রাজধানীর পুরানা পল্টনে সিপিবি-বাসদের সমাবেশে পুলিশি হামলায় আহত হয়েছেন সিপিবির সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবু জাফর আহমেদসহ বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী। বুধবার বেলা সাড়ে ১১টায় সিপিবির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এ ঘটনা ঘটেছে।
জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) ও বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ) এবং গণতান্ত্রিক বামমোর্চার ডাকা বুধবারের অর্ধদিবস হরতালের সমর্থনে সমাবেশটি চলছিল। এ সময় পুলিশ হঠাৎ হামলা চালায়। পুলিশ মরিচের গুঁড়া মিশ্রিত পিপার স্প্রে, টিয়ার শেল ও জলকামান ছুড়ে সমাবেশটি পণ্ড করার চেষ্টা চালায়। এসময় কয়েকজন নেতাকর্মী সিপিবির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অবস্থান নিলে পুলিশ সেখানেও ঢুকে লাঠিপেটা করে।
সিপিবির সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবু জাফর আহমেদসহ বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী এ ঘটনায় আহত হন। এরপর সিপিবি-বাসদ নেতাকর্মীরা মিছিল নিয়ে জাতীয় প্রেসক্লাব অভিমুখে রওনা হন। এ মিছিলেও পেছন থেকে হামলা করে পুলিশ। বাধা ও পুলিশের হামলা সত্ত্বেও প্রেসক্লাবের সামনে গিয়ে সমাবেশ শুরু করেছেন নেতাকর্মীরা।
এ সমাবেশ থেকে পুলিশকে দিয়ে অবৈধ ও ক্ষতিকর কেমিক্যাল মরিচের গুঁড়া ব্যবহার করায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মহিউদ্দীন খান আলমগীরের পদত্যাগ দাবি করেছেন নেতারা।
প্রেসক্লাবের এ সমাবেশ থেকে আন্দোলনের নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলেও জানিয়েছেন বাম নেতারা।
উল্লেখ্য, সকালে বেশ কিছুক্ষণ পুরানা পল্টনের সিপিবি ও বাসদের কার্যালয় দু’টি ঘিরে রেখেছিল পুলিশ। সোয়া ৯টার দিকে সিপিবির সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম ও সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবু জাফর আহমেদের সঙ্গে পুলিশের বাক-বিতণ্ডার পরে অবরোধ তুলে নেয় পুলিশ। এরপর পুলিশি প্রহরায় মিছিল বের করে সিপিবি-বাসদ। পুরানা পল্টন মোড়ে পুলিশের বাধা পেয়ে ফের দলীয় কার্যালয়ের সামনে গিয়ে সমাবেশ শুরু করেন নেতাকর্মীরা।
বুধবারের এ অর্ধদিবস হরতালে নেতাকর্মী ও সমর্থকদের মিছিলে দফায় দফায় বাধা দিচ্ছে পুলিশ। কোথাও মিছিল বের করার চেষ্টা করলে অথবা কয়েকজন নেতাকর্মী একসঙ্গে জড়ো হলেই পুলিশ পিপার স্প্রে ও জলকামান ছুড়ে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দিচ্ছে।
পোশাকধারী পুলিশ ছাড়াও সাদা পোশাকের পুলিশের হাতেও মরিচ স্প্রে দেখা যাচ্ছে। প্রধান রাস্তা ছাড়াও গলিপথগুলোতেও কয়েকজন জমায়েত হলেই কাছে গিয়ে স্প্রে ছুড়ছে সাদা পোশাকের পুলিশ।
ভোর সাড়ে ৬টা থেকে বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত পুরানা পল্টন ও আশেপাশের এলাকায় সিপিবি-বাসদ ও বামমোর্চার মিছিলে দফায় দফায় পুলিশি হামলা, মরিচ স্প্রে ও জলকামানে আহত হয়েছেন অর্ধশত রাজনৈতিক নেতাকর্মী ও সাংবাদিক। আহতদের মধ্যে রয়েছেন বাসদের সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান, বাংলানিউজের স্টাফ করেসপন্ডেন্ট সাজেদা সুইটি ও ফটো সাংবাদিক জাহিদ সাইমন।