মুহিতের মুখে এবার ‘ফাটকাবাজারী’

মুহিতের মুখে এবার ‘ফাটকাবাজারী’

পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীদের ‘ফাটকাবাজ’ বলে সমলোচনার মুখে পড়া অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত এবার পুঁজিবাজার নিয়ে কথা বলতে গিয়ে উচ্চারণ করেছেন ‘ফাটকাবাজারী’ শব্দটি।

রোববার অর্থ মন্ত্রণালয়ে পুঁজিবাজার উন্নয়ন সংক্রান্ত সভার পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘ফাটকাবাজারীরা’ পুঁজিবাজারে গোলমাল করছে।

সরকারের চতুর্থ বছর পূর্তির দিন এক সাংবাদিকের প্রশ্ন ছিল- পুঁজিবাজার নিয়ে কোনো অস্বস্তি আছে কি না?

এর উত্তরে মুহিত বলেন, “এটা নিয়ে আমার কোনো অস্বস্তি নেই। অর্থনীতির সঙ্গে পুঁজিবাজারের বিরাট সম্পর্ক নেই। পুঁজিবাজার পুঁজি সংগ্রহের জায়গা, এখানে সূচকের ওঠানামা ইম্মেটেরিয়াল।”

সরকারের চার বছরে ‘পুঁজি সংগ্রহের’ জন্য পুঁজিবাজার ‘অনেক বেশি শক্তি’ অর্জন করেছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

গত দুই বছর ধরে পতনশীল পুঁজিবাজার নিয়ে এক সাংবাদিক অর্থমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে বলেন- বিনিয়োগকারীদের আস্থা না থাকলে তারা তো বাজারে আসবে না?

একটু রেগে গিয়ে মুহিত বলেন, “বিনিয়োগকারীরা আসছে। আর ওইসব ফাটকাবাজারীরা এসব গোলমাল করছে।”

২০১১ সালে পুঁজিবাজারে অস্থিরতার মধ্যে বিনিয়োগকারীদের ‘ফাটকাবাজ’ বলেন অর্থমন্ত্রী। এরপর ব্যাপক সমালোচনায় পড়েন তিনি। সংসদেও সমালোচনা হয় তার।

গত চার বছরে দায়িত্ব পালনের সময় ‘রাবিশ’ উক্তির জন্যও সমালোচনা সইতে হয়েছে মুহিতকে।

হল-মার্ক কেলেঙ্কারিতে আড়াই হাজার কোটি টাকা ‘লুট’ ‘তেমন বড় কিছু নয়’ মন্তব্য করে সমালোচনার মুখে ভুল স্বীকার করেন তিনি।

সম্প্রতি জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর প্রতিবাদে বিএনপির হরতাল ডাকাকে ‘উন্মাদের সিদ্ধান্ত’ বলে মন্তব্য করেন মুহিত।

তার এই মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী শনিবার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “অর্থমন্ত্রী পাগলা মেহের আলী হয়ে গেছেন।”

হরতাল বন্ধে আইন করা প্রয়োজন- মুহিতের এই বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য তরিকুল ইসলাম রোববার হরতাল শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “আমি তাকে শ্রদ্ধা করি। তার বয়স এখন ৮২ বছর। এই বয়সে যে কোনো ব্যক্তি অনেক কথা বলতে পারেন। আমাদের বাপ-দাদারাও বলেছেন। তাই অর্থমন্ত্রীর কথা-বার্তায় আমরা কিছু মনে করি না।”

বৈঠকের বিষয়

বৈঠকে পুঁজিবাজার উন্নয়নের জন্য এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের ঋণ হিসেবে প্রতিশ্রুতি দেয়া ৩০ কোটি ডলারের দ্বিতীয় কিস্তির অর্থ ছাড়ের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে বলে জানান অর্থমন্ত্রী।

তিনি বলেন, “প্রথম টার্মের সময় যেগুলো করার ছিল, সেগুলো হয়েছে। অর্থ ছাড়ও হয়েছে।”

এডিবি কী কী শর্ত দিয়েছে- জানতে চাইলে মুহিত বলেন, “ব্যাংক কোম্পানি আইন সংশোধন, ডিমি্উচুয়ালাইজেশন এসব বিষয়গুলো করতে হবে।”

”ব্যাংক কোম্পানি আইন পরবর্তী অধিবেশনে (সংসদের) উঠবে। ডিমিউচুয়ালাইজেশনের কাজ চলছেই।”

আইন সংশোধন করে পুঁজিবাজারে ব্যাংকগুলোর বিনিয়োগ সীমা কত করা হচ্ছে- জানতে চাওয়া হলে মন্ত্রী বলেন, “মূলধনের ৪০ শতাংশ পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের বিধান রেখেই আইন সংশোধন হচ্ছে। এ সীমা আগামী তিন বছরের মধ্যে ২৫ শতাংশে নামিয়ে আনা হবে।”

বর্মানে ব্যাংকগুলো তাদের মোট দায়ের ১০ শতাংশ পর্ন্ত বিনিয়োগ করতে পারে।

“এখন যে বিনিয়োগসীমা রয়েছে তা প্রচুর,” মন্তব্য মুহিতের।

অন্যান্য অর্থ বাণিজ্য বাংলাদেশ শীর্ষ খবর