বর্তমান সরকার ৫ দফায় বাড়াল জ্বালানি তেলের দাম। এ দফায় ৪ ধরনের জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানো হয়েছে। ডিজেল কেরোসিন লিটার প্রতি ৭ টাকা এবং পেট্রল ও অকটেন লিটার প্রতি ৫ টাকা হারে বাড়ানো হয়েছে।
এই বৃদ্ধির ফলে ডিজেল কেরোসিন লিটার প্রতি ৬৮ টাকা ও পেট্রল লিটার প্রতি ৯৬ টাকা দরে ও অকটেন ৯৯ টাকা দরে কিনতে হবে ভোক্তাদের।
এই মূল্য বৃহস্পতিবার দিনগত রাত ১২টা থেকে কার্যকর হবে বলে জ্বালানি মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে।
এর আগে গত ২২ ডিসেম্বর রাজধানীতে অনুষ্ঠিত নবায়নযোগ্য জ্বালানিবিষয়ক এক সেমিনারে যোগ দেওয়ার পর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী দাম বাড়ানোর ইঙ্গিত দিয়েছিলেন।
এদিন উপদেষ্টা সাংবাদিকদের বলেন, প্রতি লিটার ডিজেল বিক্রিতে ১৮ টাকা লোকসান গুনতে হচ্ছে। এভাবে সরকার যদি জ্বালানি খাতে ভর্তুকি দিতে থাকে, তাহলে শিক্ষা ও মানবিক উন্নয়নের মতো গুরুত্বপূর্ণ খাতে বরাদ্দ অব্যাহত রাখা সম্ভব হবে না। এ কারণে জ্বালানির দাম বাড়াতেই হবে।
বর্তমান সরকার প্রথম দফায় ৬ মে ‘১১ সব ধরনের জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানো হয়। ওই সময় সব ধরনের জ্বালানি তেলে লিটারে দুই টাকা বাড়ানো হয়। এর ফলে ডিজেল ও কেরোসিন ৪৪ থেকে বেড়ে হয় ৪৬ টাকা। অকটেন ৭৭ থেকে বেড়ে ৭৯ টাকা ও পেট্রল ৭৪ থেকে বেড়ে হয় ৭৬ টাকা।
দ্বিতীয় দফায় ১৯ সেপ্টেম্বর সব ধরনের জ্বালানি তেলের দাম লিটারে পাঁচ টাকা বাড়ায়। ওই সময় ৪৬ টাকার কেরোসিন ও ডিজেল বেড়ে হয় ৫১ টাকা। আর ৭৯ টাকার অকটেন ৮৪ টাকা এবং ৭৬ টাকার পেট্রল হয় ৮১ টাকা।
তৃতীয় দফায় ১১ নভেম্বর আবারো চার শ্রেণির জ্বালানি তেলের দাম লিটারে পাঁচ টাকা বাড়ানো হয়। এ ফলে ৫১ টাকার কেরোসিন ও ডিজেল হয় ৫৬, ৮৪ টাকার অকটেন হয় ৮৯ ও ৮১ টাকার পেট্রল হয় ৮৬ টাকা।
এর আগে সর্বশেষ দফা অর্থাৎ চতুর্থ দফায় ২০১১ সালের ৩০ ডিসেম্বর লিটার প্রতি ৫ টাকা হারে দাম বাড়ানো হয় এই ৪ ধরণের জ্বালানি তেলের। এতে করে ডিজেল ও কেরোসিনের দাম হবে লিটারপ্রতি ৬১ টাকা, অকটেন ৯৪ টাকা, পেট্রল ৯১ টাকা এবং ফার্নেস অয়েলের দাম হবে ৬০ টাকা দরে বিক্রি হয়ে আসছিল।
এদিকে, তেলের দাম বৃদ্ধি ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে চট্টগ্রাম মহানগরের সব পেট্রোল পাম্পে তেল বিক্রি বন্ধ করার খবর পাওয়া গেছে।
চট্টগ্রাম থেকে আমাদের সিনিয়র করেসেন্ডেন্ট রমেন দাশগুপ্ত জানান, নগরীর জামালখান রোডের কিউসি পেট্রোল পাম্প, ওয়াসার মোড়ে খান এণ্ড সন্স, দামপাড়া পুলিশ লাইন পেট্রোল পাম্পসহ বিভিন্ন পেট্রোল পাম্পর ঘুরে দেখা গেছে, বাঁশ দিয়ে পেট্রোল পাম্পের প্রবেশ মুখ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে খান এণ্ড সন্স পাম্পর ম্যানেজার সিরাজুল ইসলাম জানার, হুট করে তেলের দাম বৃদ্ধির ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। এ কারণে যারবাহন মালিকেরা হুড়োহুড়ি করে তেল নিতে আসছে। এতে বিশৃংঙ্খলার সৃষ্টি হচ্ছে বলে জানান তিনি।
এ বিশৃংঙ্খলা এড়াতে পেট্রোল পাম্প বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
এদিকে কোনো ঘোষণা ছাড়াই পেট্রোল পাম্প বন্ধ করে দেওয়ায় ভোগান্তিতে পড়েছেন গাড়ির মালিকরা।