সাবেক পররাষ্ট্র সচিব ও কূটনীতিক ফারুক চৌধুরী বলেছেন, প্রধানমন্ত্রীর রাশিয়া সফরে যে ৮ হাজার কোটি টাকার সমরাস্ত্র ক্রয় চুক্তি হচ্ছে তা সার্বিক প্রতিরক্ষানীতির অংশ কিনা তা জনগণের জানা প্রয়োজন। বিষয়টি জনগণের সামনে প্রকাশ করা উচিত। প্রধানমন্ত্রীর রাশিয়া সফর সম্পর্কে মানবজমিনকে দেয়া প্রতিক্রিয়ায় তিনি এ কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রীর এ সফরে দু’দেশের মধ্যে সম্পর্কের উন্নয়ন হবে বলে আশা প্রকাশ করে তিনি বলেন, ৪০ বছর পর সরকারপ্রধান পর্যায়ের কেউ রাশিয়া সফর করছেন। এর আগে ১৯৭২ সালের মার্চ মাসে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রাশিয়া (তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন) সফর করেছিলেন। তাই এ সফর নিঃসন্দেহে গুরুত্বপূর্ণ সফর। ৪০ বছরে পৃথিবী অনেক পরিবর্তন হয়েছে। ২৪ বছর আগে ছিল সোভিয়েত ইউনিয়ন। এখন হয়েছে রাশিয়া। পরিবর্তনের প্রেক্ষিতে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের গুরুত্ব আরও বেশি। তাই আমি আশা করি এ সফর দু’দেশের মধ্যে সম্পর্ক নিবিড়তর করবে। সংবাদ মাধ্যমে আমরা যা জানতে পেরেছি তা হলো দু’টি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এ সফরের কার্যসূচিতে স্থান পাবে। ৮ হাজার কোটি টাকার সমরাস্ত্র ক্রয় আর রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র তৈরি। প্রথম বিষয়টিতে আমার বক্তব্য হলো এ ব্যাপারে আমরা এখনও বিস্তারিত কিছুই জানি না। যে টাকা ধার করা হবে তার সুদের হার কত তাও জানিনা এবং এটা সার্বিক প্রতিরক্ষানীতির অংশ হিসেবে, জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে কেনা হচ্ছে কিনা তা-ও জানি না। এসব বিষয় আমরা সুস্পষ্টভাবে জানতে চাই। জনগণকেও জানানো উচিত। কারণ, এটা একটা বিরাট বিষয়। এটা দু’দেশের একটা বাণিজ্যিক সম্পর্কের বিষয়। তবে এ সফরের মাধ্যমে দু’দেশের বাণিজ্যিক সম্পর্কে উন্নয়ন ঘটবে বলে আমি আশা করছি।
রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কের কোন বিচ্যুতির আশঙ্কা থাকে কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, না। আমরা একটা সার্বভৌম জাতি। কখন কার সঙ্গে কি রকমের সম্পর্ক করবো, এতে কারও কিছু যায় আসে না। এমনটি হওয়ারও কথা না। এগুলো দ্বিপক্ষীয় বিষয়। প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরের পর তার অর্জন নিয়ে নানা সমালোচনা হয়েছিল। এ সফর নিয়ে তেমন কোন সংশয় আছে কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সফর তো শেষ হয়নি। তাই এখনই এ ধরনের কোন মন্তব্য করা ঠিক হবে না। তিনি বলেন, সব বিষয়ে আমাদের ভেবেচিন্তে পদক্ষেপ নেয়া উচিত বলে আমি মনে করি।