দুই দিনের সফরে আগামী ১৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকা আসছেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সালমান খুরশিদ।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, বাংলাদেশ সফরের আগে তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তি নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে আলোচনা করবেন সাক্ষাৎ করবেন তিনি।
কর্মকর্তারা বলেন, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী রাজি হলে কোনো বিলম্ব ছাড়াই চুক্তিটি সই করা হবে।
গত বছর ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের ঢাকা সফরের সময় তিস্তা চুক্তি স্বাক্ষরের কথা থাকেলেও মমতার আপত্তিতে তা আটকে যায়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা বলেন, “বাংলাদেশের সঙ্গে তিস্তা পানি চুক্তি করতে আমরা প্রথম থেকেই আন্তরিক। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর বিরোধিতার কারণেই তা আটকে আছে।”
পশ্চিমবঙ্গ কংগ্রেসের একটি সূত্র জানিয়েছে, তিস্তা বিষয়ে যত শিগগিরই সম্ভব মমতার সঙ্গে আলোচনায় বসার জন্য অপেক্ষা করছেন সালমান খুরশিদ।
গত সপ্তাহে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, মমতার সঙ্গে তার বোঝাপড়া ভালো এবং তিনি তাকে চুক্তিতে রাজি করাতে পারবেন বলে আশাবাদী।
তবে এই বিষয়ে মমতার অবস্থান এখনো স্পষ্ট নয়।তিনি এর আগে বলেছিলেন, পশ্চিমবঙ্গের নদী বিশেষজ্ঞ কল্যাণ রুদ্রের প্রতিবেদনের জন্য রাজ্য সরকার অপেক্ষা করছে।
পশ্চিমবঙ্গের সেচ বিষয়ক মন্ত্রী রাজীব বন্দোপাধ্যায় কলকাতার একটি সংবাদপত্রকে জানান, জানুয়ারির মধ্যেই তিস্তা বিষয়ে কল্যাণ রুদ্রের প্র্রতিবেদন পাওয়ার প্রত্যাশা করা হচ্ছে। প্রতিবেদনটি পাওয়া গেলেই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া মুখ্যমন্ত্রীর জন্য সহজ হয়ে যাবে।
তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, বেশকিছু বিষয়ে মতান্তরের ফলে তৃণমূল কংগ্রেস ক্ষমতাসীন জোট থেকে বেরিয়ে গেলেও পশ্চিমবঙ্গের বর্তমান মন্দায় অর্থনৈতিক সহায়তার প্রস্তাব দিয়ে মমতাকে তিস্তা চুক্তিতে রাজি করানোর চেষ্টা করতে পারেন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং।
বিশ্লেষকরা আরো বলেন, যত শিগগির সম্ভব তিস্তা পানিচুক্তি করতে চান মনমোহন। আর এ কারণে তিনি পশ্চিমবঙ্গের অর্থনীতিকে সহায়তায় ক্ষতিপূরণের প্রস্তাব দিতেও প্রস্তুত আছেন।
কলকাতার সংবাদপত্রগুলোর প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, অর্থনীতির উন্নতি না হলে খুব শিগগিরই মমতা সরকারের জন্য কর্মচারীদের বেতন দেয়া কঠিন হয়ে যাবে।
বাংলাদেশের সঙ্গে সীমানা নির্ধারণ চুক্তিতে তার মত পরিবর্তনের জন্য ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারও তাকে চাপ দিচ্ছে। যাতে করে চুক্তিটি অনুমোদনের জন্য পার্লামেন্টে উত্থাপন করা যায়। তিনিই একমাত্র মুখ্যমন্ত্রী যিনি চুক্তির বিরোধিতা করছেন।
বিশ্লেষকরা বলেন, তিস্তার মতো ইস্যুগুলোতে মমতাকে এড়িয়ে না গিয়ে অর্থনৈতিক সহায়তা বা প্রভাবিত করে তার সিদ্ধান্ত পরিবর্তনকেই প্রাধান্য দিচ্ছে দিল্লি।