স্কাইপে কথিত কথোপকথনকে কেন্দ্র করে যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালের সাবেক চেয়ারম্যান নিজামুল হকের সমালোচনার জবাবে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেছেন, প্রশাসনিক এখতিয়ারে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান যে কারো সঙ্গে কথা বলতে পারেন।
বিচারপতি নিজামুল হক বিচারকের শপথ ভঙ্গ করেছেন বলে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী সমর্থক আইনজীবীদের অভিযোগের মধ্যে বুধবার নিজের কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এই কথা বলেন সরকারের প্রধান আইন কর্মকর্তা।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইন-১৯৭৩ এর ব্যাখ্যা করে মাহবুবে আলম বলেন, এ ট্রাইব্যুনালে বিচার চলে একটি বিশেষ আইনে। এ বিষয়ে সেই আইনেই সব বলে দেয়া আছে।
তিনি বলেন, ট্রাইব্যুনাল চেয়ারম্যানের দুটি এখতিয়ার। বিচারিক এখতিয়ার এবং প্রশাসনিক এখতিয়ার। ট্রাইব্যুনালে অন্য বিচারকদের মতো চেয়ারম্যানও একজন বিচারক। অন্যদের মতো তার পূর্ণ বিচারিক এখতিয়ার রয়েছে, একইসঙ্গে চেয়ারম্যান হিসাবে আইনেই তাকে প্রশাসনিক এখতিয়ার দেয়া হয়েছে।
“তাই কারো সঙ্গে কথা বলতে চাইলে আইনে তা বাধা হয়ে দাঁড়ায় না,” বলেন অ্যাটর্নি জেনারেল।
স্কাইপে ব্রাসেলস প্রবাসী এক আইন গবেষকের সঙ্গে বিচারপতি নিজামুল হকের কথিত কথোপকথন প্রকাশ হওয়ার পর তা নিয়ে আলোচনা উঠলে পদত্যাগ করেন নিজামুল হক।
বিএনপি ও জামায়াত সমর্থক আইনজীবীরা ‘শপথ ভাঙ্গার’ অভিযোগ তুলে নিজামুল হকের পদত্যাগ দাবি করছিলেন। হাই কোর্টে এই বিচারকের ফেরত আসা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তারা।
আইনের ১১(ডি) এবং ১১(৬) অনুচ্ছেদ উদ্ধৃত করে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি মাহবুবে আলম বলেন, “এই দুই ধারা অনুসারে কথা বলতে কোনোই সমস্যা নেই। তাই নিজামুল হক যদি কথা বলেনও, তাতে তিনি কোনো অন্যায় করেননি।
“এরপরও প্রশ্নাতীতভাবে যাতে এই বিচার চলতে পারে, তাই স্বচ্ছতার খাতিরে তিনি পদত্যাগ করেছেন; যেন যুদ্ধাপরাধের বিচারের মতো একটি মহৎ উদ্যোগ ক্ষতিগ্রস্থ না হয়।”
স্কাইপের ওই কথিত কথোপকথনকে কেন্দ্র করে যুদ্ধাপরাধে অভিযুক্তরা ইতোমধ্যে তাদের বিচার নতুন করে শুরুর আবেদন করেছেন।
অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, “আজ যারা তার বিরুদ্ধে কথা বলছে, তারা কখনোই যুদ্ধাপরাধের বিচার চায়নি; বরং তারা সব সময় বিরোধিতার জন্যই বিরোধিতা করছে। এদের কেউ জামায়াত-শিবিরের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত, আবার কেউ তাদের রাজনৈতিক দোসর।
“তারা বিচার বানচালের জন্য নানা চেষ্টা করছে। একই উদ্দেশ্যে আদালতে দিচ্ছে আইনের বাহানা।”