‘ত্রিভুবনের প্রিয় মুহাম্মদ এল রে দুনিয়ায়/ আয়রে সাগর আকাশ-বাতাস দেখবি যদি আয়…’। আজ থেকে প্রায় সাড়ে ১৪০০ বছর আগে আরবের মরু প্রান্তরে মা আমিনার কোল আলো করে জন্ম নিয়েছিলেন মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)।
আজ শুক্র রবিউল আউয়াল মাসের ১২ তারিখ। পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.)। আইয়ামে জাহেলিয়াতের অন্ধকার দূর করে তৌহিদের মহান বাণী নিয়ে এসেছিলেন কুরাইশ বংশের এই মহামানব। প্রচার করেছেন শান্তির ধর্ম ইসলাম। তাঁর আবির্ভাব এবং ইসলামের শান্তির ললিত বাণীর প্রচার সারা বিশ্বে আলোড়ন সৃষ্টি করে।
ইসলাম ধর্মমতে, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব হজরত মুহাম্মদ (সা.) নবুয়তের সিলসিলায় শেষ নবী। তাঁর জন্ম ও ওফাত দিবস ১২ রবিউল আউয়াল মুসলমানদের কাছে এক পবিত্র দিন। মুসলমানেরা দিনটি পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) হিসেবে পালন করেন। বছর ঘুরে এল সেই দিন।
সমগ্র আরব বিশ্ব যখন পৌত্তলিকতার অন্ধকারে ডুবে যেতে বসেছিল, তখন মহান আল্লাহ পাক তাঁর পেয়ারা হাবিব বিশ্বনবী (সা.)-কে বিশ্বজগতের রহমতস্বরূপ পাঠিয়েছিলেন। তিনি ৪০ বছর বয়সে নবুয়ত লাভ করেন। এরপর বিশ্ববাসীকে মুক্তি ও শান্তির পথে আহ্বান জানান। সব ধরনের কুসংস্কার, গোঁড়ামি, অন্যায়, অবিচার ও দাসত্বের শৃঙ্খল ভেঙে মানবসত্তার চিরমুক্তির বার্তা বহন করে এনেছিলেন তিনি। এরপর মহানবী (সা.) দীর্ঘ ২৩ বছর এ বার্তা প্রচার করে ৬৩ বছর বয়সে ইহলোক ত্যাগ করেন।
বাণী: ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. জিল্লুর রহমান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়া পৃথক বাণী দিয়েছেন। এসব বাণীতে তাঁরা দেশবাসীসহ মুসলিম উম্মাহর সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানান। একই সঙ্গে তাঁরা মহানবী (সা.)-এর জীবনাদর্শ অনুসরণ করে ভ্রাতৃত্ববোধ ও মানবকল্যাণে ব্রতী হওয়ার জন্য সবার প্রতি আহ্বান জানান।
কর্মসূচি: ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের সঙ্গে যথাযথ মর্যাদায় পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী পালনের জন্য আওয়ামী লীগ, বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংগঠন দিবসটি উপলক্ষে নানা কর্মসূচি নিয়েছে। এসব কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে মহানবী (সা.)-এর ওপর আলোচনা, মিলাদ ও দোয়া মাহফিল।
এ ছাড়া রাজধানীতে ঈদে মিলাদুন্নবী উদ্যাপন কমিটি সকাল আটটায় সদরঘাটের লয়েল স্ট্রিট থেক জশনে জুলুশের আয়োজন করেছে। দেওয়ানবাগ দরবার শরিফ মতিঝিলের বাবে রহমতে বাদ ফজর থেকে শুরু হবে আশেকে রাসুল (সা.) সম্মেলন, আশেকানে মাইজভান্ডারী অ্যাসোসিয়েশন সকাল নয়টা থেকে শাহজাহানপুর রেলওয়ে ময়দানে ওয়াজ ও দোয়া মাহফিল এবং জশনে জুলুশের আয়োজন করেছে। বাংলাদেশ মাইজভান্ডারী ফোরাম বেলা ১১টায় তোপখানা রোডের বিএমএ মিলনায়তনে আলোচনা ও পরে জশনে জুলুশ বের করবে। রেজভীয়া দরবার শরিফ সকাল আটটায় মতিঝিলের শাপলা চত্বর থেকে জশনে জুলুশ করে জাতীয় প্রেসক্লাবে এসে ক্লাব মিলনায়তনে আলোচনা সভা করবে।
দেশের সব টেলিভিশন চ্যানেল দিনটিতে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.)-এর গুরুত্ব ও তাৎপর্য তুলে ধরে আজ বিশেষ অনুষ্ঠান প্রচার করবে। সংবাদপত্রগুলোও বিশেষ রচনা প্রকাশ করবে। সারা দেশের ধর্মপ্রাণ মুসলমানেরা ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষে পারিবারিক ও সামাজিকভাবে নানা অনুষ্ঠান পালন করে থাকেন।