রাহুল গান্ধিকে নিয়ে ভারতের ক্ষমতাসীন দল কংগ্রেস ও তার সমর্থকদের জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটল। শনিবার দলের সহসভাপতি হিসেবে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে রাহুলকে।
আগামী সাধারণ নির্বাচনে দলের কৌশল কি হবে তা ঠিক করার দুই দিনব্যাপী বৈঠক শেষে কংগ্রেস থেকে এ ঘোষণা আসল। আর এ মাধ্যম দলে মা সোনিয়া গান্ধির পরের পদটি আসীন হলেন রাহুল। সোনিয়া গান্ধি কংগ্রেসের সভাপতি ও রাহুল সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন।
ইতোমধ্যে সোনিয়ার নেতৃত্বাধীন কংগ্রেসের নির্বাচন প্রচারণার কৌশল নির্ধারণের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে রাহুলকে। নির্বাচনী প্রচারণ কৌশল কমিটির প্রধান সমন্বয়ক হিসেবে কাজ করেছেন তিনি।
শনিবার জয়পুরের চিন্তন শিবির থেকে রাহুলকে ভাইস প্রেসিডেন্ট করার সিদ্ধান্তটি আসে। টানা দুই দিন ধরে আলোচনা করেন কংগ্রেসের শীর্ষ নেতারা। এখান থেকে ২০১৪ সালের সাধারণ নির্বাচনে তাকে প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা আসার কথা ছিল।
বৈঠকের প্রথম দিন দলের এক আইনপ্রনেতা জ্যোতিরাদিত্যা সিন্দিয়া বলেন, “আমরা চাই সে (রাহুল) ২০১৪ সালে নেতৃত্ব দিক। তবে তাকে চূড়ান্ত ডাক পেতে হবে।”
লোকসভার সদস্য সঞ্জয় নিরুপাম এক প্রকারের ঘোষণাই দেন রাহুলের প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী হওয়ার বিষয়ে। তিনি বলেন, “এটা প্রায় ঘোষণা হয়ে গেছে যে, রাহুল গান্ধি ২০১৪ সালের নির্বাচন রাহুলের নেতৃত্বে করতে যাচ্ছে কংগ্রেস। ২০১৪ সালের নির্বাচনের পর সে আমাদের প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী।”
শুক্রবার রাজ বাব্বার ও আবতার সিং বাদনার মতো প্রভাবশালী আইনপ্রনেতারাও রাহুল গান্ধিকে প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দেওয়ার পক্ষে বলেন। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ভীপ্রাপ্পা মইলি বলেন, “রাহুল ইতোমধ্যে নেতা। আমাদের স্থিতিশীল নেতাদের নিয়ে আমরা গর্বিত। কংগ্রেস সবসময় বিখ্যাত নেতৃত্ব উপভোগ করে। আমাদের মধ্যে কোনো সমস্যা থাকলে আমরা আলোচনা করে সেটা মিটিয়ে নেই।”
রাহুল নিজেও বড় দায়িত্ব নেওয়ার আগ্রহের কথা প্রকাশ করেছেন। তবে কোন পদ থেকে দলকে নেতৃত্ব দেবেন তা স্পষ্ট করেননি সোনিয়াপুত্র।
ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) গভীরভাবে কংগ্রেসের জয়পুর সম্মেলনকে পর্যবেক্ষণ করে। বিজেপির কয়েকজন নেতা সম্মেলন সম্পর্কে মন্তব্যও ছুড়ে দিয়েছেন। বিজেপি নেতা রবিশঙ্কর প্রসাদ বলেছেন, “এটি খুবই অদ্ভূত অভিব্যক্তির -রাহুল গান্ধি অব্যশই বড় দায়িত্ব নেবেন। আমি খুব কম লোকেই দেখি যে তারা বলেন, রাহুল গান্ধি অব্যশই বড় দায়িত্ব নেবেন।”
সোনিয়া জি, রাহুল জি, মনমোহন জি দুঃখিত, ২০১৪ সালে কোনো (প্রধানমন্ত্রীর পদে) ফাঁকা নেই”- জুড়ে দেন রবিশঙ্কর।
জয়পুরের চিন্তন শিবিরের সম্মেলনে তরুণ কংগ্রেস ও ন্যাশনাল স্টুডেন্টস’ ইউনিয়ন অব ইন্ডিয়ার মতো সংগঠনগুলোর ৩৫০ জন সদস্যকে অংশ নেয়। যাদের মধ্যে ১৩০ জনের বেশি তরুণ ছিল।