সফরের প্রথম দিনে পররাষ্ট্র সচিবের সঙ্গে বৈঠকে মার্কিন প্রতিনিধি দল আমিনুল ইসলাম হত্যার তদন্ত দ্রুত শেষ করার তাগিদ দিয়ে নির্মম এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতরা যাতে কোনভাবে ‘দায়মুক্তি’ না পায় সে বিষয়ে সতর্ক থাকারও পরামর্শ দেয়া হয়। –