যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসিতে হাজার হাজার লোক অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ কঠোর করতে মিছিল করেছে। ক্যাপিটল থেকে শুরু করে ওয়াশিংটন মনুমেন্টে শেষ হয় মিছিলটি। ‘এখনই অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ করুন’ এই শিরোনামের মিছিলে নিউটন ও কানেক্টিকাটের স্থানীয়রা ওই মিছিলে অংশগ্রহণ করে।
কানেক্টিকাটের একটি এলিমেন্টারি স্কুলে একজনের গুলিতে ২৯ জনের বেশি লোক নিহত হয়। এ ঘটনার পর নিরাপত্তা ও অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ নিয়ে জোড়ালোভাবে আলোচনা হয়।
অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ সংস্কার প্রস্তাবের প্রতি সমর্থন দেওয়ার জন্য রাজনীতিবিদদের প্রতি আহ্বান জানায় মিছিলে অংশগ্রহণকারীরা।
মার্কিন শিক্ষামন্ত্রী আরনে ডানকান জানান, তিনি যখন শিকাগোর সরকারি বিদ্যালয়গুলোর প্রধান নির্বাহী ছিলেন তখন প্রতি দুই সপ্তাহে বন্দুকের গুলিতে একজন শিক্ষার্থী নিহত হতো।
অস্ত্র নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানে উল্লেখিত অস্ত্রঅধিকারকে সীমিত করা হবে- এ বক্তব্যের বিরোধী তিনি। তিনি বলেন, “ এটি (অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ) অস্ত্রের দায়বদ্ধতা সম্পর্কিত। এটি অস্ত্রের নিরাপত্তার সম্পর্কিত। নিহত মার্কিনি, নিহত শিশু এবং আতঙ্কে থাকা শিশুদের জন্য।”
উচ্চ গোলাবারুদ সম্পন্ন ম্যাগাজিনের ও সামরিক বাহিনীর ব্যবহৃত অস্ত্র যেন বেসামরিক মার্কিনিরা রাখতে না পারে-ওবামার এ সংক্রান্ত প্রস্তাবে সমর্থন ব্যক্ত করে আইনপ্রণেতারাসহ কাথেলেন টার্নারের মতো হলিউডের অভিনেতারা। ওবামার প্রস্তাবে বিদ্যালয়গুলোতে পোশাকধারী পুলিশ কর্মকর্তাদের নিরাপত্তারক্ষী হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।
১৯৯৪ সালের পর থেকে অস্ত্র সংক্রান্ত বড় কোন আইন অনুমোদন করেননি যুক্তরাষ্ট্রের আইনপ্রণেতারা। ন্যাশনাল রাইফেল এসোসিয়েশন ও অন্যান্য অস্ত্র প্রস্তুতকারী গোষ্ঠীর চাপে এবং অস্ত্রধারী ভোটারদের বিরূপ আচরণের ভয়ে ডেমোক্রেটরাও নতুন আইন পাসের উদ্যোগে এগিয়ে নেননি।
গত ডিসেম্বরে কানেক্টিকাটের ঘটনার আগেও এ ধরণের মর্মান্তিক ঘটনা অতীতে ঘটেছে। চলতি বছরের জুলাই মাসে কলোরাডোয় একটি সিনেমা থিয়েটোর এক বন্দুকধারীর গুলিতে নিহত হয় ১২ জন। ২০১১ সালে অ্যারিজোনার টুকসনের একটি সুপারমার্কেটে এক বন্দুকধারীর গুলিতে নিহত হয় ছয় জন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ১৯৪৯ সালে সর্বপ্রথম এধরণের মর্মান্তিক ঘটনার শিকার হয় যুক্তরাষ্ট্র।
সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলোতেও কানেক্টিকাটের ট্রাজেডি নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা হচ্ছে। এধরণের ‘গণহত্যা প্রতিরোধ’ করার জন্য ‘অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ’ এ দাবি জোড়ালোভাবে করা হচ্ছে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলোতে।